Karnataka: এই গ্রামে কংগ্রেস, কফি, গুগল, সুপ্রিম কোর্ট, শাহরুখ সকলে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকে
Hakki Pikki: ভারতে রয়েছে এমন এক গ্রাম, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট, গুগল, কফি সব কিছুই পাওয়া যাবে। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এমন গ্রামের অস্তিত্ব রয়েছে কর্ণাটকে।
নাম সেই মানুষের পরিচয় বহন করে। জন্মের পর প্রত্যেক মা-বাবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে সন্তানের নামকরণ। অনেক পড়াশোনা করে, খুঁজে ১০০টা নামের মধ্যে একটা নাম বেছে নেন সন্তানের জন্য। কিন্তু কেউ কারও নাম গুগল, সুপ্রিম কোর্ট রাখতে পারে বলে ভেবেছেন কখনও? কোনও গল্প কথা নয়। কর্ণাটকে রয়েছে এমন এক গ্রাম, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট, গুগল, কফি সব কিছুই পাওয়া যাবে। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এমন গ্রামের অস্তিত্ব রয়েছে কর্ণাটকে।
কর্ণাটকের ভদ্রপুর গ্রাম। এখানে বাস হাক্কি পিক্কি নামের আদিবাসী সম্প্রদায়ের। এই সম্প্রদায়ের বাচ্চাদের নাম কফি, গুগল, ব্রিটিশ, অমিতাভ, অনিল কাপুর, হাইকোর্ট, গ্লুকোজ ইত্যাদি। এমনকী এখানে গেলে পাওয়া যাবে মহীশূর পাক, শাহরুখ, সুপ্রিম কোর্ট, আমেরিকা, ওবামা সব কিছু। কারণ হাক্কি পিক্কি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাঁদের বাচ্চাদের নাম রাখেন এরকমই।
যদিও ১৫ বছর আগে অবধি এমন কিছুই ছিল না এই গ্রামে। কিন্তু এখন হাক্কি পিক্কি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা তাঁদের সন্তানদের নাম রাখেন বিখ্যাত ব্যক্তি বা বস্তুর উপর। শুনতে অদ্ভুত কিংবা হাস্যকর হলেও ভদ্রপুর গ্রামে বিষয়টাকে মোটেই হাসির ছলে নেয় না। তবে, এখানকার বাবা-মায়েরা জনপ্রিয় নাম এবং শুনতে ভাল লাগে এমন নামই বেছে নেয় সন্তানের জন্য।
জনপ্রিয়তার পাশাপাশি এমন নামকরণের পিছনে আরও একটি গল্প রয়েছে। এই যেমন যে দম্পতি মিষ্টি খেতে ভালবাসেন, তাঁরা সন্তানের নাম রেখেছেন মাইশোর পাক, চকোলেট ইত্যাদি। আবার যে দম্পতি যে রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে, সেই দলের নাম রাখেন সন্তানের। সেই কারণে গ্রামে কংগ্রেস ও ভারতীয় জনতা পার্টি একে অপরের ভাল বন্ধু। তবে, এগুলো এঁদের ডাকনাম নয়। পাসপোর্টেও এঁদের এমনই নাম রয়েছে এবং তাঁরা ঘন ঘন বেড়াতেও যান।
নামের জন্যই শুধুমাত্র হাক্কি পিক্কি সম্প্রদায় জনপ্রিয় নয়। এই সম্প্রদায়ের আরও বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা প্রায় ১৪ রকম ভাষায় কথা বলতে পারেন। কন্নড় ভাষায় হাক্কি পিক্কি মানে ‘পক্ষী শিকারি’। হাক্কি পিক্কি উপজাতির ইতিহাস জড়িয়ে রাজপুত রাজা রানা প্রতাপের সঙ্গে। তাছাড়া এই উপজাতির পণপ্রথা একটু আলাদা। এখানে পাত্রীপক্ষ পণ দেয় না। বরং নেয়। পাত্রকে পাত্রীর পরিবারকে পণ দিতে হয়। যদি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তাহলে সেই পণের অধেক অংশ পাত্রকে ফিরিয়ে দিতে হয়। এমনই বৈচিত্র্যে ভরপুর হাক্কি পিক্কি সম্প্রদায়।