Durga Puja 2021: লন্ঠনের আলোয় দুর্গাকে বিদায় জানালেন সংখ্যালঘুরা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল ছবি চাঁচলে

Malda: প্রতি বছরের নিয়ম এটা। গোধূলি লগ্নে এভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। গ্রাম তো বটেই, আশেপাশের এলাকার মানুষ, প্রায় হাজার-বারশো মানুষ জড়ো হন। তবে এখন লণ্ঠন তো নেই। যাঁদের বাড়িতে আছে, তাঁরা নিয়ে আসেন। বাকিরা মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ আর চার্জার লাইট দিয়ে এই নিরঞ্জনে যোগ দেন।

Durga Puja 2021: লন্ঠনের আলোয় দুর্গাকে বিদায় জানালেন সংখ্যালঘুরা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল ছবি চাঁচলে
দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জনে অংশ নিলেন মুসলিমরা। (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 16, 2021 | 8:50 PM

মালদহ: বিদায়ের সুর বেজে উঠেছে। একেক করে দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন চলছে ঘাটে ঘাটে। এই উৎসবের মরসুমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির গড়ল মালদহের (Malda) চাঁচলের পাহাড়পুর।  লণ্ঠনের আলো দেখিয়ে দুর্গা (Durga) কে বিদায় জানালেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা। বাংলা দেখল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অভিনব দৃশ্য।

মালদার চাঁচলের পাহাড়পুরের রাজবাড়ির পুজো। এই পুজোকে ঘিরে বরাবরই একজোট হন বাসিন্দারা। সেখানে নেই কোনও ধর্মীয় ভেদাভেদ, নেই কোনও বৈরিতা। আর শনিবার প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় ‘দুর্গার শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাওয়ার পথ আলোকিত করতে’ লন্ঠন তুলে আলো দেখালেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা। আর এভাবেই সম্প্রীতির ছবি ধরা পড়ল মালদহের চাঁচলের পাহাড়পুরের মরা মহানন্দার ঘাটে।

প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনোরীতি মেনে আজও বিসর্জনে লণ্ঠনের আলো দেখিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এটাই এখানকার প্রথা। চাঁচলের রাজা রাম চন্দ্র রায় বাহাদুর আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে এই পুজো শুরু করেছিলেন। সেই থেকেই চাঁচল পাহাড়পুরের চণ্ডী মন্দিরের সামনে ঠিক দুশো মিটার দূরে মহানন্দা নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয় দেবীপ্রতিমাকে। আর ওই বিসর্জনের সময় নদীর ওপারের বেশকিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ লণ্ঠনের আলো জ্বালিয়ে দুর্গা-কে ‘বিদায়’ জানান।

কেন এমন নিয়ম?

কথিত আছে, কোনও এক সময়ে চাঁচলের মরা মহানন্দা নদীর তীরবর্তী এলাকার বিদ্যানন্দপুর গ্রামে এক ভয়াবহ মহামারি দেখা দিয়েছিল। সেই সময় নাকি পাহাড়পুরের চণ্ডী মন্দিরের দেবী স্বপ্নে গ্রামবাসীদের হ্যারিকেনর আলো দেখাতে বলেন। সেই থেকেই ওই এলাকার মানুষেরা আজও বিসর্জনের সময় লণ্ঠনের আলো জ্বালিয়ে তাঁকে বিদায় জানান। তবে আস্তে আস্তে সেই হ্যারিকেনের প্রচলন উঠতে চলেছে। এখন ডিজিটালের যুগ। তাই কেউ মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে, কেউ আবার চার্জার লাইট জ্বালিয়েও দেবী কে বিদায় জানাচ্ছেন। আর এঁদের মধ্যে বেশিরভাগই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।

আলো হাতে দুর্গার বিসর্জনে অংশ নেওয়া এক বাসিন্দার কথায়, প্রতি বছরের নিয়ম এটা। গোধূলি লগ্নে এভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। গ্রাম তো বটেই, আশেপাশের এলাকার মানুষ, প্রায় হাজার-বারশো মানুষ জড়ো হন। তবে এখন লণ্ঠন তো নেই। যাঁদের বাড়িতে আছে, তাঁরা নিয়ে আসেন। বাকিরা মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ আর চার্জার লাইট দিয়ে এই নিরঞ্জনে যোগ দেন। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে একতা, হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখার এই রীতি তাঁরা বহু বছর ধরে মেনে চলেছেন বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: Gosaba By Election: পুজো শেষ, বাজল ভোটের ঢাক! প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ভোটপ্রচার তৃণমূল ও বিজেপির

আগর আলি নামে টর্চ হাতে নিরঞ্জনে অংশ নেওয়া এক বাসিন্দা জানালেন, তাঁর পূর্বপুরুষও অংশ নিয়েছেন, তাঁরাও অংশ নেন দুর্গার প্রতিমা নিরঞ্জনে।

আরও পড়ুন: Suicide: প্রেমিকার বাড়ির সামনে গামছা গলায় ঝুলছে যুবক, হাতে প্রেমিকারই ছবি!