IPL 2022: ঈশান বিস্ফোরণেও পন্থের দিল্লির কাছে হার মুম্বইয়ের
রোহিত শর্মার মুম্বই ১৭৭-৭ তুলেছিল ঠিকই, কিন্তু টপ অর্ডার ব্যর্থতা সত্ত্বেও দিল্লিকে (১৭৯-৬) প্রথম ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন ললিত যাদব ও অক্ষর প্যাটেল।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ১৭৭-৫ (২০ ওভারে)
দিল্লি ক্যাপিটালস ১৭৯-৬ (১৮.২ ওভারে)
মুম্বই: ম্যাচ উইনার বলে একটা কথা আছে ক্রিকেটে। কেউ কেউ হঠাৎ করে একটা হারা ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারেন। হাতে ক’উইকেট রয়েছে, কত বল বাকি ম্যাচের, কত রান তুলতে হবে, উল্টো দিকে কে দাঁড়িয়ে আছেন, কে বল করবেন, এ সব দেখেন না তাঁরা। শুধু একটাই জিনিস জানেন, ম্যাচটা জেতা যায়। টি-টোয়েন্টি শুরুর আগে হাতে গোনা ম্যাচ ছিল ক্রিকেটে। কিন্তু কুড়ি-বিশের দুনিয়া যেন যে কাউকে ম্যাচ উইনার বানিয়ে দিচ্ছে। আইপিএল (IPL 2022) ১৫ দ্বিতীয় দিনে পা দিয়েই বুঝিয়ে দিল, যে কোনও প্রতিপক্ষকে হারানোর শর্তই হল, প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জেতার মানসিকতা। পাঁচ বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (Mumbai Indians) বিরুদ্ধে দিল্লি ক্যাপিটালসের (Delhi Capitals) ১০ বল বাকি থাকতে জয় যেন মনে করিয়ে দিল, আইপিএল অতীত মনে রাখে না। রোহিত শর্মার মুম্বই ১৭৭-৭ তুলেছিল ঠিকই, কিন্তু টপ অর্ডার ব্যর্থতা সত্ত্বেও দিল্লিকে (১৭৯-৬) প্রথম ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন ললিত যাদব ও অক্ষর প্যাটেল।
এক একটা আইপিএল এক-একজনের গল্প শোনায়। আচমকা কেউ কেউ দামি হয়ে ওঠেন। এই আইপিএলে যেমন ঈশান কিষাণ। গত কয়েক বছর ধরেই বিস্ফোরক ব্য়াটিংয়ের জন্য সুনাম অর্জন করেছেন। এই আইপিএলে তিনিই সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার। প্রথম ম্যাচে নেমেই বুঝিয়ে দিলেন, কেন তাঁর জন্য বিপুল অর্থ খরচ করেছিল মুম্বই। ৪৮ বলে নট আউট ৮১ রানের ইনিংস খেলে গেলেন। খেলেছেন ৪৮ বল। ১১টা চার ও ২টো ছয় দিয়ে সাজিয়েছেন ইনিংস। বিস্ফোরণের পাশাপাশি দায়িত্ব নিতেও যে শিখেছেন, তা দেখালেন ঈশান। তাঁর এবং রোহিতের ওপেনিং পার্টনারশিপের সময় মনে হচ্ছিল, ২০০ পার করে ফেলতে পারে মুম্বই। ৪১ করে তিনি ফিরতেই সে ভাবে আর কেউ ছাপ রাখতে পারলেন না। তিলক ভার্মা ২২ করলেন শুধু। তবু দিল্লিকে ১৭৮ টার্গেট দিতে পারল মুম্বই শুধু ঈশানের জন্য।
একঝাঁক তরুণ এ বারের আইপিএলকে রঙিন করে তুলেছেন। বলা যেতে পারে, এঁদের মধ্যে দিয়েই ভারতীয় টিম পরবর্তী অধিনায়ক খুঁজে নিতে চাইছে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্যাপ্টেন শ্রেয়স আইয়ার, লখনউ সুপার জায়েন্টের লোকেশ রাহুল, দিল্লির ঋষভ পন্থ। শ্রেয়স আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচ জিতেছেন। পন্থও দ্বিতীয় দিন জয় দিয়েই শুরু করলেন। কারণ দুটো। এক, কুলদীপ যাদবের নামের চায়নাম্যান বোলারের দুরন্ত প্রত্যাবর্তন। দুই, ললিত আর অক্ষরের শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে ম্যাচ জিতিয়ে দেওয়া। গত দুটো আইপিএলে কুলদীপ সে ভাবে পারফর্ম করতে পারেননি। কিন্তু মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে তাঁর ঝুলিতে রোহিত ও কায়রন পোলার্ডের উইকেট। সব মিলিয়ে ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৮ রান দিয়ে নিলেন ৩ উইকেট।
WHAT. A. CHASE. ??@DelhiCapitals register their first victory of the season in style!
Scorecard – https://t.co/WRXqoHz83y #TATAIPL #DCvMI pic.twitter.com/prGmdPTAaN
— IndianPremierLeague (@IPL) March 27, 2022
ব্র্যাবোর্নের পিচে ১৭৮ তাড়া করা কখনওই সহজ ছিল না। তার উপর টিম সিফার্ট (২১), মনদীপ সিং (০), পন্থ (১), রোভম্যান পাওয়েল (০)— কেউই দাঁড়াতে পারেননি। শুরুতে শুধু পৃথ্বী শ লড়েছিলেন। ২৪ বলে ৩৮ করে ফিরে যান। ৭২-৫ উইকেট হয়ে গিয়ে একসময় চাপেও পড়ে গিয়েছিল দিল্লি। সেখান থেকে ললিতের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়াল রিকি পন্টিংয়ের দিল্লি। ৩৮ বলে ৪৮ রানের চমৎকার ইনিংস খেললেন ললিত। ৪টে চার ও ২টো ছয় দিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন। তাঁকে সঙ্গ দিলেন দুই অলরাউন্ডার। ১১ বলে ২২ করে যান শার্দূল ঠাকুর। তার পর ১৭ বলে নট আউট ৩৮ অক্ষর প্যাটেলের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের তো এটাই মজা, কে যে কখন ম্যাচ উইনার হয়ে উঠবেন, কে জানে!
সংক্ষিপ্ত স্কোর: মুম্বই (ঈশান ৮১, রোহিত ৪১, তিলক ২২, কুলদীপ ৩-১৮, খলিল ২-২৭)। দিল্লি (ললিত নট আউট ৪৮, অক্ষর নট আউট ৩৮, পৃথ্বী ৩৮, শার্দূল ২২, থাম্পি ৩-৩৫, অশ্বিন ২-১৪)।