Jalpaiguri: একাদশীতেই বোধন, একাদশীতেই বিসর্জন, বাংলার এই এলাকার মানুষ মাতেন ১ দিনের দুর্গাপুজোয়
Jalpaiguri Durga Pujo: কথিত রয়েছে, বৈকন্ঠপুর রাজ বাড়ি ছেড়ে দেবী দুর্গা তার সন্তানদের নিয়ে কৈলাশে ফেরার সময় ঘন জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলেছিলেন। এরপর তিনি সাধারন নারীর রুপ ধরে ঘন জঙ্গলের ভেতর একটি গাছ তলায় বসে কাদছিলেন। ঐ সময় এক রাখাল গরু চড়িয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি এক নারীকে কাঁদতে দেখে তাঁকে রাতে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আশ্রয় দেন।

জলপাইগুড়ি: শারদীয়া দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই তিস্তার অপর পাড় মাতল একদিনের দুর্গা পুজোয়। একাদশী তিথিতে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের বার্নিশ গ্রামপঞ্চায়েতের দক্ষিণ উল্লাডাবরি গ্রামে বড় ভান্ডানিতে থাকা ভান্ডানী মন্দিরে দেবী দুর্গা ভান্ডানী রূপে পূজিতা হন।
কথিত রয়েছে, বৈকন্ঠপুর রাজ বাড়ি ছেড়ে দেবী দুর্গা তার সন্তানদের নিয়ে কৈলাশে ফেরার সময় ঘন জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলেছিলেন। এরপর তিনি সাধারন নারীর রুপ ধরে ঘন জঙ্গলের ভেতর একটি গাছ তলায় বসে কাদছিলেন। ঐ সময় এক রাখাল গরু চড়িয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি এক নারীকে কাঁদতে দেখে তাঁকে রাতে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আশ্রয় দেন।
রাত পেরিয়ে সকালে দেবী আসল মূর্তি ধারণ করেন। দেবি তুষ্ট হয়ে বর দেন। পরদিন সকাল থেকে তিস্তা ওপর পাড় শস্য শ্যামলা হয়ে ওঠে। সেই থেকে পাচ শতাধিক বছরের বেশি সময় ধরে ময়নাগুড়ির বড় ভান্ডানী গ্রামের মন্দিরে একাদশীর দিনে ভান্ডারী রুপে দেবি দুর্গার একদিনের দূর্গাপুজো হয়ে আসছে।
দেবী এখানে মহিষাসুর মর্দিনীর ভূমিকায় নয়। দেবী এখানে সাধারণ নারী রুপী। তাই এখানে দেবী দুর্গা দ্বিভুজা এবং দেবী দুর্গা সিংহের বদলে বাঘের উপর অধিষ্ঠিতা। দেবীর সাথে লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ থাকেন। কিন্তু এই মূর্তিতে অসুর থাকে না।
পুজোকে ঘিড়ে ময়নাগুড়ির ভান্ডানী এলাকায় প্রতিবার লাখো লাখো মানুষের ঢল নামে। দিন পেরিয়ে রাতভর চলে পুজো। সঙ্গে মেলা বসে। কয়েকশো পাঠা ও অগুন্তি পায়রা বলি হয়। পুজোয় কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মোতায়েন করা হয় পুলিশ, সাদা পোশাকের পুলিশ ও র্যাফ। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখো মানুষ আসেন। মানসা করেন। মনস্কামনা পূর্ণ হলে ফের পূজো দিতে আসেন। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমাদের কাছে এই একদিনের পুজোর মাহাত্ম্য অনেক বেশি। আমরা সারা বছর এটার জন্য অপেক্ষা করে থাকি। মনটা একটু খারাপ হয়, এক দিনের পুজো, কিন্তু এটাই আমাদের রীতি।”
