ফিফার দু’বছর অন্তর বিশ্বকাপের বিরুদ্ধে একজোট অলিম্পিক কমিটির কর্তারা
উইন্টার অলিম্পিক উপলক্ষ্যে বেজিংয়ে প্রায় সব দেশেরই অলিম্পিক কমিটির সদস্যরা হাজির। তাঁদের নিয়েই সভায় সরাসরি ফিফার প্রস্তাবের বিরোধীতা করেছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি।

বেজিং: ফিফা প্রেসিডেন্ট গিয়ান্নি ইনফান্তিনোর (Gianni Infantino) দু’বছর অন্তর বিশ্বকাপ (World Cup) আয়োজন করার ভাবনা যদি বাস্তবায়িত হয়, তা হলে খেলার প্রভূত ক্ষতি হবে। ভারসাম্য পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। শুধু ফুটবল নয়, অন্যান্য খেলার উপরেও তার সরাসরি প্রভাব পড়তে বাধ্য। আর তাই বিভিন্ন দেশের অলিম্পিক কমিটির কর্তারা এর সরাসরি বিরোধীতা শুরু করলেন। অলিম্পিকের মতো বড় মাপের গেমস দু’বছর অন্তর আয়োজন করা সম্ভব নয়। তাতে জৌলুসও নষ্ট হবে। যে সিস্টেম মেনে আয়োজন করা হয় অলিম্পিক, তাও ধাক্কা খেতে পারে। এমনই আশঙ্কায় ভুগছেন টমাস বাখরা।
উইন্টার অলিম্পিক উপলক্ষ্যে বেজিংয়ে প্রায় সব দেশেরই অলিম্পিক কমিটির সদস্যরা হাজির। তাঁদের নিয়েই সভায় সরাসরি ফিফার প্রস্তাবের বিরোধীতা করেছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। ঘটনা হল, ওই সভায় হাজির থাকার কথা ছিল ইনফান্তিনোরও। কিন্তু তিনি চিন যাত্রা বাতিল করেছেন। যা নিয়েও কম উষ্মা নেই আইওসির। ফিফার প্রেসিডেন্ট হওয়ার দরুণ তিনিও আইওসির সদস্য। তা সত্ত্বেও হাজির থাকেননি আইওসির সভায়।
বাখ বলেছেন, ‘দু’বছর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজন করার প্রস্তাব আমরা ফিফার প্রেসিডেন্টের সঙ্গেই আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই মুহূর্তে সেই প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব নয়। কারণ, দু’দিন আগে উনি নিজেই চিন সফর বাতিল করে দিয়েছেন। উনি আসেননি বলেই আমরা এই মুহূর্তে ওই বিষয়টি নিয়ে কোনও ভাবেই আলোচনা করতে চাইছি না।’
বাখের এই মন্তব্যের গুরুত্ব অন্যরকম। স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, ফিফার বিরোধীতার রাস্তাতেই হাঁটবে আইওসি। অন্যান্য খেলার মতো ফুটবলও অলিম্পিক কমিটির তালিকাভুক্ত। আইওসির সম্মতি ছাড়া ফিফার পক্ষে দু’বছর অন্তর বিশ্বকাপ আয়োজন করা সহজ হবে না। বাখের মতো ঘুরিয়ে নয়, সরাসরিই ফিফার ভাবনার বিরোধীতা করছেন আইওসির সদস্যরা। আফ্রিকার জাতীয় অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট মুস্তাফা বেরাফা বলছেন, ‘ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে কিন্তু বিরাট ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে সমস্ত খেলাকেই। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ফুটবলের। ওই একটা ইভেন্টের জন্য অন্য খেলা পিছনে ঠেলে দেওয়ার পক্ষপাতী আমি নই। আইওসি সমস্ত খেলা ও অ্যাথলিটদের মধ্যে একটা সাম্যের চেষ্টা করে। সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ফিফার প্রস্তাবে সায় দিলে কিন্তু ছেলে আর মেয়েদের মধ্যে একটা বিরাট ফারাক তৈরি হবে। অন্যান্য খেলায় সেই প্রভাব মারাত্মক ছাপ ফেলবে।’
আন্তর্জাতিক কুস্তচি সংস্থার প্রেসিডেন্ট নিনাদ লালোভিচ আরও পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ‘এটা বাস্তবায়িত হলে খেলাধুলোর ভারসাম্যটাই নষ্ট হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হবে।’





