IPL 2022: ডি’কক-লুইসের চওড়া ব্যাটে প্রথম জয় কেএল রাহুলের লখনউয়ের

টানটান ম্যাচে রবীন্দ্র জাডেজার চেন্নাই সুপার কিংসকে (Chennai Super Kings) ৬ উইকেটে হারিয়ে চলতি মরসুমে প্রথম জয় পেল লোকেশ রাহুলের লখনউ সুপার জায়ান্টস (Lucknow Super Giants)।

IPL 2022: ডি'কক-লুইসের চওড়া ব্যাটে প্রথম জয় কেএল রাহুলের লখনউয়ের
IPL 2022: ডি'কক-লুইসের চওড়া ব্যাটে প্রথম জয় কেএল রাহুলের লখনউয়ের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 01, 2022 | 12:08 AM

চেন্নাই সুপার কিংস ২১০-৭ (২০ ওভারে)

লখনউ সুপার জায়ান্টস ২১১-৪ (১৯.৩ ওভারে)

মুম্বই: ব্র্যাবোন স্টেডিয়াম আজ সাক্ষী রইল দুই ‘সুপার’-এর এক উত্তেজনায় ভরপুর ম্যাচের। এই ধরণের ম্যাচ গুলোতেই দাঁত দিয়ে নখ কামড়ানোর মতো অবস্থা হয়। আইপিএলের (IPL 2022) সপ্তম ম্যাচে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে হয় জাডেজাদের। তাতে ২১১ রানের টার্গেটটা লখনউয়ের কাছে খুব সহজ ছিল না। কিন্তু সেটা সহজ করে গেলেন লোকেশ-ডি’কক-লুইসরা। টানটান ম্যাচে রবীন্দ্র জাডেজার চেন্নাই সুপার কিংসকে (Chennai Super Kings) ৬ উইকেটে হারিয়ে চলতি মরসুমে প্রথম জয় পেল লোকেশ রাহুলের লখনউ সুপার জায়ান্টস (Lucknow Super Giants)। শুরুতে লোকেশ রাহুল ও কুইন্টন ডি’ককের দুরন্ত ব্যাটিং ও শেষে এভিন লুইসের ঝোড়ো ইনিংসে ভর করে ৩ বল বাকি থাকতেই রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতে মাঠ ছাড়ল লখনউ।

২১১ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেন লোকেশ রাহুলরা। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে কোনও উইকেট না খুইয়ে ৫৫ রান তুলে ফেলেন রাহুল-ডি’কক। লখনউয়ের ওফর ক্রমাগত চাপ তৈরি করতে থাকেন ব্র্যাভোরা। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছিল না। ১১ ওভার পর্যন্ত লখনউকে এগিয়ে নিয়ে যান রাহুল-ডি’কক। ৯৯ রানের মাথায় কেএলকে ফেরান ডোয়েন প্রিটোরিয়াস। ২৬ বলে ৪০ রান করে যান লোকেশ রাহুল। তিন নম্বরে নামেন মনীশ পান্ডে। তবে পরের ওভারেই ফের উইকেট হারায় লখনউ। মনীশের (৫) উইকেট তুলে নেন তুষার দেশপান্ডে। এর পর এভিন লুইসের সঙ্গে জুটি বেঁধে লখনউকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ডি’কক। ফের ইয়েলোব্রিগেডকে উইকেট এনে দেন প্রিটোরিয়াস। ৪৫ বলে ৬১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ডি’কক। প্রোটিয়া উইকেটকিপার-ব্যাটারের বড় উইকেট হারানোর পর দীপক হুডা আসেন। কিন্তু বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। হুডার উইকেট তুলে নিয়ে একপ্রকার ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ব্র্যাভো। সেই সঙ্গে আইপিএলের ইতিহাসে সব থেকে বেশি উইকেটশিকারী বোলারের তালিকায় ডিজে ব্র্য়াভো ছাপিয়ে গেলেন লাসিথ মালিঙ্গাকে। শেষ বেলায় আয়ুষ বদোনিকে নিয়ে লখনউকে উদ্ধার করেন এভিন লুইস। ২৩ বলে ৫৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন এভিন লুইস। তাঁর এই ঝোড়ো ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছয়। অন্যদিকে ৯ বল খেলে ১৯ রানে নট আউট থাকেন আয়ুষ।

