Students Come home: মুড়ি-মুড়কির মত পড়ছে বোমা, মিসাইল, দেশে ফিরে বিভীষিকার অভিজ্ঞতার কথা বললেন বাঁকুড়ার সৌমাল্য

Bankura: চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ইউক্রেন পাড়ি দিয়েছিল বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহির মেধাবী পড়ুয়া সৌমাল্য মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি তাঁর স্বপ্ন ওলোটপালোট করে দিয়েছে।

Students Come home: মুড়ি-মুড়কির মত পড়ছে বোমা, মিসাইল, দেশে ফিরে বিভীষিকার অভিজ্ঞতার কথা বললেন বাঁকুড়ার সৌমাল্য
সৌমাল্য মুখার্জী (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 06, 2022 | 2:01 PM

বাঁকুড়া: উৎকন্ঠার মধ্যে এতদিন কেটেছে দিন। তবে ধীরে-ধীরে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন ইউক্রেনে আটকে থাকা পড়ুয়ারা। এখনও অনেকেই আটকে আছেন সেখানে। ভারত সরকারের তরফে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। তবে যাঁরা বাড়িতে ফিরেছেন স্বস্তি এসেছে তাঁদের ঘরে। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ইউক্রেন পাড়ি দিয়েছিল বাঁকুড়ার কেন্দুয়াডিহির মেধাবী পড়ুয়া সৌমাল্য মুখোপাধ্যায়। কিন্তু ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি তাঁর স্বপ্ন ওলোটপালোট করে দিয়েছে। দিনের পর দিন বাঙ্কারে লুকিয়ে থেকে অবশেষে বাড়িতে ফিরেছেন সৌমাল্য। প্রাণ বাঁচিয়ে যে ফিরতে পেরেছেন এর জন্যই ধন্যবাদ দিচ্ছেন ভগবানকে। তবে এখন অন্য আশঙ্কা। ঘরে তো ফিরেছেন কিন্তু আদৌ চিকিৎসক হতে পারবেন? একরাশ উৎকন্ঠা।

বছর দুয়েক আগে বাঁকুড়ার প্রণবানন্দ পল্লী থেকে ইউক্রেনের খারকিভ শহরে ডাক্তারি পড়তে যায় সৌমাল্য মুখোপাধ্যায়। বাবা উত্তম মুখোপাধ্যায় স্থানীয় ভগবানপুর হাইস্কুলের শিক্ষক। মা সোমা মুখোপাধ্যায় গৃহবধূ। খারকিভের ভিয়েন খারাজিন খারকিভ ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটিতে দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্র তিনি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ঘুম ভেঙেছিল মিসাইল বিস্ফোরণের শব্দে। তারপর মুহুর্মুহু বোমা, গুলি ও মিসাইল বর্ষণ হতে থাকে হোস্টেলের আশপাশের এলাকাতে। যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি সেদিনই স্থানীয় সুপার মার্কেটে দৌড়ায় সৌমাল্য। যতটা সম্ভব খাদ্য সামগ্রী ও জল সংগ্রহ করে হোস্টেলে ফিরেছিল। ওই দিন সন্ধ্যাতেই হোস্টেল কর্তৃপক্ষ ভারতীয় হোস্টেলের বেসমেন্টের বাঙ্কারে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর একটানা ছ’দিন কেটেছিল সেখানেই।

ধীরে-ধীরে ফুরিয়ে এসেছিল সঞ্চিত খাবার। ভাঁড়ারে পড়েছিল টান। কতদিন বাঙ্কারে লুকিয়ে থাকতে হবে জানতেনও না। তাহলে খাবেন কী? যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে বুঝতে পেরে শেষমেশ গত ১ মার্চ ৯ কিলোমিটার দূরের খারকিভ স্টেশনের উদ্যেশ্যে হেঁটেই বেরিয়ে পড়েন সৌমাল্য সহ অন্যান্য পড়ুয়ারা। স্টেশনে পৌঁছানোর পথেই আশপাশে একাধিক বিস্ফোরণ চোখের সামনে দেখে মনে হচ্ছিল আর কোনওদিন ফেরা হবে না নিজের দেশে।

তবে সঙ্গ দিয়েছিল কপাল। শেষ অবধি নিরাপদে স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকে ট্রেন ধরে পোল্যান্ড সীমানায় থাকা লাবিব শহরে পৌঁছায় সৌমাল্য। সেখান থেকে সীমানা পেরিয়ে পোল্যাণ্ডের মাটিতে পা রেখে কিছুটা স্বস্তি মেলে।

সৌমাল্যর দাবি, ইউক্রেনে থাকা ভারতীয় দূতাবাস তাদের কোনও রকম সহযোগিতা না করলেও পোল্যান্ডে পৌঁছানোর পর থেকে পড়ুয়াদের নিজের দেশে পাঠানোর ব্যাপারে সমস্ত দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয় তারা। এরপর বিমানে দিল্লি, কলকাতা হয়ে গতকাল রাতে বাঁকুড়ায় নিজের বাড়িতে ফের সৌমাল্য। আর কোনও দিন ইউক্রেনে ফেরা হবে কিনা জানেনা সে। যদি না হয় তাহলে তাঁর পড়াশোনার ভবিষ্যত কী হবে?

আরও পড়ুন: Students Come home: ‘যুদ্ধ শেষে আবার যেতে চাই ইউক্রেনে’ বাড়ি ফিরেও স্বস্তিতে নেই আলিপুরদুয়ারের পড়ুয়া