Fishermen Registration Card: দুয়ারে সরকারে মৎস্যজীবী কার্ডেই বিস্তর গোল! ২ মাসের ভাতাই পাচ্ছেন না আসল মৎস্যজীবীরা
Fishermen Registration Card: রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের নামকরণ করা হয় ‘সমুদ্রসাথী’। রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় তিন লক্ষ মৎস্যজীবী এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে বলে ঘোষণা করে সরকার। দুয়ারে সরকারে শিবিরে নাম নথিভুক্ত করা হয়।
ডায়মন্ড হারবার: ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ৬১ দিন সামুদ্রিক মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে। ফলে এই দু’মাস খুবই আর্থিক সঙ্কটে পড়েন সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীরা। সেই ভাবনা থেকে রাজ্য বাজেটে এপ্রিল ও মে মাসের জন্য সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের ভাতা ঘোষণা করা হয়। প্রতি মাসে ৫ হাজার করে দু’মাসে ১০ হাজার টাকা। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পের নামকরণ করা হয় ‘সমুদ্রসাথী’। রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের প্রায় তিন লক্ষ মৎস্যজীবী এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে বলে ঘোষণা করে সরকার। দুয়ারে সরকারে শিবিরে নাম নথিভুক্ত করা হয়। সম্প্রতি সেই তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তালিকা ভুলে ভরা বলে অভিযোগ বিভিন্ন মৎস্যজীবী সংগঠনের। এমনকি প্রকৃত সামুদ্রিক মৎস্যজীবীরা বঞ্চিত বলেও অভিযোগ তাঁদের। তালিকা সম্পূর্ন না হওয়ায় এপ্রিল ও মে মাসে কোন ভাতা দেওয়া যাবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মৎস্যজীবী সংগঠনকে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে।
ওয়েস্টবেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সহ সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকল্পের বিষয়টি ঘোষণা করেছেন। যাঁরা মৎস্যজীবী, মেরিন ফিশারম্যান ওঁরাই সুবিধাটা পাবে। তবে মৎস্যজীবীদের অনেকেই যাঁরা মেরিন ফিশারম্যান বলে আবেদন জানিয়েছিলেন, যখন কার্ড আসে দেখা যায়, তাঁরা মৎস্যচাষি, মৎস্য ব্যবসায়ী, মিষ্টি জলে মাছ চাষ করেন… সেরকম এসেছে। তাঁরা তো সুবিধাটা পাবেন না। কার্ডটাই ভুল চলে এসেছে। যাঁদের কার্ডে ভুল রয়েছে, তাঁরা আবেদন করতে পারবেন নির্বাচনের পরে।”
রায়দিঘি ফিশারম্যান ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রবীন দাস বলেন, “দু’মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, সরকারের সিস্টেমের ভুলে, বায়োমেট্রিক কার্ডে ভুল, দুয়ারে সরকারে মৎস্যজীবী কার্ড করা হয়েছিল, সেখানে ৩০ শতাংশ হয়েছে, ৭০ শতাংশ হয়নি… প্রকৃত মৎস্যজীবীরা কার্ডটাই পাননি।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ মহকুমাতে প্রায় লক্ষাধিক সামুদ্রিক মৎস্যজীবীর বাস। এদের অনেকেই দুয়ারে সরকার শিবিরে নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। কিন্তু তথ্যগত ভুলের জন্য আদৌ ভাতা পাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এপ্রিল ও মে মাসের মধ্যে ভাতা পাওয়া নিয়েও সংশয় মৎস্যজীবীদের গলায়।
মথুরাপুর লোকসভার সব কটি বিধানসভাতে কমবেশী সামুদ্রিক মৎস্যজীবীদের বাস। এবারের বাজেটে সমুদ্রসাথী ঘোষণার পর কাকদ্বীপে মৎস্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বড় সভা করেছিল তৃণমূল। এবারের ভোটে এই কেন্দ্রে অন্যতম ইস্যু সমুদ্রসাথী। কিন্তু সেই ভাতা চালু না হওয়ায় বিজেপি এই প্রকল্পকে ভাঁওতা বলছে। তালিকায় তৃণমূল নেতাদের নাম নথিভুক্ত হয়েছে বলে তোপ বিজেপি প্রার্থী অশোক পুরকাইতের। তবে তৃণমূল প্রার্থী বাপি হালদার জানিয়েছেন, নির্বাচন বিধি চালু হওয়ায় কিছু দেরি হচ্ছে। তবে আশ্বস্ত করছি, সকলেই টাকা পাবেন। অন্যদিকে ভোট মিটলেই ভুল সংশোধন করে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন জেলার সহকারী মৎস্য আধিকারিক।
এ প্রসঙ্গে জেলার সরকারি মৎস্যজীবী আধিকারিক সুরজিৎ বাগ বলেন, “দুয়ারে সরকারে প্রচুর সময় দেওয়া হয়েছে। ফর্ম ফিলাপের সময়ে ওঁরা কী করেছেন, সেটা তো আমরা বলতে পারব না। ডাটা এন্ট্রি অপারেটরা ডাটা এন্ট্রি করেছে। তারপর কী হয়েছে, সেটা দেখতে হবে। আমরা বিষয়টা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে এখন তো নির্বাচনের সময়। এই মুহূর্তে তো এমনিতেই কিছু করা যাবে না।”