A student selling phuchka: একদিকে পড়াশুনা, অন্যদিকে সংসার- বিশ্বভারতীর সামনে ফুচকা বিক্রি করছে কবিতা
Birbhum: বিশ্বভারতীর প্রথম গেটের সামনে ফুচকা বিক্রি করে সে। এখন সে বেশ এক পাকা-পোক্ত ফুচকা ব্যবসায়ী।
বীরভূম: ওঁদের গল্পটা শুরু হয়েছিল গতবছর লকডাউনের সময় থেকে। তখনও সংক্রমণ প্রায় শীর্ষে। চারিদিক থেকে খবর আসছে করোনার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে। এই অবস্থায় পরিস্থিতিকে নাগালে আনতে সরকার সিদ্ধান্ত নিল লকডাউনের। আর সঙ্গে-সঙ্গে স্কুল, কলেজ, দোকান-পাঠ বন্ধ হতে শুরু করল। মাথায় হাত পড়ল খেটে খাওয়া মানুষগুলো। রোজগারের পথ তো বন্ধ সংসার চলবে কী করে? এই রকমই এক গল্প বীরভূমের ছোট্ট একটি মেয়ের। সংসারের হাল ধরতে বোলপুরের রাস্তায় বিক্রি শুরু করল ফুচকা। ওই যে বলে না ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। এত প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়াশোনা কিন্তু ছাড়েনি সে।
বীরভূমের বোলপুরের বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ নবম শ্রেণীর ছাত্রী কবিতা কুমারী। তার বাবা কপিল দেব শাহ। বোলপুরের বাঁধগোড়া এলাকায় বাড়ি তাঁদের। কবিতার বাবা দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসের প্রথম গেটের সামনে ফুচকা বিক্রি করতেন। এই ফুচকা বিক্রি করেই চলে তাঁদের সংসার। পাঁচজনের সংসারে বিপর্যয় নামে গত বছরের লকডাউন চলাকালীন। লকডাউনের কারণে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল ছোটখাটো ব্যবসায়ীদের। সমস্যায় পড়েছিলেন কপিল দেবও।
তখন ব্যবসা বদলে বাড়ি-বাড়ি দুধ বিক্রি করতেন তিনি। তবে বেশিদিন করতে পারেননি। কিছুদিন করার পরেই বোলপুরের চৌরাস্তা এলাকায় একটি টোটো চালকের সঙ্গে পথদুর্ঘটনায় তাঁর হাত ভেঙে যায়। হাত ভেঙে যাওয়ার কারণে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার বেশি খরচা করে বসাতে হয় হাতের প্লেট। যদিও কোনও ভাবে ধার বাকি করে সেই টাকা জোগাড় করে পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু এরপরে আর ফুচকা বিক্রি করতে পারেননি কপিল দেব। এরপর নতুন করে করোনার তৃতীয় ঢেউ। যার জেরে আংশিক দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বোলপুর পৌরসভা। ফলে আরও বেশি সমস্যায় পড়ে এই পরিবার।
এইসব দেখেই বাবাকে সাহায্য করতে শুরু করে কপিল দেবের মেয়ে কবিতা কুমারী। ছোট থেকে এই বাড়িতে ফুচকা তৈরি করতে দেখত সে। কিন্তু কখনো মেয়েকে ফুচকা বিক্রি করতে হবে এমনটা পরিবারের লোকেরা ভাবেননি। এরপর গত দেড় মাস ধরে পরিবারের হাল ধরতে বিশ্বভারতীর প্রথম গেটের সামনেই ফুচকা বিক্রি করছে ক্লাস নবম শ্রেণীর ছাত্রী কবিতা কুমারী । এখন সে বেশ এক পাকা-পোক্ত ফুচকা ব্যবসায়ী।
তবে এতকিছুর পরেও পড়াশোনা বন্ধ হয়নি কবিতার। এই বিষয়ে কবিতা বলে, ” করোনা ভাইরাসের কারণে অনলাইনে পড়াশোনা চলছে। আমিও অনলাইনে পড়াশোনা করছি। মাঝেমধ্যে টিউশনেও গিয়েছি। আগামী বছর আমার মাধ্যমিক পরীক্ষা। সে কারণেই এই ফুচকা বিক্রি মধ্যেই আমি যতটা পারছি পড়াশুনায় সময় দিচ্ছি।” পরিবারের তরফ থেকে জানতে পারা গিয়েছে স্কুলের তরফেও ছোট্ট মেয়েটিকে সাহায্য করা হবে আর্থিক ভাবে।
আরও পড়ুন: Rakesh Tikait on vote: পাঁচ রাজ্যের ভোটে কাদের সমর্থন করবে কৃষক সংগঠনগুলি? স্পষ্ট উত্তর টিকাইতের