Paithani: জন্ম মহারাষ্ট্রে, বর্তমানে দেশজুড়েই কদর বেড়েছে এই শাড়ির! জেনে নিন পৈঠানি শাড়ির ইতিহাস
Place and people of Paithani: মহারাষ্ট্রে প্রথম বোনা হয় এই শাড়ি। বর্তমানে তা কিন্তু দেশ জুড়ে জনপ্রিয়। আজকালকার মেয়েদেরও বিশেষ পছন্দের তালিকায় কিন্তু রয়েছে এই শাড়ি
শাড়ির বাজারে সিল্কের কদর সবচাইতে বেশি। পিওর সিল্ক থেকে শুরু করে ইক্কত, কাঞ্জিভরম, বেনারসি, তসর, কাতান,মুগা, বালুচরি, গাদোয়াল- রীতিমতো টক্কর চালায় একে অন্যের সঙ্গে। আর সেই প্রতিযোগিতায় এখন নাম লিখিয়েছে পৈঠানিও। তবে আজ নয়, বহু বছর ধরে ফ্যাশান তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে পৈঠানি সিল্ক। বর্তমানে তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। পৈঠানির জন্মস্থান মহারাষ্ট্র হলেও বর্তমানে ভারত জোড়া তার নামডাক। পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ উদযাপনে সিগনেচার স্টাইল যেমন ঢাকাই মহারাষ্ট্রে তা হল পৈঠানি। সূক্ষ্ম বুনোটের জন্যই কিন্তু পৈঠানি এত জনপ্রিয়। মহারাষ্ট্রের পৈথান গ্রামে এই শাড়ি বোনা হয়। সেখান থেকেই এরকম নানকরণ।
পৈঠানি শাড়ির প্যাটার্ন এবং মোটিফ অন্যান্য শাড়ির তুলনায় একেবারেই আলাদা। প্রচুর রকম রং থাকে এই শাড়িতে। আর এই রঙ কিন্তু উদ্ভিজ। সেই সঙ্গে শাড়ির প্রিন্টেও রয়েছেন প্রাচীন ছোঁয়া। তবে এই শাড়িকে মোরবাঙ্গাদি বলেও কিন্তু ডাকা হয়। বাংদি শব্দের অর্থ হল বাহারি চুড়ি। নকশা হিসেবে থাকে পাখি আর ফুলের ফোটিফ। আরল যে পাখি শাড়ির গায়ে ফুটিয়ে তোলা হয় তার আদলের সঙ্গে মিল রয়েছে মুনিয়া পাখির। এই দুই মিলিয়েই এই শাড়িকে এমন নামে ডাকা হয়। শাড়ির বর্ডারে ব্রোকে়ডের কাজ থাকে। আর পুরো শাড়ির বডি ওয়ার্কে থাকে পদ্ম, ময়ূর, ফুল, পাতার নকশা। আর এই শাড়ির আরও একটি বিশেষত্ব হল- সামনে ও পিছনে কিন্তু একই রকম দেখতে লাগে। প্রতিটা পৈঠানি শাড়িই ভীষণ রকম উজ্জ্বল হয়। গাঢ় সবুজ, পিচ, খয়েরি, ফিরোজ, ময়ূরপঙ্খী, কমলা- সাধারণত এই রংগুলির উপর বেস করেই তৈরি হয় মূল শাড়ি।
মহারাষ্ট্রের নাসিকে এই শাড়ির বুনোন শুরু হয়। সেখানকার ইয়েওয়ালা নামের এক গ্রামে প্রায় ১০০ টিরও বেশি তাঁতে বোনা হত এই শাড়ি। পৈঠানি বুনোনও ছিল একরকমের ট্র্যাডিশন। যে কারিগররা পৈঠানি বোনেন তাঁরা বংশপরম্পরায় এই কাজ করে আসছেন। ১৩ বছরের কম বয়স থেকেই সেই সব পরিবারের সদস্যরা পৈঠানির সুতো বোনা শিখতে শুরু করে। পৈঠানিতে সিল্ক তন্তুর সঙ্গে মেশানো থাকে খাঁটি তুলোও। ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে একরকম তুলো পাওয়া যেত- যেখান থেকে রাজা-মহারাজাদের জন্য পোশাক বানানো হত। সেই তুলোই কিন্তু ব্যবহার করা হয় এই পৈঠানি বুনতে। রাজাদের এই সুতো খুবই পছন্দ ছিল। যে কারণে রাজা-মহারাজাদের পৃষ্ঠপোষকতাতেই এই পৈঠানি এত জনপ্রিয় হয়। পরবর্তীতে কোরা সিল্কের ধারণাও কিন্তু আসে এই পৈঠানি থেকেই। যে কোনও বড় সিল্কের দোকানেই পেয়ে যাবেন এই শাড়ি। দাম শুরু ১০ হাজার টাকা থেকে।