Srijan Bhattacharya: প্রচারে সৃজন, দেখা পেয়েই বাম-ISF জোট ভেস্তে যাওয়ায় বিমানকে কাঠগড়ায় তুললেন বৃদ্ধ

সিজার মণ্ডল | Edited By: জয়দীপ দাস

May 09, 2024 | 11:51 PM

Srijan Bhattacharya: পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে ভাঙ্গড়ের রাজনীতিতে অনেক পট পরিবর্তন হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ভাঙড় দুই ব্লকের দাপুটে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর একের পর এক মামলার পাহাড় তাঁর বিরুদ্ধে।

Srijan Bhattacharya: প্রচারে সৃজন, দেখা পেয়েই বাম-ISF জোট ভেস্তে যাওয়ায় বিমানকে কাঠগড়ায় তুললেন বৃদ্ধ
সৃজন ভট্টাচার্য
Image Credit source: TV-9 Bangla

Follow Us

ভাঙড়: বুধবার ভাঙড় ২ ব্লকে চণ্ডীহাট এলাকায় প্রচার করতে গিয়ে অদ্ভুত প্রশ্নের মুখে পড়েন যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। যে গ্রামে তিনি প্রচার করছিলেন সেই গ্রামটি আবার ISF এর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। সেখানেই এক বৃদ্ধ প্রশ্ন করেন কেন আইএসএফ এবং বামেদের জোট হল না? ওই বৃদ্ধ জোট না হওয়ার জন্য বামফ্রন্ট চেয়ারপার্সন বিমান বসুকেও দোষারোপ করেন। আকস্মিক ওই পরিস্থিতি হাসিমুখেই মোকাবিলা করেন সৃজন। কিন্তু, ওই খুব সাধারণ বৃদ্ধের প্রশ্নটা আজ গোটা ভাঙড়ের বুকেই একটা বড় প্রশ্ন। প্রসঙ্গত, ২০২২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একদম বুথ স্তর থেকে বাম, ISF, কংগ্রেসের সংযুক্ত মোর্চার জোট ভোট পেয়েছিল ১ লাখ ৯ হাজারের কিছু বেশি। তৃণমূল প্রার্থী পেয়েছিলেন ৮৩ হাজার ভোট। ২৬ হাজারের কিছু বেশি ভোটের মার্জিন ছিল নওশাদ সিদ্দিকীর। এই জয় যে রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ, গত বিধানসভায় একদিকে ছিল প্রবল বিজেপি হাওয়া। তার মাঝখানে সরল পাটিগণিতের হিসাবে কোনওভাবেই বাম-আইএসএফ জোটের ভাঙড়ে জয়ের সম্ভাবনা নেই বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন অনেকেই। 

কারণ হিসাবে উঠে আসছিল ২০১৯ সালের ভোটের কথা। সেই লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী ২ লক্ষ ৯৫ হাজারেরও বেশি ভোটের মার্জিনে জয়ী হন। আর সেই মার্জিনের ১ লক্ষ ১২ হাজার মার্জিনই এসেছিল ভাঙড় বিধানসভা থেকে। সেই বিপুল মার্জিন ছাপিয়ে ২৬০০০ ভোটে নওশাদের জয় রাজনৈতিকভাবে গোটা ভাঙড়কে বাংলার রাজনীতিতে একটা আলাদা জায়গা করে দিয়েছিল। বিধানসভা নির্বাচনের পরে পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাম আইএসএফ জোটকে ভাঙড়ের প্রতি ইঞ্চি মাটিতে লড়াই করতে দেখা গিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে যাদবপুর লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভাঙড় যে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ তা মানছেন প্রায় সব রাজনৈতিক বিশ্লেষকই। 

তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে ভাঙ্গড়ের রাজনীতিতে অনেক পট পরিবর্তন হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ভাঙড় দুই ব্লকের দাপুটে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর একের পর এক মামলার পাহাড় তাঁর বিরুদ্ধে। আরাবুল ইসলামের এলাকার ‘রাজ’ হাতে নিয়েছেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙড়ের রাজনীতিতে ক্রমাগত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছেন আরেক তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদ। এদিকে কলকাতা হাইকোর্টে আরাবুল ইসলামের আইনজীবী সরাসরি অভিযোগ করেছেন শওকত মোল্লার ষড়যন্ত্রেই একের পর এক মামলা হয়েছে আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে। যদিও ভাঙড়ের বুকে আরাবুল ইসলামের ছেলে হাকিমুল থেকে শুরু করে আরাবুল ঘনিষ্ঠ নেতা বা কর্মীদের অনেককেই দেখা যাচ্ছে শওকতের সঙ্গেই একই মঞ্চে বা শওকতের অনুগামী হয়েই থাকতে। 

কিন্তু, তৃণমূলের অন্দরে খবর, নেহাৎ চাপে পড়ে শওকতের শাসন মেনে নিচ্ছেন আরাবুল ঘনিষ্ঠরা। ফলে আরাবুলের প্রভাব যে এলাকাগুলিতে রয়েছে সেখানে আরাবুল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতাদের সক্রিয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এই পরিস্থিতিতে ভাঙড়ে তৃণমূল কতটা এগিয়ে থাকে এখন সেটাই দেখার। 

Next Article