AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Vidyasagar University: ব্রিটিশরাজ চলছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে? বিপ্লবীদের বানিয়ে দেওয়া হল সন্ত্রাসবাদী!

Vidyasagar University Controversy: বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, "উপাচার্যের নজরে যখন আনা হয়, উনি সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে আগামিকালের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। কোনও অধ্যাপক হয়তো ইংরেজি থেকে ট্রান্সলেট করতে গিয়ে বা টাইপ করতে গিয়ে এই ভুল হয়েছে।"

Vidyasagar University: ব্রিটিশরাজ চলছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে? বিপ্লবীদের বানিয়ে দেওয়া হল সন্ত্রাসবাদী!
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র নিয়ে বিতর্ক।Image Credit: TV9 বাংলা
| Edited By: | Updated on: Jul 10, 2025 | 1:58 PM
Share

পশ্চিম মেদিনীপুর: দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা লড়াই করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন, তাদের কি না সন্ত্রাসবাদী তকমা! মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই প্রশ্নপত্র সামনে আসতেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রীকে ইমেল মারফত অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপি।  নিন্দায় সরব বিপ্লবীদের পরিবার থেকে শিক্ষানুরাগীরা।

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ১১ নং প্রশ্নে লেখা রয়েছে “মেদিনীপুরের তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নাম করো, যারা সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা নিহত হন?”। ব্রিটিশ শাসনকালে ইংরেজরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সন্ত্রাসবাদী বলতেন। ২৭৫ বছর পর আবার কি ব্রিটিশরাজ ফিরে এল বাংলায়?

কীভাবে রাজ্য়ের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী বলে উল্লেখ করা হল? বিতর্কের শুরু এখান থেকেই। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রশ্নপত্র নিয়ে নিন্দা করেছেন মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষানুরাগীদের সংগঠন শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চও।

এদিকে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, “উপাচার্যের নজরে যখন আনা হয়, উনি সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে আগামিকালের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন। কোনও অধ্যাপক হয়তো ইংরেজি থেকে ট্রান্সলেট করতে গিয়ে বা টাইপ করতে গিয়ে এই ভুল হয়েছে।”

বিতর্কের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ দিন বলেন, “আমরা অত্যন্ত দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। আমি আজ অফিসে এসেই ইতিহাস বিভাগের প্রধান সহ সমস্ত অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে ডাকি। রেজিস্ট্রার ও কন্ট্রোলারকে ডাকি। আমার কাছে এটা অত্যন্ত সিরিয়াস ইস্যু। অঙ্গীকার করছি, আগামিদিনে যাতে এই ভুল না হয়, তার জন্য আমরা আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করেছি। আমরা কন্ট্রোলারের রিপোর্ট পেয়েছি। ইউজিসির রিপোর্টও পেয়ে যাব। আমরা নিজেরাও স্টাডি করে দেখেছি যে এই শব্দটা মিসটেক। এর সঙ্গে কে যুক্ত, তা মোটামুটি বুঝতে পেরেছি। মডারেশন বোর্ডের একজন বললেন, অসাবধানতাবশত ও অনিচ্ছাকৃত ভুল।”

মেদিনীপুরের বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী অ্যাখ্যা দেওয়ার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ইমেইল মারফত অভিযোগ জানিয়েছেন জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি তথা শিক্ষানুরাগী ডঃ শঙ্কর গুচ্ছাইত। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বিপল দাশগুপ্ত, প্রদ্যুৎ কুমার ভট্টাচার্য, শুভ্রাংশু পাল, এদের সন্ত্রাসবাদী বলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে কারণ তিনিই শিক্ষা দফতরের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ করেন। ভাইস চ্যান্সেলরকে শোকজ করতে হবে। প্রশ্নপত্র যিনি প্রস্তুত করেছেন, তাকে সাসপেন্ড করতে হবে। প্রশ্নপত্র কে তৈরি করেছিলেন, তাঁর নাম জানতে চায় বাংলা। তিনি কি টুকরে টুকরে গ্য়াংয়ের মেম্বার?”

স্বাধীনতা সংগ্রামী বিমল দাশগুপ্তের ছোট ছেলে রণজিৎ দাশগুপ্ত এই বিতর্ক নিয়ে বলেন, “ইতিহাসে যাদের নাম লেখা, তাদের কাছে এটা লজ্জার বিষয়”। শিক্ষানুরাগী সংগ্রামী মঞ্চের সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “ছাত্রমহল ও সমাজের সমস্ত স্তরে যে বার্তা গিয়েছে, তা অত্যন্ত নক্কারজনক। আমরা অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ও ইতিহাস বিভাগের দায়িত্বে যারা রয়েছেন, তারা প্রকাশ্য়ে ক্ষমা চাক।”

বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনে আমি আরও আঁতকে উঠলাম। এটাই এগিয়ে বাংলার নমুনা। যে মেদিনীপুর ক্ষুদিরাম বসু, বীরেন্ শাসমল, মাতঙ্গিনী হাজরা, সুশীল ধারা , সতীশ সামন্তের ভূমি, মেদিনীপুরের হেন কোনও ব্লক নেই, গ্রাম নেই যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামীর খোঁজ মিলবে না, সেই মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপ্লবীদের সন্ত্রাসবাদী বলা হল। ভুলের ব্যাখ্যায় বলা হল ইংরেজি থেকে বাংলায় তর্জমা করতে গিয়ে এই ভুল হয়ে থাকতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই তো প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষার মান কী হয়েছে, দেখুন।”