বাংলাদেশের মিথ্যে আস্ফালন আর শেষ হচ্ছে না। বাংলাদেশ ন্যাশালিস্ট পার্টি থেকে কট্টরপন্থী নেতাদের মুখে ভারত বিদ্বেষী মন্তব্য ঝড়ে ঝড়ে পড়ছে প্রতিটা মূহুর্তে। যা দেখে বা শুনে অবশ্য ভয় বা শঙ্কার থেকে হাসিই বেশি পাচ্ছে। একটা সময়ে বিনোদনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুঁ মারত লোকে। আর এখন পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়েছে যে মন খারাপ হলেই লোকে বলছে বাংলাদেশি ভাষণ শুনে আয়। বিষয়টি একদিকে যেমন হাস্যকর কখন কখনও তা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অগস্ট মাসে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকেই কী কী হাস্যকর মন্তব্য শোনা গিয়েছে কট্টরপন্থী নেতাদের মুখে? চলুন ফিরে দেখা যাক সেই দিকেই!
বিএনপি নেতা হাবিবুর নবী খান। ভারতকে কটাক্ষ করতে গিয়ে সম্প্রতি তিনি বলেছেন বাংলাদেশিদের নাকি 'টয়লেট' করতে গেলে রাফাল বিমান লাগে। যা শুনলে রাগের চেয়ে বেশি হাসি পায়। এখানেই শেষ নয়, লুঙ্গিতে মালকোচা মারলে, দিল্লি পর্যন্ত খবর হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
বিএনপি নেতার মন্তব্যে কটাক্ষ ভেসে এসেছে ভারতীয় অভিনেত্রীদের দিকেও। তিনি বলেন, "নিজেরা চলতে পারেন না। আপনাদের নায়িকারা সংক্ষিপ্ত কাপড় পরে। শরীর প্রদর্শন করে যা কামায়, সেই দিয়ে চলে।" যা শুনে রীতিমত ক্ষুব্ধ ভারতীয়রা। ভারতের আঙুল কেটে নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এই প্রথম নয় এর আগেও বাংলাদেশের বিএনপি নেতাদের মুখ থেকে একাধিক হাস্যকর মন্তব্য উড়ে এসেছে। বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভি কখনও বলেছেন, "ভারত আক্রমণ করলে আমরা কি আমলকি চুষব?", কখনও দাবি করেছেন, "আমাদের নবাব সিরাজউদৌল্লার বাংলা-বিহার-ওড়িশা ফেরত দাও।" যা শুনে প্রলাপ বকা ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না।
বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা কর্তা কর্নেল ও চেয়ারম্যান, এলডিপি অলি আহমেদ আবার এক কাঠি উপরে গিয়ে ভারত দখল করার হুমকি দিয়েছেন। এমনকি অন্য দেশের থেকে সাহায্য নিয়ে পরমাণু হামলা চালানোর কথাও বলেন তিনি। তিনি বলেন, "ভারত নিউক্লিয়ার অস্ত্র ব্যবহার করবে আর আমরা কলা চুষব এটা হবে না। এখান থেকেও নিউক্লিয়ার অস্ত্র ব্যবহার করা হবে।" কখনও তাঁরা বলেছেন চারদিনে কলকাতা দখল করবেন।
কট্টরপন্থী নেতা মুফতি কাজি মহম্মদ ইব্রাহিম, গোটা ভারত দখলের ফাঁকা বুলি আওড়েছেন। তিনি বলেন, দরকার হলে গোটা ভারত দখল করা হবে।" আবার সেনা কর্মীদের এক মিছিল থেকে প্রাক্তন সেনা কর্মী বলেন, "বাংলাদেশের ৭২ সালের সেনাবাহিনী এর নেই। আমরা এখন যুদ্ধোপযোগী এবং যে কোনও শত্রুর সঙ্গে মোকাবিলায় প্রস্তুত।"
বাংলাদেশের তিসরাই ইনসাফ পার্টির নেতা মিনাজের মুখেও শোনা গিয়েছে একই ধরনের স্লোগান। বলেছেন, "আমরা ইন্ডিয়ার কলকাতা, আগরতলা এবং সেভেন সিস্টার্স দখল করব। আমরা ইন্ডিয়া বাংলাদেশ দু'দেশের মানচিত্রই নতুন করে আঁকব।" এমনকি ভারতকে 'টুকরো টুকরো' করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
প্রশ্ন হল কোথা থেকে এত জোর পাচ্ছে বাংলাদেশের নেতারা। ওয়াকিবহাল মহলের এক অংশের অবশ্য দাবি এর পিছনে অন্য রাজনৈতিক সমীকরণ রয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই ভারত বিদ্বেষ বেড়েছে পদ্মাপাড়ে। আর এখন বিবিধ রাজনৈতিক দলগুলি সেই বিদ্বেষকে কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশের লাগাম হাতে পেতে চাইছে। মনে মনে তাঁরা নিজেরাও জানেন বাস্তবে কিছুই করার মুরোদ তাঁদের নেই।