IPL 2022: ২০০ রানও আর নিরাপদ নয়, প্রমাণ করল মায়াঙ্কের পঞ্জাব
গতবার আমিরশাহি পর্বে আইপিএল বিশেষজ্ঞরা বলতে শুরু করেছিলেন, রান তাড়া করলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা অনেক বাড়ে। যে টার্গেটই দেওয়া হোক না কেন, লক্ষ্যে পৌঁছতে অসুবিধা হয় না। আইপিএল ১৫-র তিনটে ম্যাচই কিন্তু সেই ট্রেন্ড তৈরি করে দিল। রান তাড়া করে পর পর তিনটে ম্যাচ জিতল কলকাতা, দিল্লি ও পঞ্জাব।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ২০৫-২ (২০ ওভারে)
পঞ্জাব কিংস ২০৮-৫ (১৯ ওভারে)
মুম্বই: ঠিক কত রান করলে একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতা যায়? বছর তিনেক আগেও বলা হত, ১৫০-এর ধারেকাছে স্কোর রাখলে ব্যাটারদের বিরুদ্ধে লড়াই করার অক্সিজেন পান বোলাররা। সেটাই গত আইপিএল (IPL 2022) থেকে হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ১৮০। কিন্তু আইপিএল ১৫ বোধহয় সে নিয়মও ভেঙে দিতে চলেছে। ২০০-র বেশি রান স্কোর বোর্ডে থাকলে ম্যাচ জিতবে কোনও টিম, জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। রান রাড়া করতে নেমে যে কোনও টিম একটা ভালো শুরু, মাঝের ওভারে খানিক ঝড়ঝাপটা বইয়ে অনায়াসে ম্যাচ জিতে যেতে পারে। তাও কিনা ৬ বল বাকি থাকতে! রবিবারই আইপিএল জগতের বাসিন্দারা দেখে ফেলল, আরও ধুন্ধুমার হতে চলেছে ১৫-র সংস্করণ। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর (Royal Challengers Bangalore) ২০৫-২ তোলার পরও ১৯ ওভারেই ম্যাচ জিতে গেল পঞ্জাব কিংস (Punjab Kings)। মুম্বই-দিল্লি ম্যাচের মতোই মায়াঙ্ক আগরওয়ালের টিমের লোয়ার অর্ডারই জয় এনে দেওয়ার কাজটা সারল।
গতবার আমিরশাহি পর্বে আইপিএল বিশেষজ্ঞরা বলতে শুরু করেছিলেন, রান তাড়া করলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা অনেক বাড়ে। যে টার্গেটই দেওয়া হোক না কেন, লক্ষ্যে পৌঁছতে অসুবিধা হয় না। আইপিএল ১৫-র তিনটে ম্যাচই কিন্তু সেই ট্রেন্ড তৈরি করে দিল। রান তাড়া করে পর পর তিনটে ম্যাচ জিতল কলকাতা, দিল্লি ও পঞ্জাব। ওয়াংখেড়ের পিচে তাও কিছুটা প্রাণ ছিল। কিন্তু ব্র্যাবোর্ন কিংবা নভি মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামের বাইশ গজ একেবারে নিষ্প্রাণ। বোলারদের কার্যত কিছুই করার থাকছে না।
আরসিবি কিন্তু শুরুটা বেশ ভালো করেছিল। বিরাট কোহলির বদলে নেতৃত্বের ভার নিয়ে নেমেই দারুণ সফল ফাফ দু প্লেসি। ৫৭ বলে ৮৮ রানের ইনিংস খেলে গেলেন। মেরেছেন ৭টা ছয় ও ৩টে চার। বিরাট ২৯ বলে নট আউট ৪১, কেকেআরের প্রাক্তন দীনেশ কার্তিক ১৪ বলে নট আউট ৩২। আরসিবির আগ্রাসনের সামনে কার্যত কিছুই করতে পারেনি মায়াঙ্কের বোলাররা। একমাত্র রাহুল চাহার কিছুটা ভালো বোলিং করেন। নির্যাতন সবচেয়ে বেশি সহ্য করেছেন ওডেন স্মিথ। ৪ ওভারে ৫২ রান দিয়েছেন। পেল্লাই চারটে ছয় খেতে হয়েছে ডানহাতি পেসারকে।
একই সঙ্গে বলা যেতে পারে, আইপিএল এখন আর স্পেশালিস্টদের জায়গা নয়। অলরাউন্ডারই বাজিমাত করছেন। করবেনও। রবি আসরের প্রথম ম্যাচে ললিত যাদব, শার্দূল ঠাকুর, অক্ষর প্যাটেলরা মুম্বইয়ের কাছ থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। রাতের ম্যাচেও একই ঘটনা। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার ওডেন স্মিথই আরসিবির কাছ থেকে ম্যাচটা ছিনিয়ে নিলেন। ৮ বলে তাঁর নট আউট ২৫টাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ৩টে ছয়ের পাশাপাশি ১টা চারও মেরেছেন। সেই সঙ্গে শাহরুখ খান ২০ বলে নট আউট ২৪ করে যান।
২০৬ তাড়া করতে নেমে মায়াঙ্ক ৩২ করে ফিরে যান। টিম বদলে পঞ্জাবের হয়ে নামা শিখর ধাওয়ান ২৯ বলে ৪৩ করেন। অবশ্য যা খেলছিলেন, তাতে বড় রান করতে পারতেন। শ্রীলঙ্কার ভানুকা রাজাপক্ষও ৪৩ করেন। কিন্তু এঁরা কেউ নন, বল হাতে যিনি প্রায় খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন, সেই স্মিথই নায়ক হয়ে গেলেন। আইপিএল কারওরই সমান যায় না যে!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ব্যাঙ্গালোর ২০৫-২ (দু প্লেসি ৮৮, বিরাট নট আউট ৪১, কার্তিক নট আউট ৩২, অর্শদীপ ১-৩১, রাহুল ১-২২)। পঞ্জাব ২০৮-৫ (শিখর ৪৩, ভানুকা ৪৩, মায়াঙ্ক ৩২, স্মিথ নট আউট ২৫, সিরাজ ২-৫৯)।
আরও পড়ুন: IPL 2022: ঈশান বিস্ফোরণেও পন্থের দিল্লির কাছে হার মুম্বইয়ের