Ranji Trophy Quarter Final: মাঠে মন্ত্রীমশাই, সাবধানে থেকো ভাই, সেঞ্চুরিতে মধ্যপ্রদেশকে বার্তা মনোজের
মন্ত্রীমশাইয়ের দাপটেও হারিয়ে যাননি ব্যাটার মনোজ। বাংলাকে ভারতসেরা করার মন্ত্র নিয়েই যেন নামছেন তিনি।
কলকাতা: যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন! যদি তিনি মন্ত্রীমশাই হন? তা হলেও তাঁকে আটকাবে কে? ক্রীড়া দপ্তরের দায়িত্বে থাকলে তো আরওই দায়িত্ববান হবেন তিনি! মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary) কি সেই কথা মাথায় নিয়েই নেমেছিলেন আলুর স্টেডিয়ামে। ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে রঞ্জি কোয়ার্টার ফাইনালের (Ranji Trophy) শেষ দিন ১৩৬ করলেন রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী (Bengal Minister)। যে ভাবে মাঠে চান্সলেস ইনিংস খেললেন মন্ত্রীমশাই, যেন মধ্যপ্রদেশকে বার্তা দিলেন, ‘সাবধানে থেকো ভাই’! প্রথম ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে বেরিয়ে ছিল ৭৩। ৩৭ বছরের প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার চণ্ডীগড়ের বিরুদ্ধে গ্রুপ লিগের ম্যাচে ছিল ৫৩ রান। মন্ত্রীমশাইয়ের দাপটেও হারিয়ে যাননি ব্যাটার মনোজ। বাংলাকে ভারতসেরা করার মন্ত্র নিয়েই যেন নামছেন তিনি। রান আউট না হলে হয়তো ডাবলও করে ফেলতে পারতেন মনোজ।
রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে বাংলা। শেষ চারে মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে খেলবে তারা। প্রথম ইনিংসে ৭৭৩-৭ স্কোরে সমাপ্তি ঘোষণা করেছিল বাংলা। প্রথম ৯ ব্যাটসম্যান অর্ধশতাধিক রান করে বিশ্বরেকর্ডও গড়ে বাংলা। রানের পাহাড়ের জবাবে বিরাট সিংয়ের অনবদ্য শতরানে ২৯৮ রান করে ঝাড়খণ্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুতে তিন উইকেট হারালেও অনবদ্য অর্ধশতক মনোজ তিওয়ারির। শুধুমাত্র একবারই তাঁকে আউট করার সুযোগ পেয়েছিল ঝাড়খণ্ড। অবশেষে রান আউট হয়ে ফেরেন মনোজ। ততক্ষণে চোখ ধাঁধানো একটা ইনিংস খেলেছেন মনোজ। ১৮৫ বলে ১৩৬ রান করেন তিনি৷ ১৯টি বাউন্ডারি এবং ২টি ওভার বাউন্ডারি মেরেছেন। সপ্তম উইকেট হিসেবে শাহবাজ আহমেদ আউট হতেই ৩১৮-৭ স্কোরে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলা। পুনরায় না নেমে সেমিফাইনালের প্রস্তুতির সিদ্ধান্ত নেয় বাংলা। দু’দলই হাত মিলিয়ে নেয়। ম্যাচ ড্র হলেও প্রথম ইনিংসে লিডের সৌজন্যে শেষ চারে বাংলা। ১৪ জুন থেকে শুরু সেমিফাইনাল।
প্রথম ইনিংসে বাংলার ব্যাটিং ছিল দেখার মতো। যেই নামছেন, রান করছেন। তবে বাড়তি কৃতিত্ব প্রাপ্য সুদীপ ঘরামির। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক শতরান করেন তিনি। সেটা হয়তো দ্বিশত রানেই পরিণত হত। লেগ সাইডের একটি ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হন তিনি। হতাশায় মাথা নাড়তে নাড়তে মাঠ ছাড়েন তিনি। ১৮৬ রানের প্রশংসনীয় একটা ইনিংস খেলেন সুদীপ। প্রথম ইনিংসে শতরান করেছিলেন অভিজ্ঞ অনুষ্টুপ মজুমদারও। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলার শুরুটা ভালো হয়নি। ৫২ রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারায় বাংলা। চতুর্থ দিনের শেষে ক্রিজে ছিলেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মনোজ তিওয়ারি ও অনুষ্টুপ মজুমদার। দ্বিতীয় জনের ইনিংস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তবে মনোজ দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রানে আউট হন। রানটা নেহাৎ কম নয়। তবুও হতাশ ছিলেন। এ দেশের পিচে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করা খুবই কঠিন। অভিজ্ঞ মনোজকে দেখে তা মনে হয়নি। সাবলীল ব্যাটিং। ৯৯ থেকে সিঙ্গল নিয়ে শতরানে পৌঁছতেই হাসি চওড়া হল মনোজের। ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক, সব দায়িত্ব সামলেও ক্রিকেটার মনোজ বাংলা দলেও সম্পূর্ণ তাগিদ দিয়ে ব্যাট করে গেলেন।
আগের দিন বাংলার প্রধান কোচ অরুণ লাল জানিয়েছিলেন, নতুন বলে পেসারদের সুযোগ দিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ঝাড়খণ্ডকে ব্যাটিং করতে পাঠানোর সম্ভাবনা ছিল। তেমন সিদ্ধান্ত অবশ্য নেওয়া হল না। সেমিফাইনালের মাঝে তিনদিন গ্যাপ রয়েছে। এর মধ্যে পেসারদের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে হবে। বিশেষত মুকেশ কুমার ও ঈশান পোড়েলের।