Space Internet: মহাকাশ থেকে দুয়ারে ইন্টারনেট, দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে হাই-স্পিড কানেকশন, স্পেস ইন্টারনেট কী?

ডিজিটাল জমানা। দেশের প্রতি প্রান্তেই প্রায় পৌঁছে গিয়েছে ইন্টারনেট। তবুও হাই-স্পিড ইন্টারনেট পেতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় আমাদের! যে সমস্যাটা গ্রাম-মফঃস্বলে আরও বেশি করে প্রকট হয়ে ওঠে। শহর, বিশেষ করে মেট্রোপলিটান শহরে কিন্তু হাই-স্পিড ইন্টারনেট হামেশাই মেলে! কিন্তু গ্রামগঞ্জে তা এখনও বহু দূর কি বাত! আর যত দিন না পর্যন্ত দেশের গ্রাম থেকে মফঃস্বলে ফাইবার বা সেলুলার কানেকশন পাঠানো হচ্ছে, তত দিন হাই-স্পিড ইন্টারনেট নাগালের বাইরেই থেকে যাবে। আর সেখানেই একটা বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে ব্রডব্যান্ড ফ্রম স্পেস (BFS) সার্ভিস।

বিষয়টা আদতে যতটা সহজ মনে হচ্ছে, আদৌ কী ততটা সহজ? এক্কেবারেই না। কারণ, স্পেস ইন্টারনেট বিষয়টাই গুরুগম্ভীর। কী ভাবে এই ব্রডব্যান্ড ফ্রম স্পেস দেশের প্রতিটি কোণে পৌঁছে দেওয়া হবে?

ব্রডব্যান্ড ফ্রম স্পেস (BFS) সার্ভিস কী?

১) একটি হাই-স্পিড ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন, যা গ্রাহকের বাড়িতে বা অফিসে, মহাকাশের স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক (স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড) ব্যবহার করে ইন্টারনেট ট্রাফিক পাঠিয়ে দেওয়ার পরিষেবার নাম ব্রডব্যান্ড ফ্রম স্পেস বা BFS। ২) স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ডেটার স্পিড ৩০০ Mbps-এরও বেশি হতে পারে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে সেই স্পিড ১০০ Mbps-এর আশপাশেই ঘোরাফেরা করবে। ৩) একটি স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কে রয়েছে জিওস্টেশনারি (GEO) বা লো-আর্থ অরবিট (LEO) স্যাটেলাইট। প্রসঙ্গত, কোনও স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক অপারেশন হল আদতে একটি আর্থ স্টেশন গেটওয়ে, যা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে অবস্থিত। ৪) স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ককে নেটে লিঙ্ক করার কাজটি করে গেটওয়ে। ৫) এই বিএফএস পরিষেবার সুবিধা উপভোগ করতে গ্রাহকের একটি ডিভাইসের প্রয়োজন হবে, যার পোশাকি নাম ইউজার অ্যাকসেস টার্মিনাল (UT) এবং একটি অ্যান্টেনা, যা স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক কানেক্ট করবে।

ভারতে ব্রডব্যান্ড ফ্রম স্পে পরিষেবা কারা নিয়ে আসছে?

১) ভারতী এয়ারটেলের ওয়ানওয়েব এবং এলন মাস্কের স্পেএক্স ভারতে স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড লঞ্চ করবে। লিও স্যাটেলাইটের মাধ্যমেই ভারতে ২০২২ সালে পৌঁছে যাবে এই ব্রডব্যান্ড পরিষেবা। পাশাপাশি কানাডার টেলস্যাট এবং অ্যামাজন-এর প্রজেক্ট কুইপার-ও ভারতে এই পরিষেবা নিয়ে হাজির হবে। ২) এই সংস্থাগুলি ভারতে বিটুবি (বিজ়নেস টু বিজ়নেস) মডেল নিয়ে কাজ করতে চলেছে। আর গ্রাহকের এক্কেবারে দুয়ারে স্পেস ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে দেশের একাধিক টেলিকম সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছে এই পরিষেবা প্রদানকারী। ৩) আমেরিকার সংস্থা হিউজেস ভারতে জিও স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক তৈরি করতে ৫০০ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে চলেছে।

চ্যালেঞ্জ কী-কী?

স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড পরিষেবার খরচ অনেকটাই। ২০ মার্কিন ডলার বা ভারতীয় মূল্যে প্রায় ১,৫০০ টাকা খরচ হতে পারে ১জিবি ইন্টারনেটের জন্য। কেন এত খরচা?

* স্যাটকম প্লেয়াররা কখনই সরাসরি বিদেশি স্যাটেলাইট ক্যাপাসিটি লিজ় নিতে পারে না। ভায়া হিসেবে তাদের কাজ করতে হয়। আর সেই ভায়া হিসেবে কাজ করতে গিয়েই খরচটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, লিজ়িংয়ের খরচা বিশ্বব্যাপী গড় খরচের প্রায় ১০ গুণ বেশি। * ইউটিএস অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ার ফলে হাই-থ্রুপুট স্যাটেলাইটের নাগাল পাওয়া যায় না, যার বেস মডেলের জন্যই খরচ হতে পারে অন্তত ১০০০ মার্কিন ডলার। * এখন পলিসি যদি পরিবর্তন করা যায় এবং ইউটি প্রাইস যদি ক্র্যাশ করে, তাহলে একমাত্র তখনই স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ডের প্রতি জিবি-র দাম ১০০ টাকা হতে পারে। * ইউজার ভলিউমও একলাফে অনেকটাই বেড়ে যাওয়া উচিৎ। পাশাপাশি লিও স্যাটেলাইট প্রযুক্তিরও উন্নতি হওয়া প্রয়োজন, যাতে স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ডের খরচ একটু কম হয়।

পলিসি ঢেলে সাজানো জরুরি

১) দেশের নতুন স্পেসকম পলিসি চালু হতে চলেছে ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে। ২) লিও স্যাটেলাইট অপারেটরদের জন্য লাইসেন্সিং নিয়ম সংক্রান্ত স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তা। ৩) ২৮ গিগাহার্টজ স্যাটেলাইট স্পেকট্রামের কোয়ান্টাম ৫জি পরিষেবার জন্যও ব্লক করার বিষয়ে স্বচ্ছতা দরকার। ৪) স্যাটেলাইট ইউটিএস-এর জন্য স্পেকট্রাম ব্র্যান্ড ও স্যাটেলাইট গেটওয়ের ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা আবশ্যিক।

বাজার

১) ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতের স্যাটেলাইট পরিষেবার মার্কেট ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি হতে চলেছে এবং CAGR হতে চলেছে ৪.৩ শতাংশ। ২) বর্তমানে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড রেভিনিউ-র সুযোগ তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: প্লে স্টোরে ফের জোকার ভাইরাসের আগমন! এই ১৪ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে লুকিয়ে বড়সড় ক্ষতির পরিকল্পনা

আরও পড়ুন: এই ৯ স্মার্টফোনে লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেম আপডেট পাঠাচ্ছে শিয়াওমি, তালিকায় আপনার ফোনটিও?

আরও পড়ুন: ভুল করে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ডিলিট হয়ে গেল? ফিরিয়ে নিয়ে আসুন এই পদ্ধতিতে