Dakshineswar Metro Station: কেন সহপাঠীকে কুপিয়ে খুন? দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে ভরদুপুরে ছাত্রখুনে চাঞ্চল্যকর তথ্য, উঠছে হাজারও প্রশ্ন
Dakshineswar Metro Station Murder Case : ঘটনার আকস্মিকতায় স্তম্ভিত ছাত্রের পরিবার। নিহত ছাত্রের এক আত্মীয় বলেন, "ও তো ভাল ছেলে। কোনওদিন কারোর সঙ্গে ঝুটঝামেলা করতে দেখিনি। আমাদের ফোন করে শুধু জানানো হয়েছিল তাড়াতাড়ি যাতে হাসপাতালে চলে আসি। এসে দেখি, সব শেষ।"

উত্তর ২৪ পরগনা: সবে মাত্র ১৭ পেরিয়েছে বয়স। একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। রোজ নির্দিষ্ট সময়েই স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে যায় সে। কিন্তু শুক্রবার নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও বাড়ি ফিরছিল না বলে পরিবারের সদস্যরা কিছুটা চিন্তাই করছিলেন। এমন সময়ে আসে ফোন। ছেলের বন্ধুর। জানানো হয়, তাঁদের ছেলের শরীর খারাপ, তাড়াতাড়ি সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চলে আসতে বলে। কিন্তু যতক্ষণে তাঁরা পৌঁছন ততক্ষণে সব শেষ। ছেলের গলায় নলি ফুঁড়ে গিয়েছে! রক্তাক্ত সারা শরীর। দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে শুক্রবার ভর দুপুরে একাদশ শ্রেণির ছাত্রকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ তারই সহপাঠীর বিরুদ্ধে। শিউরে ওঠার মতো ঘটনা।
জানা গিয়েছে, ওই ছাত্র বাগবাজার বয়েজ স্কুলে পড়ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, তখন ঘড়ির কাঁটা দুপুর তিনটের আশপাশে। দুপুরের মেট্রো স্টেশন তুলনামূলকভাবে ফাঁকা। টিকিট কাউন্টারের সামনেই দুই ছাত্রদলের সংঘর্ষ হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগে আচমকাই এক ছাত্র ব্যাগ থেকে ছুরি বার করে অপর ছাত্রের গলায় চালিয়ে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে সে। বাকিদের চিৎকার চেঁচামেচিতেই গুটি কয়েক যাত্রী, রেল পুলিশ, আরপিএফ, ছুটে যান। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রের।
ঘটনার আকস্মিকতায় স্তম্ভিত ছাত্রের পরিবার। নিহত ছাত্রের এক আত্মীয় বলেন, “ও তো ভাল ছেলে। কোনওদিন কারোর সঙ্গে ঝুটঝামেলা করতে দেখিনি। আমাদের ফোন করে শুধু জানানো হয়েছিল তাড়াতাড়ি যাতে হাসপাতালে চলে আসি। এসে দেখি, সব শেষ।” এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, প্রণয়ঘটিত কারণেই এই ঘটনা।
তবে প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে মেট্রো স্টেশনের মধ্যেই ছুরি নিয়ে প্রবেশ করল স্কুল ছাত্র। সেক্ষেত্রে মেট্রো স্টেশনের ভৌগলিক চিত্রটা দেখলে বোঝা যাবে, স্টেশনে প্রবেশের মূল দ্বার থেকে টিকিট কাউন্টারের আগে পর্যন্ত ব্যাগ চেকিংয়ের কোনও ব্যবস্থা নেই। টিকিট কাটার পর ভিতরে ঢুকতে দেখে ব্যাগ স্ক্যানিং করা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, মূল ফটক থেকে টিকিট কাউন্টার পর্যন্ত কোনও আরপিএফ কিংবা নিরাপত্তারক্ষী কি ছিলেন না? টিকিট কাউন্টারেও কি কেউ ছিলেন না, কেন সকলের অলক্ষ্যে এমনটা ঘটল? চিৎকার চেঁচামেচি শুনেও কেন প্রশাসনের কেউ আসেননি? এবার বিষয়ে যাত্রীরাই বলছেন, “বাংলার যা অবস্থা হচ্ছে দিন দিন, তাতে তো ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাংলায় বড় করতেই ভয় লাগছে।” বরানগরের তৃণমূল কাউন্সিলর অঞ্জন পাল বলেন, “ভাবতেই পারছি না, এমনটা হতে পারে। ছেলেটাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা মাত্রই ডাক্তাররা মৃত বলে জানিয়ে দেন। আমি এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি। ছাত্রদের মধ্যে এই মনোভাব আসল কীভাবে, সেটাই ভাবছি।”
