Kali Temple: ফল বা ভোগ নয়, চাউমিন-মাঞ্চুরিয়ান প্রসাদেই তৃপ্ত কলকাতার এই কালী!
কলকাতার অন্যান্য কালী মন্দির গুলি যেমন জনপ্রিয় তেমনি আকর্ষণীয় এই চাইনিজ কালী মন্দির। তার থেকে বেশি আকর্ষণীয় হল এই মন্দিরের প্রসাদ। মন্দিরের প্রসাদ বা ভোগ হিসাবে চাউমিন, স্টিকি রাইস, সবজি ইত্যাদি দেওয়া হয়।
ভারত এমন এক দেশ যেখানে রয়েছে একাধিক বৈচিত্র্য। ভারতের প্রত্যেক জায়গায়তেই লুকিয়ে আছে কিছু ইতিহাস আবার কিছু বিশেষ আকর্ষণীয় বা মজার বিষয়, যা সব সময় একজন পর্যটকের তৃষ্ণা বাড়িয়ে তোলে। একই ভাবে রয়েছে হাজার হাজার মন্দির ও দেব-দেবী। এই প্রত্যেক মন্দিরের রয়েছে কিছু নিয়ম, রয়েছে কিছু আভিজাত্য। আর প্রত্যেক মন্দিরের মধ্যে সাধারণ বিষয়টি হল প্রসাদ বা ভোগ। তবে অবশ্যই প্রসাদে থাকা বিষয়টি একে ওপরের থেকে আলাদা হয়। কিন্তু কোনও দিন দেব-দেবীকে প্রসাদ বা ভোগ হিসাবে চাউমিন দিতে দেখেছেন?
ভোগ হিসাবে মা কালীকে অর্পিত করা হয় চাউমিন, স্টিকি রাইস ইত্যাদি। হঠাৎ প্রসাদে চাইনিজ কেন? আসলে এই গল্পটা হল চিনা পাড়ার। কলকাতার ট্যাংরাতে অবস্থিত এই চিনা পাড়া, যেখানে রয়েছে চাইনিজ কালী মন্দির। বাঙালিদের মধ্যে এই জায়গা চায়না টাউন নামে জনপ্রিয়। কলকাতার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মধ্যে এই বিষয়টিও ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। কলকাতার অন্যান্য কালী মন্দির গুলি যেমন জনপ্রিয় তেমনি আকর্ষণীয় এই চাইনিজ কালী মন্দির। তার থেকে বেশি আকর্ষণীয় হল এই মন্দিরের প্রসাদ। মন্দিরের প্রসাদ বা ভোগ হিসাবে চাউমিন, স্টিকি রাইস, সবজি ইত্যাদি দেওয়া হয়।
১৮০০ এর দশক থেকে শুরু হয় কলকাতায় চিনাদের আনা-গোনা। বসতি গড়ে উঠতে থাকে ট্যাংরা তপসিয়া অঞ্চলে। ইন্দো-চিন যুদ্ধের পর তারা শুরু করে চামড়ার শিল্প। কিন্তু ১৯৮৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা বন্ধ হয়ে যায়। দেশে ফিরে যান অনেকেই। কিন্তু যাঁরা ফিরে যাননি তাঁরা তৈরি করেন রেস্তোঁরা। মোটামুটি নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু হয় কলকাতায় চাইনিজ খাবার। এরপর থেকে চাইনিজ খাবার মিশে যায় বাঙালির সাথে।
চিনারাও মিশে যায় বাঙালির সংস্কৃতির সাথে। তার নিদর্শন রূপে রয়েছে এই কালী মন্দির। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, একজন বাঙালি পুরোহিত এই চাইনিজ কালী মন্দিরে দেবীর উপাসনা করেন এবং অশুভ আত্মাদের দূরে রাখতে এখানে হাতে তৈরি কাগজ পোড়ানো হয়। দীপাবলির সময় এই মন্দিরের সামনে চাইনিজ ধূপকাঠি জ্বালা হয় লাইন দিয়ে। তাই, কলকাতা তথা ভারতের অন্যান্য কালী মন্দির এবং যাবতীয় মন্দিরের থেকে এই মন্দিরের সুগন্ধ অত্যন্ত আলাদা।
আরও পড়ুন: জম্মু ও কাশ্মীরের দুর্গম স্থানে কীভাবে বৈষ্ণোদেবীর মন্দির তৈরি হল? রয়েছে অনেক রহস্য