Tamluk: লুঠের সোনা নিজের দোকানে ডিসকাউন্টে বিক্রি! তমলুকের সোনার দোকানে ডাকাতির রহস্য লুকিয়ে দাসপুরে
Tamluk Dacoity: দোকানের ভিতরে দুষ্কৃতী ঢুকেই প্রথমে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হাতে পায়ে বেঁধে মুখের সেলোটেপ লাগিয়ে দোকানের কর্মীকে বেঁধে রেখে ডাকাতি করে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ওই তিন ভাড়াটে ডাকাতকে গ্রেফতার না করতে পারলেও, বাকি তিন জনকে গ্রেফতার করে তমলুক থানার পুলিশ।

পূর্ব মেদিনীপুর: তমলুকের সোনার দোকানে ডাকাতির সূত্র এবার পশ্চিম মেদিনীপুরে! ১৭২টি সিসিটিভি ফুটেজ ৮০ কিলোমিটার রাস্তায় বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের গতিবিধি শনাক্ত। ডাকাতির সোনা কেনার চক্রব্যুহ ভেদ করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। তদন্তে জানা গিয়েছে, দাসপুরের ওই সোনার দোকানে সোনায় মিলত প্রচুর পরিমাণ ডিসকাউন্ট! কিন্তু কীভাবে? আসলে ওই দোকানের মালিক আবার সোনা লুঠ করে এনে বিক্রি করতেন! তদন্তে এমনই তথ্য উঠে আসছে পুলিশের হাতে।
গত কয়েকদিন আগে জেলা সদর তমলুকে সোনার দোকানে দিনের বেলায় ডাকাতির ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায়। দিনের আলোতে হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ডাকাতি সোনার দোকানে এই ঘটনায় প্রশ্ন ওঠে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। তমলুকের মিলননগর বাজারে একটি সোনার দোকানে ডাকাতি করেছিল তিন দুষ্কৃতী। কয়েক লক্ষ টাকার সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দেয় তারা। ঘটনার পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় তমলুক থানা এবং কোলাঘাট থানার পুলিশ আধিকারিকও।
দোকানের ভিতরে দুষ্কৃতী ঢুকেই প্রথমে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হাতে পায়ে বেঁধে মুখের সেলোটেপ লাগিয়ে দোকানের কর্মীকে বেঁধে রেখে ডাকাতি করে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ওই তিন ভাড়াটে ডাকাতকে গ্রেফতার না করতে পারলেও, বাকি তিন জনকে গ্রেফতার করে তমলুক থানার পুলিশ। তাদের হেফাজতে নিয়ে নিয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের কাছ থেকে উঠে আসে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খুকুড়দহ লক্ষী বাজারের সোনা দোকানি জয়ন্তী জুয়েলার্সের মালিক দেবাশিস সামন্তের নাম।
এই ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ ১৭২টি সিসিটিভি ফুটেজ ৮০ কিলোমিটার রাস্তায় বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের গতিবিধি শনাক্ত করে। দেখা যায়, ডাকাতির পর তারা খারুই ও কোলাঘাট হয়ে দাসপুরের দিকে পালিয়ে যায় এবং পথে একাধিকবার বাইক ও পোশাক বদলায়। এই ঘটনায় পাঁশকুড়ার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা বাপ্পাদিত্য বাগ, দিলীপ মাইতি ও দাসপুরের সোনার দোকানের মালিক শ্রীকান্ত মাঝি আগেই ধরা পড়েছিল পুলিশের জালে। তাঁদের জেরা করেই উঠে আসে দাসপুরের খুকুড়দা লক্ষ্মীবাজারের কথা। এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী দেবাশিস সামন্ত ও গোপিগঞ্জের আরেক সোনার দোকানের ম্যানেজার সুশান্ত মাজির নাম।
সোমবার দুপুরে দাসপুর থানা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের যৌথ অভিযানে দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়। কোলাঘাট পাঁশকুড়া ও দাসপুর থানার পুলিশের যৌথ উদ্যোগে দেবাশিস সামন্ত ও ওপর এক দোকানের ম্যানেজারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও দেবাশিসের দাবি, সমস্ত নিয়ম মেনেই তিনি এই ব্যবসা করছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতদের কাছ থেকে ইতিমধ্যেই প্রায় দেড়শো গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিছু সোনাও উদ্ধার হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
যাঁরা ওই দোকান থেকে সোনা কিনেছেন তাঁরা তো রীতিমতো স্তম্ভিত। এরকমই এক খরিদ্দার বললেন, “ওই দোকানে সোনাতে এমনিতেই আর পাঁচটা দোকানের থেকে অনেকটা ডিসকাউন্ট দেয়। কিন্তু কখনও ভাবিনি তো, এমন হবে। সোনা কোথা থেকে এসেছে।”
