AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Patiram: মেয়ে হয়েছে বলে ‘পালানো’ নয়, হাসপাতালের আকাশছোঁয়া বিল মেটাতেই ভিনরাজ্যে কাজে গিয়েছিলেন অসহায় স্বামী

South Dinajpur: গতকাল খবরে এসেছিল মেয়ে হয়েছে বলে পালিয়েছেন ওই মহিলার স্বামী। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলে গেল গল্প

Patiram: মেয়ে হয়েছে বলে 'পালানো' নয়, হাসপাতালের আকাশছোঁয়া বিল মেটাতেই ভিনরাজ্যে কাজে গিয়েছিলেন অসহায় স্বামী
পূজা মার্ডি (নিজস্ব ছবি)
| Edited By: | Updated on: Dec 04, 2021 | 7:10 PM
Share

পতিরাম: গতকাল খবরে প্রকাশ হয়েছিল মেয়ে হয়েছে বলে মালদার (Malda) একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ত্রী ও সন্তানকে ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছেন তাঁর স্বামী। যার জেরে নিন্দায় সরব হয়েছিলেন প্রত্যেকে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বেরিয়ে এল অন্য গল্প। মেয়ে হওয়ার জন্য স্ত্রীকে মালদার বেসরকারি নার্সিংহোমে ফেলে যায়নি স্বামী। বরং নার্সিংহোমের আকাশছোঁয়া বিল মেটানোর জন্য স্বামী দাদনে বাইরে কাজ করতে যান। পাশাপাশি বেসরকারি নার্সিংহোমে আয়া মাসিরা জোর করে ওই প্রসূতিকে শিখিয়ে দেন কেউ জিজ্ঞেস করলে কী বলতে হবে।

গতকাল রাতে পুলিশি হস্তক্ষেপে বাড়িতে আসার পর শনিবার দুপুরে এমনটাই সাংবাদিকদের জানালেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরাম থানার অন্তর্গত বনহাট এলাকার পূজা মার্ডি। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, মালদার ওই বেসরকারি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ যা বলেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সোমনাথ ঝাঁ জানিয়েছেন, কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য স্বামী ছেড়ে চলে গিয়েছেন এমন তথ্য তাদের কাছেও নেই। মালদা মেডিকেল কলেজের বালুরঘাটের চিকিৎসকরা মালদা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করলেও ওই প্রসূতিকে করে মালদার ওই বেসরকারি নার্সিংহোমে পৌঁছাল তা তারা খতিয়ে দেখছেন। পাশাপাশি ওই অ্যাম্বুলেন্স চালকের খোঁজও চালাচ্ছে পুলিশ।

আসলে নার্সিংহোমের ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করার মত কোনও ক্ষমতাই নেই ওই পরিবারের। তবুও ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে ২০ হাজার টাকা ধার নিয়ে ওই নার্সিংহোমকে দিয়েছেন স্বামী সুরোজ বেসরা ৷ গতকাল পতিরাম থানার পুলিশ মালদা পুলিশের সহযোগিতায় ওই প্রসূতিকে নার্সিং হোম থেকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। শুধু বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া নয়, কিছু অর্থ সাহায্য ও খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয় পতিরাম থানার তরফে।

প্রসঙ্গত, বালুরঘাট ব্লকের পতিরাম থানার বনহাট খাড়িপাড়ার বাসিন্দা পূজা মার্ডি গত কয়েকদিন আগে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন মালদার এক বেসরকারি নার্সিংহোমে। গত ১১ নভেম্বর ওই প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে মালদা মেডিক্যাল কলেজে রেফার করে।

অভিযোগ, সেই সময় এমন এক অ্যাম্বুলেন্স চালক ওই প্রসূতিকে মালদা মেডিকেল কলেজের না নিয়ে গিয়ে ওই বেসরকারি নার্সিং হোমে নিয়ে যায়। আগে পিছে কিছু না ভেবেই স্ত্রীকে বাঁচাতে ওই বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করান সুরোজ বেসরা। সেখনে ১২ নভেম্বর ভর্তি করানোর পর কন্যা সন্তানের জন্ম দেন পুজাদেবী। এদিকে স্ত্রী সুস্থ হতেই নার্সিংহোমের তরফ থেকে জানানো হয় যে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বিল হয়েছে। এরপর স্বামী সুরোজ বেসরা ধার দেনা করে ২০ হাজার টাকা নার্সিংহোমে দেন। তবে বাকি টাকার জোগান কীভাবে হবে সেই চিন্তা থেকে তিনি মেয়ে স্ত্রীকে বাড়ি ফেরাতে ভিন রাজ্যে কাজ করতে যান।

বারবার সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছেন কিন্তু স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড তো দূরের কথা সামান্য ঘর টুকও জোটেনি পূজা মার্ডির। এদিকে বনহাটে শ্বশুর বাড়ি হলেও বালুরঘাট মঙ্গলপুরে বাপের বাড়িতেই স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন পূজা মার্ডি।

স্বামী সুরোজ বেসরা পেশায় শ্রমিক। এদিকে মালদার ওই বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি থাকার সময় আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা চলছিল পূজাদেবীর। পূজা মার্ডি দাবি করেছেন তার সঙ্গে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কোনও খারাপ ব্যবহার করেনি। কিন্তু টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিত। যেটুকু টাকা তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব সেটুকু দিয়েই তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে বলতো পরিবারকে। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে ছাড়া পেয়েছেন তিনি ও তার মেয়ে।

আরও পড়ুন: Farmer Protest: রাতে কৃষক নেতাদের ফোন করলেন অমিত শাহ, শেষ হতে পারে আন্দোলন