BJP Protest: আজ থেকে সিঙ্গুরে বিজেপির ধরনা; ‘অবস্থান হবেই’, হুঁশিয়ারি দিলীপের
Singur: দিলীপ ঘোষ বলেন, বিরোধীরা আন্দোলন করবে। ফলে পুলিশও কোনও না কোনওভাবে আটকাবে। তবে তার মধ্যেই বিজেপির আন্দোলন চলবে।
কলকাতা: মঙ্গলবার থেকে সিঙ্গুরে তিনদিনের ধরনা কর্মসূচির ডাক দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। এই ধরনা ঘিরে ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। গত রবিবারই মঞ্চ বাঁধতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের বাধার মুখে পড়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপির স্থানীয় নেতারা। যদিও ধরনা নিয়ে দল যে এক পা পিছু হঠবে না মঙ্গলবার সে বার্তাই দিয়ে রাখলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। জানিয়ে দিলেন, এদিন তিনি নিজে উপস্থিত থাকবেন ধরনামঞ্চে।
মঙ্গলবার ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, বিরোধীরা আন্দোলন করবে। ফলে পুলিশও কোনও না কোনওভাবে আটকাবে। তবে তার মধ্যেই বিজেপির আন্দোলন চলবে। দিলীপ ঘোষ জানান, নিয়ম-নীতি মেনে প্রশাসনকে জানিয়ে অনুমতি নিয়ে আন্দোলন করতে গেলেও এ রাজ্যে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করে সরকার।
দিলীপ ঘোষের কথায়, “বিরোধীদের আন্দোলন দেখলেই পুলিশ আটকাবে। কারণ, সরকার তো কাউকে ছাড়বে না। তার মধ্যেও আমাদেরও আন্দোলন করতেই হবে। সমস্ত নিয়ম মেনে , প্রশাসনকে জানিয়েই আমরা আন্দোলন করতে যাই। তারপরও আমাদের আটকে দেওয়া হয়। এটাই চিন্তার বিষয়। যা পরিস্থিতি হবে সেই অনুযায়ী দল সিদ্ধান্ত নেবে। আমি নিজেও যাব আজ।”
ধরনা কর্মসূচির প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় সিঙ্গুরের রতনপুর বড়বাজার লোহাপট্টি সেবা সমিতি হলে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন রাজ্য বিজেপির সাধরণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য ও জেলা স্তরের একাধিক নেতা-নেত্রী। বৈঠক শেষে সায়ন্তন বলেন, “পুলিশ অনুমতি না দিলেও ধরনা কর্মসূচি হবে। সঠিক সময়ে এবং নিদিষ্ট স্থানেই আমরা বসব। পুলিশ বাধা দিলে পুলিশ সুপারের অফিসে ধরনা হবে। আমাদের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার উপস্থিত থাকবেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থাকবেন।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রবিবারই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন, “আমরা আন্দোলন থেকে পিছু হঠব না। আমরা আন্দোলন করবই। আমি নিজে ১৬ তারিখ যাব। পুলিশ গ্রেফতার করলে করবে। লাঠিচার্জ করলে করবে, গুলি চালালে চালাবে। আমরা পুলিশের সঙ্গে লড়াইয়ে নামতে বাধ্য হব এবার। পুলিশ যা করছে তা দলদাসেরা করে। পুলিশকে বলব সংবিধান অনুসারে আচরণ করুক।”
বিজেপির বক্তব্য, ‘কৃষক স্বার্থ’কে সামনে রেখেই এই ধরনার ডাক দিয়েছে তারা। শমীক ভট্টাচার্য সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, “অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে বাংলার কৃষকদের অসহনীয় অবস্থা, পান চাষি, আলু চাষি, তামাক চাষিরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবু সরকারের কোনও সহযোগিতা তাঁরা পাচ্ছেন না। এমএসপি দিয়ে বাংলার কৃষকদের দালালদের হাতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এখান থেকে কৃষকদের বের করতেই হবে।”
একই সঙ্গে শমীক দাবি করেন, “বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি করে প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার আওতায় বাংলার কৃষকদের আনা যায়নি। এ রাজ্যের কৃষকরা এমএসপি পান না। রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধিও বাংলার সমস্ত কৃষক পাননি। রাজ্য সরকার কিষাণ মাণ্ডি তৈরি করেছে। সেখানে পশু রাখা হয়েছে, কোথাও সাইকেল মজুত করেছে। অধিকাংশ কিষাণমাণ্ডি সমাজবিরোধীদের বিচরণক্ষেত্র। সেখানে কৃষকের কোনও যোগাযোগ নেই।”
রাজনৈতিক মহলের অনুমান, যে ‘ন্যানো-ভূম’ সিঙ্গুর এক সময়ের বাম শাসিত বাংলার পটবদলে অক্সিজেন জুগিয়েছিল, সেই সিঙ্গুর-অস্ত্রেই এবার শাসকদল তৃণমূলকে ঘায়েল করতে চাইছে বিজেপি। সে লক্ষ্যেই এদিন পথে নামছে বঙ্গ বিজেপি, বিজেপির কিসান মোর্চা।
আরও পড়ুন: Potato Farming: আলুর বীজ পচেছে মাঠেই! এগিয়ে আসুক সরকার, দাবি আরামবাগের আলু চাষীদের