Jalpaiguri: ১০০০ টাকার জন্য জলপাইগুড়িতে টোটোচালককে খুন? হাওড়া থেকে প্রেমিকা-সহ অভিযুক্তকে ধরল পুলিশ
Toto driver murdered: জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, "মূলত ভাড়া নিয়ে বচসা থেকেই এই ঘটনার সূত্রপাত। মামলা দায়ের হওয়ার পর আমরা প্রথমে টোটোটিকে উদ্ধার করতে পারি কোচবিহার জেলা থেকে। এরপর টোটো চালকের মোবাইলটি আচমকা হাওড়ার সাঁকরাইলে অ্যাক্টিভেট হলে তদন্ত শুরু হয়।

জলপাইগুড়ি: জলাশয় থেকে উদ্ধার হয়েছিল টোটোচালকের দেহ। ২০ দিনের মাথায় এই ঘটনায় এক যুবক ও তাঁর প্রেমিকাকে গ্রেফতার করল জলপাইগুড়ির পুলিশ। ধৃতদের নাম জ্যোতির্ময় সরকার ও রত্না রায়। তাঁদের হাওড়ার সাঁকরাইল থেকে ধরা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে মৃত টোটোচালকের ফোন। টোটোচালকের কাছে থাকা হাজার খানেক টাকার জন্যই এই খুন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৭ অগস্ট ভোরবেলায় জলপাইগুড়ি গোশালা মোড় টোটোস্ট্যান্ড থেকে সিতুল রায় নামে ওই টোটোচালকের টোটোতে চেপেছিলেন অভিযুক্ত জ্যোতির্ময় সরকার। এরপর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান ওই টোটোচালক। উধাও হয়ে যায় তাঁর টোটো। মোবাইলে ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এরপর ২৯ অগস্ট সিতুল রায়ের দেহ উদ্ধার হয় কোতোয়ালি থানার এক জলাশয় থেকে। দেহ শনাক্ত করার পর খুনের অভিযোগ দায়ের করে মৃতের পরিবার। তদন্তে নামে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ।
জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “মূলত ভাড়া নিয়ে বচসা থেকেই এই ঘটনার সূত্রপাত। মামলা দায়ের হওয়ার পর আমরা প্রথমে টোটোটিকে উদ্ধার করতে পারি কোচবিহার জেলা থেকে। এরপর টোটো চালকের মোবাইলটি আচমকা হাওড়ার সাঁকরাইলে অ্যাক্টিভেট হলে তদন্ত শুরু হয়। জানতে পারি, রত্না রায় নামে জলপাইগুড়ি ৫ নম্বর রেলগুমটির বাসিন্দা এক মহিলার সঙ্গে কোচবিহার জেলার বাসিন্দা জ্যোতির্ময় সরকারের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক আছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা আগেই জানতে পেরেছিলাম, জ্যোতির্ময় সেদিন ভোরে টোটোতে উঠেছিলেন।”
শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “এরপরই বিশেষ দল গঠন করে তদন্তের গতি বাড়িয়ে জ্যোতির্ময় সরকার এবং রত্না রায়কে গ্রেফতার করা হয়। দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে মূলত ভাড়া নিয়ে বচসার জেরে মারামারি হয়। মারের চোটে টোটো চালক সিতুল রায় অজ্ঞান হয়ে যান। এরপর তাঁকে জলাশয়ে ফেলে দিয়ে টোটো নিয়ে কোচবিহারে পালিয়ে যান জ্যোতির্ময়। সেখান থেকে ফের জলপাইগুড়িতে এসে রত্নাকে নিয়ে সাঁকরাইলে পালিয়ে গিয়ে একটি বাড়িভাড়া নিয়ে সংসার পাতেন। মৃতের মোবাইল ফোন বিক্রি করে দেন। ওই মোবাইল অ্যাক্টিভেট হতেই স্পেশাল টিম হাওড়ায় গিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে।” তিনি বলেন, ধৃত রত্না রায় খুনে জড়িত না থাকলেও ঘটনার কথা জানতেন। না হলে তিনি এখান থেকে চলে যেতেন না। তাছাড়া তিনিই ওই টোটোচালকের মোবাইলটি বিক্রি করেছিলেন।
টোটোচালকের কাছে থাকা হাজার টাকার জন্যই খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। এই নিয়ে মৃতের ভাই সন্তোষ রায় বলেন, “মাত্র হাজার টাকার জন্য আমার দাদাকে খুন করা হল। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।” ঘটনাটি নিয়ে তৃণমূলের টোটো ইউনিয়নের নেতা পুণ্যব্রত মিত্র বলেন, “টোটোচালকদের কাছে অনুরোধ করব, ভোরে ও রাতে যেন একটু সচেতন থাকেন। যাত্রীদের জেনেবুঝেই যেন নিয়ে যান।” দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করায়, পুলিশকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এদিকে, ধৃত যুবক ও তাঁর প্রেমিকাকে আদালতে তুলে ৭ দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