চোট সারিয়ে ঋতু চেন্নাই শিবিরে ফিরেছেন ঠিকই। কিন্তু গত মরসুমের অরেঞ্জ ক্যাপজয়ী ব্যাটারকে ছন্দে দেখা যাচ্ছে না। দুটো ম্য়াচে তাঁর ঝুলিতে রান মাত্র ১। নাইটদের বিরুদ্ধে এ বারের প্রথম ম্যাচে ৪ বলে কোনও রান পাননি তিনি। আর আজও খেললেন ৪ বল। করলেন মাত্র ১ রান। রবি বিষ্ণোইয়ের নিখুত থ্রো-তে আজ রান আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে ঋতুরাজকে। তিন নম্বরে নেমেছিলেন ইংল্যান্ডের তারকা অলরাউন্ডার মইন আলি। ঋতু ফিরলে রবীন উথাপ্পার সঙ্গে জুটি বাঁধেন মইন। দুরন্ত ছন্দে দেখা গেল উথাপ্পাকে। ১৮৫.১৮ স্ট্রাইকরেটে খেলে গেলেন ড্যাডিস আর্মির অন্যতম প্লেয়ার। ২৫ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন উথাপ্পা। কিন্তু এরপরই রাজস্থানের ২১ বছর বয়সী রবির ফাঁদে পড়েন। আম্পায়ার আউট না দিলেও, ডিআরএস নিয়ে সফল হয় লখনউ। উথাপ্পা মাঠ ছাড়লে ৪ নম্বরে ব্যাট করতে আসেন শিবম দুবে। মইনকে সঙ্গ দেওয়া শুরু করেন তিনি। তবে ছন্দে থাকা মইনকে বিদ্ধংসী হতে দেননি আবেশ খান। ২২ বলে ৩৫ রান করে যান মইন।

এর পর শিবম দুবের সঙ্গে জমাট জুটি বাঁধেন রায়ডু। আবেশ-চামিরারা চেষ্টা করেও ওই জুটি ভাঙতে পারছিলেন না। শেষ অবধি ১৭ ওভারে গিয়ে বিষ্ণোই ফেরান রায়ডুকে। ২৭ রান করেন রায়ডু। শিবম দুবেও আজ ভালো ছন্দে ছিলেন। হবে হাফসেঞ্চুরিটা হাতছাড়া করে যান। ১৯তম ওভারে আবেশ ফেরান শিবমকে। পুরনো নেতা মাহি ও নতুন নেতা জাডেজা ছিলেন ক্রিজে। শেষ ওভারে বল করতে আসেন অ্যান্ড্রু টাই। প্রথম বলে ৪ খেলেও পরপর দু’খানা উইকেট নেন টাই। ৬ বলে ১৬ রানে নট আউট থেকে মাঠ ছাড়েন মাহি।

নেতা বদল তো হল চেন্নাইয়ের। কিন্তু এই মরসুমে জয় তো এখনও মুঠোয় এল না চেন্নাইয়ের। জিততে হলে আগামী ম্যাচগুলোতে আরও হিসেব নিকেশ কষে, মাহিমন্ত্রকে অস্ত্র করে মাঠে নামতে হবে ইয়েলোব্রিগেডকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: চেন্নাই ২১০-৭ (রবীন উথাপ্পা ৫০, শিবম দুবে ৪৯, রবি বিষ্ণোই ২-২৪, আবেশ খান ২-৩৮)। লখনউ ২১১-৪ (কুইন্টন ডি’কক ৬১, এভিন লুইস ৫৫*, কেএল রাহুল ৪০, ডোয়েন প্রিটোরিয়াস ২-৩১, ১-৪০)