শান্তিনিকেতনে জারি অশান্তি, আদালতের নির্দেশের পরেও যে যার অবস্থানে অনড়!

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University)-তে চলা পড়ুয়াদের আন্দোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।

শান্তিনিকেতনে জারি অশান্তি, আদালতের নির্দেশের পরেও যে যার অবস্থানে অনড়!
এখনও অবস্থানে অনড় পড়ুয়ারা। ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 09, 2021 | 2:39 PM

বীরভূম: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University)-তে চলা পড়ুয়াদের আন্দোলন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আদালতের নির্দেশের পরও এদিন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাসভবনের ৫০ মিটার দূরত্ব থেকে সরল না অবস্থান মঞ্চ। শুক্রবার দেখা গেল বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা অবস্থান মঞ্চে বসে আছেন। অন্যদিকে আদালতের নির্দেশের পরও পঠন-পাঠন শুরু করতে পারলেন না বহিষ্কার হওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা। তাঁদের কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কিছুই জানানো হয়নি বলে অভিযোগ বহিষ্কৃত পড়ুয়াদের।

উল্লেখ্য, বুধবার কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, এই বহিষ্কার হওয়ার তিন ছাত্রছাত্রীকে পঠন-পাঠন শুরু করার অনুমতি দিতে হবে। বহিষ্কৃত পড়ুয়াদের লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করে আদালত। এমনকি তাঁদের বহিষ্কারেও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি যে ছাত্রদের সঙ্গে যা হয়েছে, সেটা ঠিক হয়নি। কিন্তু এটাও ঠিক হচ্ছে না। আমি ছাত্রদের সাসপেনশন তুলে দিতে বলছি। কিন্তু কোনও বাইরের লোক আসবে না। ছাত্ররা আন্দোলন বন্ধ করবে। কোনও রাজনৈতিক দলের নাক গলানো চলবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত অনেক বেশি শাস্তি।’অন্যদিকে, একইসঙ্গে বিশ্বভারতীতে চলা পড়ুয়াদের অবস্থান নিয়েও বিশেষ নির্দেশ দেয় আদালত। অবিলম্বে তাদের অবস্থান মঞ্চ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু শুক্রবার কোনও পক্ষকেই সেই নির্দেশ মানতে দেখা গেল না। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ থেকে আন্দোলনকারী পড়ুয়া, দুই পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন। আন্দোলনকারীদের দেখা গেল উপাচার্যের বাড়ির সামনে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে বিশ্বভারতী এখনও নিজেদের আগের অবস্থানে রয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকেও দেখা গেল যে অবস্থান মঞ্চ যেখানে ছিল সেখানেই রয়েছে। অন্যদিকে পঠন-পাঠন শুরু করতে পারল না ছাত্রছাত্রীরা। বহিস্কৃত ছাত্র সোমনাথ সৌ-এর দাবি, কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তাঁদের এখনও অবদি কিছুই জানানো হয়নি। তিনি বলেন, “বহিষ্কার হওয়ার কারণে আমরা নতুন সেমিস্টারে ভর্তি হতে পারিনি। ফলে আমাদের যে দু’বছর নষ্ট হল, তার ক্ষতিপূরণ চাই। আমরা কোর্টের অর্ডার মেনে চলব। কিন্তু আমরা অপেক্ষা করছি যে, কতক্ষণে কর্তৃপক্ষ আমাদের পঠন-পাঠন শুরু করার নির্দেশ দেন।”

বহিষ্কৃত ছাত্র সোমনাথ সৌ ও ফাল্গুনী পানের দাবি, আদালতের নির্দেশে মোতাবেক বিশ্বভারতীর প্রক্টরের কাছে ই-মেইল মারফত পঠন-পাঠন শুরু করার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া তাঁরা পাননি। অন্যদিকে আজ বিশ্বভারতীর অবস্থান মঞ্চের সামনে, ফ্যাসিস্ট বিরোধী নাটকের মাধ্যমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা যায় পড়ুয়াদের। নাটক প্রদর্শনের পর পথচলতি মানুষদের দেওয়া টাকা অবস্থান মঞ্চে বিক্ষোভকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এক কথায় বলা যেতে পারে, আদালতের রায়ের পর এখনো স্বাভাবিক হল না বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি।

আরও পড়ুন: ‘যেভাবে রবীন্দ্রনাথকে মুছে দিতে চাইছেন, ওনার শাস্তি পাওয়া উচিত,’ ফের বিদ্যুৎকে নিশানা কেষ্টর