একই শহরে পর্যটকদের জন্য দু’রকম নির্দেশিকা! বিভ্রান্তি প্রশাসনের অন্দরেও
Siliguri: দার্জিলিং জেলার ক্ষেত্রে যে নির্দেশ তা প্রযোজ্য পাহাড়ের জন্য। অর্থাৎ, দার্জিলিং জেলার অন্তর্গত শিলিগুড়ির হোটেলে আসতে পর্যটকদের কোনও বিধিনিষেধ নেই। জলপাইগুড়ি জেলার নির্দেশিকা আবার গোটা জেলার জন্য!
শিলিগুড়ি: একই শহর। কিন্তু পর্যটকদের জন্য এখানে দু’রকমের নির্দেশিকা। কিছু হোটেলে থাকলে লাগবে ডাবল ডোজ ভ্যাকসিন বা RTPCR রিপোর্ট, কিছু হোটেলে এসব কিছুই লাগছে না! স্বাভাবিকভাবেই বিভ্রান্ত ভিন জায়গা থেকে শিলিগুড়ি (Siliguri) আসা মানুষরা। নিরুত্তর প্রশাসন।
ভাবছেন কেন এমন হল? আসলে সমন্বয়ের অভাব। দার্জিলিং জেলার ক্ষেত্রে যে নির্দেশ তা প্রযোজ্য পাহাড়ের জন্য। অর্থাৎ, দার্জিলিং জেলার অন্তর্গত শিলিগুড়ির হোটেলে আসতে পর্যটকদের কোনও বিধিনিষেধ নেই। জলপাইগুড়ি জেলার নির্দেশিকা আবার গোটা জেলার জন্য। অর্থাৎ, জলপাইগুড়ির অধীনে শিলিগুড়ির যেসব হোটেল আছে, সেখানে আবার ডুয়ার্সের মতোই ডাবল ডোজ ভ্যাকসিন বা ৪৮ ঘন্টার RTPCR রিপোর্ট লাগবে। আর এ নিয়েই সমস্যায় পড়েছেন পর্যটকেরা।
সমস্যা এখানেই শেষ নয়, আরও আছে। যেসব পর্যটক পাহাড় ঘুরে ডুয়ার্সে যাবেন তাঁদের কী করণীয়? দার্জিলিং জেতে হলে তাদের ডাবল ডোজ ভ্যাকসিন বা ৭২ ঘন্টা আগের RTPCR দেখিয়ে যেমন ঢুকতে হবে, তেমনি এরপর ডুয়ার্সে যেতে হলে তাদের ঢোকার ৪৮ ঘণ্টা আগের RTPCR রিপোর্ট দেখাতে হবে। তাহলে যে পর্যটক কোভিড টেস্ট করিয়ে ৭২ ঘণ্টা পর দার্জিলিঙ ঘুরতে এলেন, তিনি ঘুরবেন নাকি ফের ডুয়ার্সে যাওয়ার জন্য কোভিড টেস্ট করাবেন? উত্তর নেই খোদ প্রশাসনের কাছেই!
শিলিগুড়িতে পর্যটন সংস্থার তরফে সম্রাট সান্যালের দাবি, প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় নেই। ফলে আমরাও বিভ্রান্ত যে কী করনীয় আর কোনটা নয়। পর্যটকেরা আসতে চেয়ে ফোন করছেন। কিন্তু আমরা কোনও উত্তরই দিতে পারছি না!
হোটেল মালিক সংগঠনের তরফে উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, বাস্তবে ফিজিক্যাল চেকিং বলে কিছু নেই। খাতায় কলমে নির্দেশিকা আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। রাতে যদি কিছু পর্যটক এসে বলেন, হোটেলে রুম চাই। কিন্তু তাঁর কাছে টেস্টিং রিপোর্ট নেই। তবে নির্দেশিকা থাকলে আমরা ফিরিয়ে দেব।
কিন্তু রাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিছু হলে তাঁর দায় কে নেবে? বিমান বন্দরে চেকিং নেই। রেল স্টেশনে চেকিং নেই। বাসস্ট্যান্ডে চেকিং নেই। কিন্তু কিছু নির্দেশিকা জারি করে কার্যত হয়রান করা হচ্ছে পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের। শিলিগুড়ি শহরের যে অংশ জলপাইগুড়ি জেলায় সেখানে এক রকম নিয়ম, যে অংশ দার্জিলিং জেলায় সেখানে অন্যরকম।
প্রসঙ্গত, কোভিড পরিস্থিতির দিকে খেয়াল রেখে দিঘার মতো দার্জিলিঙে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের জন্য জারি হয়েছে নির্দেশিকা। যে সব পর্যটক পাহাড়ে আসবেন তাঁদের দুটি ডোজ ভ্যাকসিন অথবা, ৭২ ঘণ্টা আগের আরটিপিসিআর রিপোর্ট থাকতে হবে। পর্যটকদের হোটেলে প্রবেশের সময় এই সংক্রান্ত নথিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। এ নিয়েই বিভ্রান্তি শিলিগুড়িতে। আরও পড়ুন: যেন করোনা বলে কিছু নেই! দিঘা-দার্জিলিঙে গমগমে ভিড়, আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা