SpaceX Rocket Crash: ৭ বছর মহাকাশে ভেসে থাকার পর চাঁদে আছড়ে পড়তে চলেছে স্পেসএক্স রকেট
SpaceX Collision With Moon Details: জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিল গ্রে জানিয়েছেন, রকেটের দ্বিতীয় পর্যায় বা বুস্টার, গাণিতিক ভাবে একটি বিশৃঙ্খল কক্ষপথে ভেসে বেড়াতে থাকে। তাঁরই গাণিতিক বিশ্লেষণ থেকে এই রকেট, যা বিস্ফোরণের পরে স্পেসজাঙ্কে পরিণত হবে, তার ধ্বংস হওয়ার দিনক্ষণ সম্পর্কে জানা গিয়েছে।
সাত বছর মহাকাশে চরকিপাক কাটার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চাঁদে আছড়ে পড়তে চলেছে এলন মাস্কের স্পেসএক্স (SpaceX)। চাঁদের কাছাকাছি পোঁছতে আরও এক মাস সময় লেগে যেত। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে চাঁদের উপর বিধ্বস্ত হতে চলেছে রকেটটি (Rocket)। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, স্পেসএক্স-এর একটি বিস্ফোরিত এবং পরিত্যক্ত অংশ চাঁদের উপরে আছড়ে পড়বে। চাঁদের পৃষ্ঠে মহাকাশচারীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য় মাস্কের রকেট কোম্পানিটিকে স্পেশিপ প্রদান করতে বলেছিল নাসা। কিন্তু তার লক্ষ্যে নেমেও সফল হয়ে ফিরতে পারল না স্পেসক্রাফ্ট। সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণ এবং গণনার উপরে ভিত্তি করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, চলতি বছরের ৪ মার্চ চাঁদে বিধ্বস্ত হবে এলন মাস্কের (Elon Musk) রকেটটি।
২০১৫ সালে নাসার একটি উপগ্রহ, ডিপ স্পেস ক্লাইমেট অবজ়ারভেটরিকে কক্ষপথে স্থাপন করার জন্য উৎক্ষেপিত হয় রকেটটি। সংবাদমাধ্যম এএফপি-র কাছে জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিল গ্রে জানিয়েছেন, রকেটের দ্বিতীয় পর্যায় বা বুস্টার, গাণিতিক ভাবে একটি বিশৃঙ্খল কক্ষপথে ভেসে বেড়াতে থাকে। তাঁরই গাণিতিক বিশ্লেষণ থেকে এই রকেট, যা বিস্ফোরণের পরে স্পেসজাঙ্কে পরিণত হবে, তার ধ্বংস হওয়ার দিনক্ষণ সম্পর্কে জানা গিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই বুস্টার জানুয়ারি মাসেই চাঁদের খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল। তার পরই অবস্থান কক্ষপথ পরিবর্তন করে।
মহাকাশ পর্যবেক্ষকরা দাবি করছেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় চার মেট্রিক টন ‘মহাকাশ ধ্বংসাবশেষ’ বা স্পেস জাঙ্ক প্রায় 2.58 কিলোমিটার / ঘন্টা বেগে চাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষ করবে। বিল গ্রে পরিষ্কার হিসেব কষে বলছেন, ৪ মার্চ নিরক্ষরেখার কাছে চাঁদ থেকে অনেক দূরে আঘাত হানতে চলেছে ফ্যালকন ৯- এর উপরের স্তরটি। এদিকে অন্য একটি ব্লগপোস্টে তথ্য বিশ্লেষক ডক্টর মেইল লিখছেন, “৫ জানুয়ারি রকেটটি একটি চন্দ্র কক্ষপথ তৈরি করেছে এবং ৪ মার্চ বড়সড় কোনও প্রভাব ফেলতে চলেছে।”
বিল গ্রে, পৃথিবীর কাছাকাছি বস্তু, গ্রহাণু, ধূমকেতু ট্র্যাক করার জন্য গাণিতিক বিশ্লেষণ করে থাকেন। নাসার স্পেস অবজ়ারভেশন এহং প্লুটো প্রজেক্টে কাজ করেন। গাণিতিক সফ্টওয়্যারের সাহায্যে মহাকাশের গ্রহাণু এবং অন্যান্য বস্তুর গতিপথ গণনা করা হয় সেখানে। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ঘণ্টায় ৫ হাজার ৫০০ মাইল বা প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার বেগে চাঁদের অন্ধকার দিকে আছড়ে পড়বে রকেটটি।
রকেটের দ্বিতীয় পর্যায় বা বুস্টারের পর্যবেক্ষণে কয়েকজন অপেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের নিয়ে কাজ করেছিলেন গ্রে। তাঁর কথায়,”রকেটে সূর্যালোকের পুশিং এবং ঘূর্ণন সময় পরিমাপ করার ক্ষেত্রে অস্পষ্টতার কারণে, রকেটের প্রভাবের সঠিক অবস্থানটি পরিষ্কার নয়, যা এর পরেও কক্ষপথ কিছুটা পরিবর্তনও করতে পারে। যদিও প্রভাব তেমন কিছুই হবে না বা হলেও খুব ছোট হবে। তবে যাই হোক, সেটা ৪ মার্চের মধ্যেই হবে। চাঁদের বেশির ভাগ অংশই তার পথে রয়েছে এবং কাছাকাছি থাকলেও, প্রভাবটি অমাবস্যার দুই দিন পরে ঘটে।”
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোনাথন ম্যাকডওয়েল লিখেছেন যে, ৪ মার্চ বড় প্রভাব ফেলতে পারে স্পেসএক্স, তবে তেমন বড় কিছু ব্যাপার নয়। যদিও, মহাকাশ পর্যবেক্ষকরা বিশ্বাস করেন, প্রভাব মূল্যবান ডেটা সরবরাহ করতে পারে। এদিকে আবহাওয়াবিদ এরিক বার্গার সম্প্রতি একটি ব্লগপোস্টে লিখছেন, “আমি আশা করছি, সমগ্র ইভেন্টটি রকেটের প্রভাবে নির্গত ভূগর্ভস্থ বস্তুর ট্র্যাকিং করার অনুমতি দেবে। আবর্জনা পৃথিবীতে আঘাত করলে কী হতে পারে তা আমাদের জানা আছে। এর থেকে বেশি আর কিছু হওয়ার নেই।”
আরও পড়ুন: পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে গন্তব্যে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ, প্রকাশ্যে প্রথম ছবি
আরও পড়ুন: এবার মহাকাশে স্থাপন করা হচ্ছে ফিল্ম স্টুডিয়ো, সঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে স্পোর্টস এরিনাও…
আরও পড়ুন: মহাকাশচারীদের জন্য টেকসই খাবারের আইডিয়ার খোঁজে NASA, পুরস্কারমূল্য ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার