Malda: সালিশি বসিয়ে ২ লক্ষ টাকা দাবি, না মেলায় দোকান পোড়ানোর অভিযোগ, অভিযুক্ত মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ
Malda TMC: যারা আক্রান্ত তাঁরাও তৃণমূল কর্মী। নারায়ণপুরের বাসিন্দা গোলাম রসুলের সঙ্গে বিহারের পূর্ণিয়ার রিজওয়ানা পারভিনের বিয়ে হয় কয়েক মাস আগে। কিন্তু স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। সেই অশান্তি মেটানোর জন্য মেয়ের বাবার বাড়িতে গত অগস্টের ২৩ তারিখ সালিশি সভা বসে।

মালদহ: তৃণমূল কর্মী স্বামী স্ত্রীর বিবাদ মেটাতে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ স্থানীয় তৃণমূল নেতার সালিশি সভা। ওই নেতা আবার পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়র এবং তাঁর স্ত্রী তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা। সালিশিতে মধ্যস্থতা না হওয়ায় যুবকের পরিবারের কাছে দুই লক্ষ টাকা চাওয়ার অভিযোগ। সেই টাকা না দেওয়ায় যুবককে অপহরণ করে রাখার অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, পুলিশ উদ্ধার করলেও অভিযোগপত্র থেকে নাম তুলে নেওয়ার জন্য ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে। রাতে সেই দম্পতির দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পেশায় সিভিক ভলেন্টিয়ার ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য মালদহের নারায়ণপুরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যারা আক্রান্ত তাঁরাও তৃণমূল কর্মী। নারায়ণপুরের বাসিন্দা গোলাম রসুলের সঙ্গে বিহারের পূর্ণিয়ার রিজওয়ানা পারভিনের বিয়ে হয় কয়েক মাস আগে। কিন্তু স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। সেই অশান্তি মেটানোর জন্য মেয়ের বাবার বাড়িতে গত অগস্টের ২৩ তারিখ সালিশি সভা বসে। নেতৃত্বে তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী তারিখ আনোয়ার। যিনি আবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার সিভিক ভলেন্টিয়র।
সালিশিতে মধ্যস্থতা না হলে থানায় নিয়ে যাওয়ার নাম করে গোলাম রসূলকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। তারিখ আনোয়ার সহ রসুলের স্ত্রীর বাবার বাড়ির পরিবারের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ হয়। বিহার থেকে গোলাম রসুলকে উদ্ধার করে পুলিশ। তারপর অভিযোগপত্র থেকে তারিখের নাম সরানোর জন্য বারবার চাপ এবং হুমকি আসতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল রাতে গোলাম রসুল এবং তাঁর দাদার প্রসাধনী সামগ্রীর দোকানে পেট্রল দিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
তাঁদের অভিযোগ, তারিখ আনোয়ার মঙ্গলবার ফোন করে হুমকি দিয়েছিল, যে বড় ক্ষতি হবে। রাতেই তাঁদের দোকান জ্বালিয়ে দিয়েছে। এলাকায় বিশাল প্রভাব তাঁর। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেনের নাম ভাঙিয়ে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। এমনকি মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করছে না বলেও অভিযোগ।
তাজমুলের সঙ্গে ওই তৃণমূল নেতা তথা সিভিকের ছবিও সামনে এসেছে। যদিও সমগ্র ঘটনা অস্বীকার করে তারিখ আনোয়ারের দাবি, কেউ বা কারা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। অন্যদিকে কার্যত তারিকের পাশে দাঁড়িয়ে মন্ত্রীর দাবি, অভিযোগ থাকতেই পারে। তার প্রমাণ থাকতে হবে। বাকিটা পুলিশ দেখবে।
হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তালামূল হোসেন বলেন, “কেউ প্রমাণ করতে পারে, এর পিছনে ওই আছে? গোটা বিষয়টি প্রশাসন দেখছে। আমি অভিযোগ সবটাই শুনেছি। এর পিছনে ভিত্তি কতটা রয়েছে, সেটা প্রশাসন দেখবে? অভিযুক্ত যে, সে তো যে কারোর নাম ভাঙিয়ে কাজ করতেই পারে।”
বিজেপির কটাক্ষ, রাজ্যে আইনের শাসন নেই। তৃণমূলের কর্মীরাও তালিবানিরাজের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। জেলা বিজেপি সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, “তৃণমূল যবে থেকে ক্ষমতায় এসেছে, তবে থেকে তালিবানি রাজ চলছে। কেউই সুরক্ষিত নেই, এমনকি ওদের দলের কিছু সংখ্যক নেতাকর্মীও নেই। মারছে তৃণমূল, মরছে তৃণমূল। প্রভাবশালী তৃণমূল, যে মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ, তাকে মারছে।”
