PT Usha Birthday: যার সৌজন্যে ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সে ঊষার আলো
বুট জোড়া তুলে রাখার আগে অ্যাথলেটিক্সে অনন্য উচ্চতা ছুঁয়েছেন।
কলকাতা : ভারতীয় অ্যাথলেটিক্স ঊষার আলো দেখেছিল। আজ সোমবার সেই পিটি ঊষার (PT Usha) জন্মদিন। ৫৮ তে পা দিলেন ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সে ‘কুইন অফ ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড’। আটের দশকে ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে সুন্দর মুহূর্ত ছিল পিটি ঊষাকে ট্র্যাকে দেখা। পায়োলি তেভারাপারামপিল ঊষা। কেরালায় কোঝিকোড় জেলার পায়োলিতে জন্ম। গতিতে মাত করেছিলেন। প্রায় দু দশক ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে এবং ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের হৃদয়ে রানীই রয়ে গিয়েছেন।
১৯৮৬ এশিয়ান গেমসে চারটি সোনা সহ পাঁচ পদক জয়। তর্কাতীত ভাবে ভারতের প্রথম স্পোর্টস আইকন পিটি ঊষা। প্রতিটা প্রজন্মের অ্যাথলিটদের কাছে প্রেরণা। তাঁর দুরন্ত গতির জন্যই পায়োলি এক্সপ্রেস বলে ডাকা হত। ঠিক যেমন ক্রিকেটে শোয়েব আখতারকে রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস এবং ভারতীয় টেনিস জুটি লিয়েন্ডার পেজ-মহেশ ভুপতিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ডাকা হত। পিটি উষা সকলের কাছে উদাহরণ।
পায়োলি এক্সপ্রেস প্রথমবার প্রচারের আলোয় এসেছিলেন জুনিয়র স্তরে। ১৯৭৮ সালে কোলামে আন্তরাজ্য ন্যাশনাল মিটে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিষেক ১৯৮০ মস্কো অলিম্পিকে। ১০০ মিটার হিটে পঞ্চম স্থানে শেষ করেন। ১৯৮২ দিল্লিতে এশিয়ান গেমসে ১০০ ও ২০০ মিটারে রুপো। বছরখানেক পর কুয়েতে এশিয়ান ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে ৪০০ মিটারে সোনা জেতেন উষা। এশিয় স্তরে রেকর্ড গড়েছিলেন। ১৯৮৩-৮৯, এশিয়ান ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে ১৩টি সোনার পদক।
মস্কো অলিম্পিকে তার থেকে খুব বেশি প্রত্যাশা ছিল না। প্রথম অলিম্পিকের বাড়তি চাপ ছিল। তবে পরের অলিম্পিকে পদকের কাছ থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়। ১৯৮৪ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে ৪০০ মিটার হার্ডলের সেমিফাইনালে প্রথম হন। ফাইনালে এশিয়ান রেকর্ড গড়েও চতুর্থ। ১৯৬০ সালে কিংবদন্তি মিলখা সিংয়ের পর পিটি উষার চতুর্থ হওয়া, ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে আজীবন আপশোসের জায়গা হয়ে থাকবে। প্রথম ভারতীয় মহিলা অ্যাথলিট হিসেবে অলিম্পিকের ইভেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলেন।
এশিয়ান স্তরে দাপট বজায় ছিল। ১৯৮৬ এশিয়ান গেমস হয় সিওলে। এই টুর্নামেন্ট ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। গোল্ডেন গার্ল প্রকৃত অর্থেই হয়ে উঠেছিলেন। চারটি সোনার পদক এবং একটি রুপো। ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে পাঁচটি পদক একটি টুর্নামেন্টেই। অংশ নেওয়া প্রতিটি ইভেন্টে এশিয়ান রেকর্ড গড়েছিলেন উষা। ১৯৮৫ সালে জাকার্তার অনুষ্ঠিত এশিয়ান ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে পাঁচটি সোনা জিতেছিলেন পায়োলি এক্সপ্রেস।
বুট জোড়া তুলে রাখার আগে অ্যাথলেটিক্সে অনন্য উচ্চতা ছুঁয়েছেন। একঝাঁক পদক, ভারতীয়দের মধ্যে প্রথম। যেমন, অলিম্পিকের ইভেন্টে প্রথম মহিলা হিসেবে ফাইনাল, কণিষ্ঠতম ভারতীয় স্প্রিন্টার (মাত্র ১৬ বছর বয়সে) হিসেবে অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮০, ১৯৮৪ এবং ১৯৮৮, সবমিলিয়ে তিনটি অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৯৬ অলিম্পিকে ৪x১০০ মিটার রিলে-র স্কোয়াডে থাকলেও অংশ নেননি। ক্রীড়াক্ষেত্রে অনন্য অবদানের জন্য পদ্মশ্রী এবং অর্জুন সম্মান পেয়েছেন। কিংবদন্তি এই ভারতীয় অ্যাথলিট নতুন প্রজন্মের অ্যাথলিট তুলে আনার উদ্দেশ্যে কোয়েলান্দিতে উষা স্কুল অফ অ্যাথলেটিক্স চালাচ্ছেন।