Ukraine: প্রথম ‘প্রায়োরিটি’ দেশ! সেনাবাহিনীর পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড
Mila Nova: দেশের পাশে দাঁড়াতে বিয়ের পোশাক ছেড়ে দেশের সেনাবাহিনীর জন্য পোশাক বুনছে 'মিলা নোভা'।
প্রতিনিয়ত ইউক্রেন (Ukraine) থেকে আসছে রুশ সেনার আক্রমণের খবর। প্রথম থেকে শোনা গিয়েছে, দেশ বাঁচাতে পথ নেমেছেন ইউক্রেনবাসী। এবার এরই এক ঝলক দেখা গেল ইউক্রেনের ফ্যাশন (Fashion) ইন্ডাস্ট্রিতেও। যুদ্ধ বদলে দিয়েছে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি। পালটে গিয়েছে অগ্রাধিকার। যে ফ্যাশন ব্র্যান্ড আগে ডিজাইনার ড্রেস বানাত, বিয়ের জন্য পোশাক (Bridal Dress) বুনত, এখন সেই ব্র্যান্ডই ইউক্রেনের আর্মি ও চিকিৎসা কর্মীদের জন্য বুনছে পোশাক।
ইউক্রেনের এই ফ্যাশন ব্র্যান্ডের নাম ‘মিলা নোভা’। এই সংস্থাটি ইউক্রেনের হলেও আন্তর্জাতিক স্তরে এর কদর অনেক। বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশের নামজাদা বুটিকগুলোতে দেখা মেলে ‘মিলা নোভা’র তৈরি ব্রাইডাল ড্রেসের। দেশের পাশে দাঁড়াতে বিয়ের পোশাক ছেড়ে দেশের সেনাবাহিনীর জন্য পোশাক বুনছে ‘মিলা নোভা’।
‘মিলা নোভা’ কর্মীদের ৯০ শতাংশই মহিলা। তাঁরা ইতিমধ্যেই ১৫০০ সৈন্যের পোশাক তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছেন। ‘মিলা নোভা’র তৈরি করা পোশাকের মধ্যে রয়েছে সেনাদের হুডি, অ্যাসল্ট জ্যাকেট, অস্ত্র বহনের জ্যাকেট, সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত জাল এবং অন্যান্য নিরাপত্তার পোশাক।
ইউক্রেনে রুশ সেনাবাহিনীর আক্রমণের পর থেকে নানা খবর উঠে আসছে নেট দুনিয়ায়। মাতৃভূমি বাঁচাতে প্রথম থেকেই অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছেন ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ। তাঁদের পোশাক বানাতেই সোচ্চার হয়েছে ‘মিলা নোভা’র সকল কর্মী। কিন্তু তা বলে থেমে নেই বিয়ের পোশাক তৈরির কাজ।
ইউরোপ ও আমেরিকার বহু দেশে ‘মিলা নোভা’ পণ্য বিক্রি হয়। প্রসঙ্গত, রাশিয়াতেও ব্যবসা করে ‘মিলা নোভা’। কিন্তু দেশে যুদ্ধ লাগলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের জীবনযাপন তো স্বাভাবিক রয়েছে। সেই সব দেশ থেকে ভালই অর্ডার আসছে রোজ। তাই কোনও ভাবেই কাজ থামিয়ে রাখলে চলবে না। কিন্তু তাও প্রথম অগ্রাধিকার তো নিজের দেশই।
এই প্রসঙ্গে ‘মিলা নোভা’-র অধিকর্তা ইয়ুলিয়ানা কিরিসুক জানিয়েছেন যে, তিনি যে কোনও মূল্যে তাঁর এই ফ্যাশনের ব্যবসাটি টিকিয়ে রাখতে চান। এখন দেশের এই অবস্থায় পাশে দাঁড়ানো তাঁর প্রথম অগ্রাধিকার। এর পাশাপাশি এই ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সঙ্গে ইউক্রেনের হাজার হাজার পরিবার জড়িত রয়েছে। শুধু আজকের জন্য নয়, আগামী দিনের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইয়ুলিয়ানা।
প্রায় ৬০০ মানুষ ‘মিলা নোভা’র সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই কারিগর। আগে তাঁরা শুধুই বিয়ের পোশাক বুনত। এখন সেই হাত দিয়ে সেলাই করছেন দেশের সেনাবাহিনীর পোশাকও। তাঁদের মধ্যে অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় নিয়েছেন পরশি দেশ পোল্যান্ডে। যুদ্ধ শুরুর আভাস পেতেই পোল্যান্ডের ওয়ারশয়ে একটি অস্থায়ী কারখানা করেছেন ইয়ুলিয়ানা। সেখান থেকেই দিনরাত এক করে কাজ করছেন সবাই।
এর পাশাপাশি দেশকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করার জন্য ইউক্রেন ‘থিম’-এর বিয়ের পোশাকও তৈরি করা শুরু করেছে ‘মিলা নোভা’। পোল্যান্ডে যেসব কর্মীরা কাজ করছেন, তাঁদের নীল-হলুদ ইউক্রেনীয় পতাকার রঙে পোশাক তৈরির নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি। আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি হবে ওই পোশাক। এভাবেই দেশের পাশে দাঁড়াল ‘মিলা নোভা’।
আরও পড়ুন: রূপোর গহনার হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে চান? ঘরোয়া প্রতিকার ট্রাই করুন