Digha: অপেক্ষা আর কয়েকদিন, শীঘ্রই চালু হচ্ছে দিঘা-কাঁথি ‘মেরিন ড্রাইভ’
Digha Contai Marine Drive: সৈকত সরণি ধরে উদয়পুর থেকে নিউ দিঘা, ওল্ড দিঘা, দিঘা মোহনা, নায়েকালী, শঙ্করপুর, জলধা, তাজপুর, মন্দারমণি এবং শৌলা হয়ে কাঁথি পৌঁছানো শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা।
কাঁথি : বহু প্রতীক্ষিত দিঘা- কাঁথি মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, করোনা এবং অন্যন্য কারণে বেশ কিছু দিন কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাস রাত-দিন এক করে দিয়েছিলেন কর্মরত ইঞ্জিনিয়ররা। আর তাঁদের এই অবিরাম শ্রমের ফলে বহু প্রতীক্ষিত এই প্রকল্প এখন প্রায় শেষের দিকে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই স্বপ্নের প্রকল্পের নাম দিয়েছেন সৈকত সরণি। রাজ্যবাসীর কাছে এ এক বড় পাওনা। পশ্চিমবঙ্গের জন্য এই প্রকল্প সম্পূর্ণ হওয়া এক বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। এর মাধ্যমে সৈকত শহরের পর্যটন ক্ষেত্রে এক নয়া দিগন্ত খুলে যাবে বলেই মত তাঁদের। সৈকত সরণি ধরে উদয়পুর থেকে নিউ দিঘা, ওল্ড দিঘা, দিঘা মোহনা, নায়েকালী, শঙ্করপুর, জলধা, তাজপুর, মন্দারমণি এবং শৌলা হয়ে কাঁথি পৌঁছানো শুধু এখন সময়ের অপেক্ষা।
গত এক দশকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বিশ্ব দরবারে নতুন এক পরিচিত পেয়েছে সৈকতনগরী দিঘা। সৈকত সরণির কাজ সম্পূর্ণ হলে তা যে কেবল এই দিঘা-শঙ্করপুর, তাজপুর-মন্দারমণির পর্যটনের মানকে এগিয়ে নেবে তা নয়, বরং এটা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সংলগ্ন এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানকেও উন্নত করবে। সৈকতের পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সৈকত সরণি হবে নতুন একটি মাইলফলক। উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৫ সালে দিঘা থেকে কাঁথি পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। এ জন্য ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয় রাজ্যের তরফে। সমুদ্রবাঁধের ওপর দিয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সে কাজ এখন প্রায় সম্পূর্ণ করে ফেলেছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ।
মাঝে শঙ্করপুর থেকে জলধা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার বাঁধের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ঝাপটায়। সেখানে সেচ দফতর দ্রুততার সঙ্গে মেরামতির কাজ করছে। এছাড়া মন্দারমণির একাংশে বাকি রয়েছে রাস্তা তৈরির কাজ। রাস্তার কাজ ছাড়াও সমুদ্রে সংযোগকারী শঙ্করপুর মৎস্যবন্দর লাগোয়া নায়েকালী, তাজপুর সৈকত লাগোয়া জলধা এবং কাঁথির শৌলাতে তিনটি সেতু তৈরির কাজও প্রায় সম্পূর্ণ করে এনেছে পূর্ত দফতর (হাইওয়ে)। তিনটি সেতুর মধ্যে নায়েকালী সেতু ও অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ ইতিমধ্যে পুরোপুরি সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। জেলা পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (হাইওয়ে) অনুপ মাইতি বলেন, “নায়েকালী সেতুর কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। জলধা এবং শৌলার সেতুগুলির প্রায় ৮০ ভাগ কাজ হয়ে গেছে। বাকি কাজ জুনের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।”
নায়েকালীর নির্মিত সেতুটিকে এক নজর দেখতে এখন প্রতিদিনই বহু পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন। সেতু পেরিয়ে অনেকে যাতায়াত করছেন শঙ্করপুরে। সৈকত সরণি পার হতে হতে কখনও হারিয়ে যাওয়া সবুজের মাঝে, কখনও বা মন চাইবে মোহনার জলে গা ভাসতে। দিগন্তবিস্তৃত জলাভূমিতে মাছ চাষ আর নানা পাখির দেখাও মিলবে। মুর্শিদাবাদ থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক বলেন ,”মেরিন ড্রাইভের ওপর উঠলেই মনে হয়, যেন স্বর্গে চলে এসেছি। সমুদ্রের বুকে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত আছে। আর আছে ম্যানগ্রোভের সৌন্দর্য। মাছ ধরছেন মৎস্যজীবীরা। মৎস্য খামারে পাখির ভিড়। এছাড়া বন্দরে আসা-যাওয়া রয়েছে লঞ্চ-ট্রলারের। যা সকলেরই মন ছুঁয়ে যাবে।” মন্ত্রী অখিল গিরি এই বিষয়ে বলেন, “সৌন্দর্যে ভরা এই মেরিন ড্রাইভ মানুষেরই জন্য খুলে দেওয়া হবে খুব শীঘ্রই। পর্যটক আনাগোনা বাড়ছে ইতিমধ্যেই। অল্প কিছু কাজ বাকি রয়েছে, সেটাও শেষ হবে সত্বর।”
আরও পড়ুন : Alipurduar: কাজের টোপ দিয়ে একই পরিবারের ৮ জনকে বিক্রির অভিযোগ