৩০ গজের সার্কেল ছোট হলে রোমাঞ্চ বাড়বে আইপিএলে: ললিত মোদী
Lalit Modi on IPL: মোদীর হাত ধরে শুরু হওয়া আইপিএল প্রথম সংস্করণ থেকেই আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। আইপিএলকে অনুকরণ করে এখন সারা বিশ্বে বেশ কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ শুরু হয়েছে। আইপিএলও দেখতে দেখতে ১৫তম সংস্করণে পা দিতে চলেছে।
নয়াদিল্লি: তাঁর হাত ধরেই শুরু হয়েছিল আইপিএল (IPL)। সেই কুড়ি-বিশের লিগ এখন অনেকটাই থমকে গিয়েছে। আইপিএলকে যদি বিশ্বের সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের তাকমা ধরে রাখতে হয়, তা হলে পরিবর্তন দরকার। সেটা কী হতে পারে? ললিত মোদীর (Lalit Modi) পরার্মশ, ৩০ গজের সার্কেল ছোট করা উচিত। শুধু তাই নয়, আইপিএলকে এ বার ভারত ছেড়ে বেরোতে হবে। করোনার কারণে গত দু’মরসুম আমিরশাহিতে (UAE) আয়োজিত হলেও তা যথেষ্ট নয়। বিশ্ব দরবারে এই লিগের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য আমেরিকা, ইউরোপ কিংবা আফ্রিকার দেশগুলোতে ছড়িয়ে দিতে হবে। আর সেই কারণেই আইসিসির সদস্য দেশগুলোর ক্রিকেটার আইপিএলে নেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়া দরকার।
লন্ডন থেকে টিভি নাইনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ললিত মোদী বলছেন, ‘আইপিএলকে এ বার পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। ২০১০ সালে আমার ভারত ছাড়ার পর থেকে আয়োজকরা এটাকে স্রেফ একটা লিগের মতো চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে কোনও নতুনত্ব নেই। কোনও টুর্মানেন্টকে বিশ্ব খেলাধুলোর লিডার করতে গেলে কিছু জিনিসের প্রয়োজন হয়। আইপিএলে ক্রমগাত যে নতুনত্ব ছিল, সেটা আমার মন্ত্র ছিল। আইপিএলকে আরও ভালো, আরও বড়, আরও রোমাঞ্চকর করতে হবে।’
মোদীর হাত ধরে শুরু হওয়া আইপিএল প্রথম সংস্করণ থেকেই আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। আইপিএলকে অনুকরণ করে এখন সারা বিশ্বে বেশ কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ শুরু হয়েছে। আইপিএলও দেখতে দেখতে ১৫তম সংস্করণে পা দিতে চলেছে। মোদী বলছেন, ‘আইপিএলকে সফল করার জন্য যা দরকার ছিল, তাই করেছি। ভেবে দেখুন, ২০১০ সালে আইপিএলকে থ্রিডির মতো উপভোগ যাতে করা যায়, তার চেষ্টা করেছি। আইপিএলের সরাসরি সম্প্রচার সিনেমাহলে করা হয়েছে। ইউটিউবের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা হয়েছিল। যখন কেউ নতুন কিছু করার কথা ভাবে, তখন ব্যর্থ হবে কিনা, তা নিয়ে ভাবা উচিত নয়।’
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোদীর পরামর্শ, ‘আমি ছোট ভাবতে পারি না। আইপিএলকে বড় করতে হবে। আর তাই ৩০ গজের সার্কেল ছোট করতে হবে। ক্রিকেটাররা আগের থেকে অনেক ফিট। যে টিমের বোলিং ভালো, তারা প্লে-অফে খেলবেই। আর সেই কারণেই নিয়ম বদলাতে হবে। লোকে ছক্কা দেখতে চায়। কিন্তু আমরা আইপিএলকে এনবিএ-র মতো রোমাঞ্চকর করতে হবে। একটা খেলার সঙ্গে আর ম্যাচের যেন কোনও মিল না থাকে। ব্যাটারদের সামনে একটা পুরো মাঠ থাকে। আর বোলারদের নিজেদের স্কিল দেখানোর জায়গা বলতে শুধু বাইশ গজ। তাও কিন্তু বোলাররা নিজেদের মেলে ধরছে।’ একই সঙ্গে তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘প্লেয়ারদের সঙ্গে ফ্যানদের যোগ আরও বাড়াতে হবে। স্টেডিয়ামে বসে ম্যাচ দেখার সুবিধা আরও বেশি হতে হবে। আইপিএলের টিকিট যে ক্রিকেট সমর্থকের কাছে একটা দারুণ জিনিস হয়।’
আইপিএল ১৫ থেকে ১০টা টিমের খেলা হতে চলেছে। ললিত মোদী কিন্তু সতর্ক করছেন, ’১০ টিমের আইপিএল নিয়ে আপত্তি নেই। কিন্তু নতুন ক্রিকেটারদের মান একই রকম হতে হবে। আমি তো বলব, আইপিএলকে আরও বেশি করে ছড়িয়ে দেওয়া হোক। আইসিসির সদস্য দেশগুলোর সেরা ক্রিকেটারদের এই লিগে নেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত। আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকার দেশগুলোতে টিভিতে যেন আইপিএল দেখানো হয়, সেটাও দেখতে হবে। আইপিএল যত ছড়াবে, এই লিগের মাহাত্ম ও গুরুত্বও তত বাড়বে।’
ললিত মোদী সেই সঙ্গে আবার দাবি তুললেন, সিভিসি ক্যাপিটালসের মতো সংস্থা, যারা জুয়া সংস্থায় অর্থ লগ্নি করে, তাদের আইপিএল টিমের মালিকানা দেওয়া উচিত নয়। তাঁর যুক্তি, ‘ফ্যান্টাসি লিগ এক রকম। কিন্তু যে সব সংস্থা সরাসরি জুয়ায় জড়িয়ে, তাদের আইপিএলে নেওয়ার অর্থ হল খেলাটাকে তারা নিজেদের মতো করে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবে। সেটা ঠিক হবে না।’