Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

NASA: মহাকাশে প্রথম চাষ করা লঙ্কায় কামড়, পিছনে নাসার আরও বড় ‘মিশন’

ঝালপ্রেমী বাঙালি যেমন বেলডাঙার লঙ্কা খোঁজেন, তেমনই নিউ মেক্সিকো থেকে নাসা খুঁজে বের করেছে হ্যাচ চিলি পিপার। ৩ জুন মহাকাশে পাঠানো হয়। ছড়ানো হয় ৪৮টি বীজ। ১২ জুলাই থেকে শুরু পরীক্ষা-নিরীক্ষা।

NASA: মহাকাশে প্রথম চাষ করা লঙ্কায় কামড়, পিছনে নাসার আরও বড় 'মিশন'
ছবিটি ইন্সটাগ্রাম থেকে নেওয়া
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 31, 2021 | 9:12 AM

কমলেশ চৌধুরী

মহাকাশে বসেই লঙ্কায় কামড়। না, ঝুড়ি ভরে পৃথিবী থেকে লঙ্কা পাঠানো হয়নি। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে চাষ করা লঙ্কাতেই রসনাতৃপ্তি মহাকাশচারীদের। এবং শুধু জিভে স্বাদ যোগ করা নয়, মহাকাশের গবেষণাতেও নতুন মাইলফলক। এই প্রথম লঙ্কার সফল ফলন মহাকাশে। রান্নাবান্নাও সারা।

ফ্রাইডে ফিস্টিং। শুক্রবারের ভূরিভোজ। জোড়া শব্দে টুইট করেছেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের বাসিন্দা, আমেরিকার অ্যাস্ট্রোনট মেগান ম্যাকআর্থার। তাঁর সঙ্গে এই মুহূর্তে মহাকাশে রয়েছেন আরও ৬ মহাকাশচারী। সবার জন্য শুক্রবারের রেসিপি, মেক্সিকান ফুড ট্যাকো। রান্নাবান্না সেরে মেগান লিখছেন, মহাকাশে বানানো এটাই সেরা ট্যাকো। স্পেস স্টেশনে ভাসছে ট্যাকো, ভিতরে সবুজ-লাল লঙ্কার টুকরো, হাসিমুখে সেই ছবিও দিয়েছেন মেগান।

তবে রান্না বা রসনাতৃপ্তিতেই ‘লঙ্কাকাণ্ড’ শেষ নয়। গবেষণার জন্য নিয়ম করে নমুনা নেওয়া হয়েছে। কিছু নমুনা পাঠানো হবে পৃথিবীতেও। আসলে এর পিছনে আরও বড় ‘মিশন’ নাসার।

কেন এত গবেষণা?

নাসা বলছে, স্পেস স্টেশনে মূলত প্যাকেজড ফুডই পাঠানো হয়। রি-সাপ্লাই মিশনে পাঠানো হয় কিছু টাটকা খাবারও। কিন্তু এ বার নাসার লক্ষ্য, চাঁদ বা মঙ্গলে মানুষ পাঠানো। যেমন, ২০২৪ সালেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে আর্তেমিস অভিযানের পরিকল্পনা নাসার। এই ধরনের মিশন শুধুমাত্র প্যাকেজড ফুডে চলবে না। নির্দিষ্ট সময় অন্তর রি-সাপ্লাই মিশন পাঠানোও সম্ভব নয়। তাই আগে থেকেই মহাকাশচারীদের খাবারে আত্মনির্ভর করার পরিকল্পনা। সেই কারণে মহাকাশে চাষে জোর। ২০১৫ সাল থেকে গবেষণা চলছে। এ পর্যন্ত ১০ ধরনের সব্জিও চাষ হয়েছে, হয়েছে মহাকাশচারীদের উদরপূর্তিও। সেই তালিকাতেই যুক্ত হল লঙ্কা।

লঙ্কা কেন? নাসার যুক্তি, লঙ্কায় একাধিক পুষ্টিগুণ রয়েছে। ভিটামিন সি-র বড় উত্‍স।

মাইক্রোগ্র্যাভিটি অর্থাত্‍ প্রায় মাধ্যাকর্ষণ না-থাকা অঞ্চলে চাষে ঝামেলা অনেক। কিন্তু লঙ্কাচাষ তুলনায় সহজ। লঙ্কাগাছ পরাগমিলনে আত্মনির্ভরও। ফলে ফল উত্‍পাদন হয় সহজে। রান্নায় স্বাদ যোগ করে তো বটেই, সেই সঙ্গে জীবাণুর ছোঁয়াচও কম। ফলে মহাকাশচারীদের মেনুতে নিশ্চিন্তে ঢুকেও পড়তে পারে।

যদিও চাষ কম ঝক্কির নয়।

প্রথমত, দু’বছর ধরে খোঁজাখুঁজি করে মহাকাশে চাষের জন্য উপযুক্ত লঙ্কা খুঁজে বের করে নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার। গোটা দুনিয়া থেকে ১২ ধরনের লঙ্কার মধ্যে ঝাড়াই-বাছাই চলে। ঝালপ্রেমী বাঙালি যেমন বেলডাঙার লঙ্কা খোঁজেন, তেমনই নিউ মেক্সিকো থেকে নাসা খুঁজে বের করেছে হ্যাচ চিলি পিপার। ৩ জুন মহাকাশে পাঠানো হয়। ছড়ানো হয় ৪৮টি বীজ। ১২ জুলাই থেকে শুরু পরীক্ষা-নিরীক্ষা। বেসবল মাঠে ব্যবহৃত বিশেষ ধরনের কাদায় জল দিয়ে শুরু হয় পরিচর্যা। এর পর ফুল ফোটা থেকে লঙ্কার বেড়ে ওঠা, সব আপডেটই দিয়েছেন মহাকাশচারীরা। শুক্রবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের সরকারি হ্যান্ডেল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রথম ফলন ‘ঘরে’ তোলা হয়েছে। গুরুদায়িত্বে ছিলেন মার্কিন নভোচর মার্ক হেই। তার পরই মেগানের হাতমকশো। ফ্রাইডে ফিস্টিং। ঝাল ঝাল সমাপয়েত্‍!

চাঁদ বা মঙ্গলেও কি পৌঁছবে মরিচ? ভিনগ্রহ-উপগ্রহেও ‘লঙ্কাকাণ্ড’-এর অপেক্ষা।

আরও পড়ুন: আকাশগঙ্গা ছায়াপথের বাইরে প্রথম গ্রহের সন্ধান পেয়েছে নাসা!