Hooghly Potato Cultivation: জাওয়াদের পর দোসর কুয়াশা, সর্বস্বান্ত হওয়ার আশঙ্কায় চাষিরা
Hooghly Potato: ইতিমধ্যেই বৃষ্টির ফলে হাজার হাজার হেক্টর জমির আলু বীজ পচে নষ্ট হতে চলেছে। তার ওপর দোসর হয়ে এসেছে কুয়াশা। কুয়াশা ফলে আলু চাষে একাধিক ক্ষতি হতে পারে।
হুগলি: নিম্নচাপের অতিবৃষ্টির পর এবার দোসর কুয়াশা। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে জমি ফলে আদৌ কি আলু বসানো আর সম্ভব হবে? চিন্তায় চাষিরা।
ইতিমধ্যেই বৃষ্টির ফলে হাজার হাজার হেক্টর জমির আলু বীজ পচে নষ্ট হতে চলেছে। তার ওপর দোসর হয়ে এসেছে কুয়াশা। কুয়াশা ফলে আলু চাষে একাধিক ক্ষতি হতে পারে। প্রথমত আলু চাষের জন্য লাগে উজ্জ্বল ঝলমলে আকাশ। তার সঙ্গে প্রবল শীত। কিন্তু জমিতে সাত সকালেই যদি কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে এবং এই কুয়াশা টানা বেশ কয়েক দিন ধরে দেখা যায় তাহলে আলু চাষে প্রবল ক্ষতি হবে। জমিতে সূর্যের আলো না পড়লে আলুর বীজ থেকে চারা ফুটবে না, চারা গাছের বৃদ্ধিতে বাধা দেবে কুয়াশা। অন্যদিকে কুয়াশার ফলে জমিতে বাড়বে পোকার আক্রমণ। এক প্রকার বলা যেতেই পারে অতিবৃষ্টির পর এবার চাষিদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ালো ঘন কুয়াশা।
এখনও কাটেনি দুর্যোগের গেরো। এরই মধ্যে মর্মান্তিক পরিণতি কৃষকের। চাষে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে আত্মঘাতী হলেন এক আলুচাষি। মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। জাওয়াদের জেরে অসময়ে বৃষ্টি ভাসিয়েছে পথঘাট, ভাসিয়েছে খেতের ফসল। পরিবারের দাবি, এই বৃষ্টি নিয়ে উদ্বেগে ছিলেন চন্দ্রকোণা থানার কাঁয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধান্যঝাটির ভোলানাথ বায়েন। আলুচাষে ক্ষতির আশঙ্কা থেকে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
ভোলানাথ বায়েন এক বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছিলেন। প্রায় ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সেই চাষ করেন তিনি। গ্রামবাসীরা জানান, আচমকাই ডিসেম্বরের শুরুতে ঝড়-বৃষ্টির কারণে চাষের বিপুল ক্ষতির আশঙ্কায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন ভোলানাথ। এই নিয়ে পরিবারেও অশান্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ। এরপরই ভোলানাথ আত্মহত্যা করেন বলে জানা গিয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর বাড়িতেই বিষ খান ভোলানাথ বায়েন। দ্রুত চিকিৎসার জন্য তাঁকে চন্দ্রকোণা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয় ওই আলুচাষির। চন্দ্রকোণা থানার পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
বৃষ্টির জেরে গোটা এলাকার মাঠ একেবারেই জল থই থই। মাঠ থেকে ধান তুলে প্রায় ২৫ শতাংশ জমিতে আলু বসানো হয়ে গিয়েছিল। আর ওই ২৫ শতাংশ আলু পুরোপুরি নষ্ট হতে বসেছে কারণ আলু জমিতে জল জমেছে। অনেকেই মাঠ থেকে ধান কোনওক্রমে বাড়ির খামারে তুলে আনলেও ওই ভিজে ধান নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে পুরোপুরিভাবে সমস্যায় কৃষকরা। বাড়ির উঠানে বা খামারে ধান ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হলেও অঙ্কুর ফুটে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই দুশ্চিন্তার কালো মেঘ এবার দেখছেন তাঁরা। তার ওপর সবজিতেও ক্ষতি। সব মিলিয়ে আর রেহাই পেলেন না চাষিকূল।
আরও পড়ুন: Weather Update: কুয়াশায় ঢেকেছে গোটা শহর, স্যাঁতস্যাঁতে ভাব থাকলেও শীত অধরা! রোদ উঠবে কবে?