Ganesh Chaturthi 2025: গণেশ ঠাকুর কেন পূজিত হন সবার আগে? আসল গল্প চমকে দেবে
Ganesh Puja 2025: হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে ভাদ্রমাসের শুক্লা চতুর্থী তিথিতে পূজিত হন বিঘ্নহর্তা সিদ্ধিদাতা শ্রী গণেশ। মহেশ্বর শিব এবং পার্বতী পুত্র তিনি। বিশ্বাস এই গণেশ চতুর্থীর দিনে ভক্তদের মনবাঞ্ছা পূরণ করতে মর্ত্যে আসেন স্বয়ং বিঘ্নহর্তা। তাঁর সঙ্গী হলেন মুশকরাজ ইঁদুর। প্রশ্ন হল কেন তাঁর পুজোই হয় সর্বাগ্র?

বুধবার অর্থাৎ ২৭ সেপ্টেম্বর গণেশ চতুর্থী। এককালে বাংলায় গণেশ পুজো নিয়ে খুব একটা মাতামাতি না হলেও মায়ানগরী মুম্বই থেকে এখন গণেশ পুজোর ধুম বাংলাতে খুব একটা কম নয়। কলকাতার বহু ক্লাব বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে করেন গণেশ পুজো। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে ভাদ্রমাসের শুক্লা চতুর্থী তিথিতে পূজিত হন বিঘ্নহর্তা সিদ্ধিদাতা শ্রী গণেশ। মহেশ্বর শিব এবং পার্বতী পুত্র তিনি। বিশ্বাস এই গণেশ চতুর্থীর দিনে ভক্তদের মনবাঞ্ছা পূরণ করতে মর্ত্যে আসেন স্বয়ং বিঘ্নহর্তা। তাঁর সঙ্গী হলেন মুশকরাজ ইঁদুর। প্রশ্ন হল কেন তাঁর পুজোই হয় সর্বাগ্র? নেপথ্যে রয়েছে পৌরাণিক ব্যাখ্যা।
কথিত, একবার স্নানে যাওয়ার আগে মাটি দিয়ে এক সুদর্শন বালকের মূর্তি তৈরি করেন দেবী পার্বতী। প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন সেই মূর্তিতে। নিজের ছেলেকে ভালবেসে নাম দেন গণেশ। তারপর গণেশকে দরজায় পাহাড়ায় রেখে অন্দরে স্নানে চলে যান পার্বতী। এদিকে দরজা আগলে দাঁড়িয়ে থাকেন গণেশ। মাতৃ আজ্ঞা তাঁর অনুমতি ছাড়া যেন কেউ ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।
এত অবধি ঠিকই ছিল। বাঁধ সাধল অন্য এক ঘটনায়। একটু সময় গড়াতেই দরজায় এলেন পার্বতীর স্বামী স্বয়ং দেবাদিদেব মহাদেব। মহাদেবকে দেখে প্রবেশ পথ আগলে দাঁড়ান গণেশ। প্রথমে ব্যাপারটা বালকের ছেলেমানুষী হিসাবে গণ্য করেছিলেন মহাদেব। তিনি বলেন, ‘আমি পার্বতীর স্বামী, আমি ভিতরে যেতেই পারি।’ তবু মাতৃ আজ্ঞার সামনে আর কোনও কথাই খাটে না। গণেশকে বোঝাতে ছুটে আসেন ব্রহ্মাদেব, দেবরাজ ইন্দ্র এমনকি মহাদেবের বাহন নন্দীও। কিন্তু কারও কথাতেই কর্ণপাত করেননি গণেশ। এমনকি বল প্রয়োগ করেও হল না কোনও লাভ। বরং নাস্তানুবুদ করে ছাড়েন সকলে। শেষমেশ আর মাথা ঠান্ডা রাখতে না পেরে ক্রোধের বশে ওইটুকু গণেশের ওপরে নিজের ত্রিশূল দিয়ে আঘাত হানেন মহাদেব। ছিন্ন হয়ে যায় গনেশের শির।
সেই সময়ে গন্ডগোলের শব্দে বাইরে বেরিয়ে আসেন দেবী পার্বতী। নিজের মৃত সন্তানকে দেখে ক্রোধিত হয়ে ওঠেন তিনি। মহাদেবকে বলেন আপনি যদি সন্তানের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে না পারেন তাহলে তাঁর ক্রোধাগ্নিতে ধ্বংস হবে সৃষ্টি। মহা ফাঁপড়ে পড়লেন মহাদেব। তাঁর ত্রিশূলে যে শিরচ্ছেদ হয়েছে তা পুনরায় জোড়া লাগা অসম্ভব।
সৃষ্টি কর্তা বিষ্ণু তখন শিবগণকে আদেশ দেন, সূর্যাস্তের আগে এমন কোনও শিশুর মাথা কেটে আনতে হবে যে উত্তর দিকে মুখ করে শুয়ে রয়েছে। সেই মতো মাথার সন্ধানে বেরিয়ে পরে তাঁরা। কিন্তু কেবল এক গজকেই খুঁজে পান তাঁরা। বাধ্য হয়ে সেই মাথাই কেটে নিয়ে আসেন। পুনরায় জীবিত হয়ে ওঠেন গণেশ। মহাদেব আশির্বাদ করে তাঁকে বলেন, তুমি হবে বিশ্বের বিঘ্নহর্তা। যে ভক্তিভরে গণেশের উপাসনা করবে, তাঁর জীবনে সব বাঁধা দূর হবে। এই সংসারে সবার আগে পূজিত হবে গণেশ । এই কারণেই সর্বাগ্রে হয় গণেশ পুজো।
