Bhaiphota 2022: কেরিনা বিবি ফোঁটা দিলেন মহাদেবকে, সুজাতা দিলেন সরিফকে, ভাই-ফোঁটায় অনন্য নজির
purba Bardhaman: এই ভাই-ফোঁটায় সৃষ্টি হল নজীর। ধর্মান্ধতার উর্ধে উঠে এই ৫০ জনের ভাইফোঁটাকে আক্ষরিক অর্থেই সম্প্রীতির অনন্য নজিরে পরিণত করলেন।
বর্ধমান: আজ ভাইফোঁটা। পঞ্জিকা মতে বুধবার বিকালে ভ্রাতৃ দ্বিতীয়ার তিথি শুরু হচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে বৃহস্পতিবারই ভাইফোঁটার আয়োজন চলছে জোর কদমে। আর তার ঠিক আগেই বুধবার বিকালে বর্ধমান শহরের সদরঘাট রোডের ম্যালেরিয়া মোড়ে কয়েকজন যুবক যুবতীর উদ্যোগে আয়োজিত হল গণ ভাইফোঁটা।
এই ভাই-ফোঁটায় সৃষ্টি হল নজীর। ধর্মান্ধতার উর্ধে উঠে এই ৫০ জনের ভাইফোঁটাকে আক্ষরিক অর্থেই সম্প্রীতির অনন্য নজিরে পরিণত করলেন। বুধবার এই মঞ্চে হাজির করা হয়েছিল বর্ধমান শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫০ জন বর্ষীয়ান, অবহেলিত মানুষকে। এঁদের মধ্যে অনেকেই অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। কেউ বয়সের ভাড়ে কোনও কাজই করতে পারেন না। কয়েকজন দিনমজুর, শ্রমিকের কাজ করেন।
দু’জন এসেছিলেন যাঁদের চলাফেরার শক্তিও ঠিক ছিল না। কিন্তু তাঁরা শারীরিক মানসিক কষ্টকে দূরে সরিয়ে ভাইফোঁটায় হাজির হলেন। হাজির ছিলেন একজন ক্যান্সার আক্রান্তও। গড়ে উঠল সম্প্রীতির নজির। এ দিন এই ভাইফোঁটায় কেরিনা বিবি ফোঁটা দিলেন মহাদেব বাউড়িকে। সুজাতা পাল দিলেন শেখ সরিফের কপালে। ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় কপালে পড়ল চন্দনের শীতল ফোঁটা।
একইভাবে ফোঁটা নিলেন শেখ রহমান, মণ্টু সেখ প্রমুখরাও। হিন্দু -মুসলিম সব মিলে মিশে একাকার হয়ে গেল বর্ধমানের এই গণভাইফোঁটায়। কেরিনাবিবি জানিয়েছেন, ভাই-ফোঁটার কথা জানতেন। কিন্তু কখনও অংশ নেননি। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এই প্রথম এক অনাবিল আনন্দ মনকে ভরিয়ে তুলল। ভাইয়ের কপালে তার মঙ্গলকামনায় এই ফোঁটা দিতে গিয়ে তিনি সত্যিই বিচলিতবোধ করছিলেন।
অপরদিকে, মহাদেব বাউড়ি জানিয়েছেন, গতবার তিনি এই সংস্থার উদ্যোগে প্রথম ভাইফোঁটা গ্রহণ করেছিলেন। এবারে কেরিনা বিবির হাত থেকে ফোঁটা নিলেন। দারুণ উপলব্ধি, অভাবনীয়। আয়োজক প্রলয় মজুমদার আরও জানিয়েছেন, এ দিন যাঁরা এই ভাইফোঁটায় হাজির হয়েছিলেন তাঁরা কেউ কাউকে চিনতেনই না। অথচ ভাইফোঁটায় অংশ নিয়ে একে অপরের সুখ দুঃখের কতই না কথা বললেন, দিনভর আলোচনা করলেন। প্রলয়বাবু জানিয়েছেন, এই ভাইফোঁটা উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল দুপুরের খাবারেরও। ভাত, ডাল, মুরগীর মাংস, চাটনি, পাঁপড়, রসগোল্লা এবং ল্যাংচা দিয়ে দুপুরের মেনুকে। ভাইফোঁটায় বোনেরা দাদা এবং ভাইদের হাতে তুলে দিলেন পাঞ্জাবী এবং জামা। ভাই ও দাদারা বোনেদের হাতে তুলে দিলেন শাড়ি। অভিনব এই ভাইফোঁটা দেখতে হাজির হয়েছিলেন শহরের বহু মানুষজন।