করোনার জেরে নেই ‘কাস্টমার’, পেটে টান, যৌনকর্মীদের পাশে দাঁড়াল ‘শ্রদ্ধা’

জলপাইগুড়ি বাজারের এক ধারে রাত বাড়লেই বদলে যায় ছবি। ভিড় জমে এলাকায়। ঘরে ঘরে তখন হাসি-উৎসবের মেজাজ। রাতই লক্ষ্মী। কিন্তু, গত একবছর ধরে করোনার জের। প্রায় বন্ধ হতে বসেছে জীবিকা।

করোনার জেরে নেই 'কাস্টমার', পেটে টান, যৌনকর্মীদের পাশে দাঁড়াল 'শ্রদ্ধা'
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 26, 2021 | 9:41 PM

জলপাইগুড়ি: করোনা মহামারীর (Corona) জেরে পেশায় টান। পেটেও। নেই ‘কাস্টমার’। সংখ্যায় মেয়ে বেশি। আয় কম। উপরি জুটেছে লকডাউন। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন যে দুবেলা খাওয়াও জুটছে না। সমাজের লালবৃত্তের সেই ‘নীলপরীদের’ পাশে দাঁড়াল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘শ্রদ্ধা’। বুধবার, প্রায় শতাধিক যৌনকর্মীর (Prostitute) হাতে খাবার তুলে দিলেন ‘শ্রদ্ধার’ কর্মীরা।

জলপাইগুড়ি বাজারের এক ধারে রাত বাড়লেই বদলে যায় ছবি। ভিড় জমে এলাকায়। ঘরে ঘরে তখন হাসি-উৎসবের মেজাজ। রাতই লক্ষ্মী। কিন্তু, গত একবছর ধরে করোনার জের। প্রায় বন্ধ হতে বসেছে জীবিকা। ২০২০-র শেষ থেকে ধীরে ধীরে সব চালু হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের বেসামাল অবস্থা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই যৌনকর্মী (Prostitute) বলেন, “আমাদের অবস্থা শোচনীয়। অনেকে না খেয়ে মরছেন। করোনার ভয়ে কাস্টমার নেই। আগামীতে কীভাবে চলব জানি না।” এই পরিস্থিতিতে, যৌনকর্মীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ‘শ্রদ্ধা’। বুধবার, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘শ্রদ্ধার’ তরফে চাল-ডাল-আলু-পেঁয়াজ ও কিছু শুকনো খাবার তুলে দেওয়া হয় যৌনকর্মীদের হাতে। প্রায় শতাধিক যৌনকর্মী এদিন এই কর্মসূচির তালিকাভুক্ত হন। কোভিড বিধি মেনেই তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় খাদ্যসামগ্রী। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘শ্রদ্ধা’ -র কর্ণধার সুমন বসু রায় বলেন, “আমরা বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কাজ করে থাকি। বর্তমানে যৌনকর্মীদের অবস্থা খারাপ। সেই কথা মনে করেই এই সামান্য সাহায্য করলাম আমরা।”

শুধু, জলপাইগুড়ি নয়, বাংলার সর্বত্র যৌনকর্মীদের অবস্থা শোচনীয়। সম্প্রতি, শহর কলকাতার বিখ্যাত যৌনপল্লির এক কর্মী টিভি নাইন বাংলাকে সাক্ষাৎকারে বলেন, ”লকডাউন ও করোনার জেরে কাস্টমার কমে গিয়েছে। মেয়ে বেড়ে গিয়েছে। কাজ না পেয়ে অনেকে যেমন এই পেশায় আসছে, তেমনই সংক্রমণের ভয়ে লোক আসছে কম। চরম আতান্তরে আমরা।” প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই, যৌনকর্মীদের সংগঠন দুর্বারের (Durbar) প্রতিষ্ঠাতা স্মরজিৎ জানা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার যৌনকর্মীদের জনকল্যাণমূলক কাজের আওতায় আনা থেকে শুরু করে প্রাথমিক শিক্ষা-সচেতনতার পাঠ দেওয়া সব ব্যবস্থাই বরাবর করে এসেছে দুর্বার। কিন্তু, সেই সুবিধাও আজ ম্লান। জলপাইগুড়ির প্রত্যন্ত এলাকার এই যৌনকর্মীরা তাই দিন গুনছেন। তাঁদের আশা, ফের ফিরে আসবে সেইসব ‘সোনালি দিন’।

আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন নিতে হুড়োহুড়ি, কোভিডবিধির জলাঞ্জলি! টিকাকরণ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ব্যবসায়ীদের