Kakdwip: ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ঘাড়ধাক্কা, দেখুন স্কুলে তৃণমূল নেতার ‘দাদাগিরি’-র ভিডিয়ো
Allegation against TMC leader: অভিযোগ অস্বীকার করে স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি বললেন, "উনি ভ্রমণের নামে টাকা তুলছিলেন। এমসির অনুমতি নেননি। তাঁর কাছে রিসিট আনতে গেলে উনি কাগজটা মুড়ে ফেলে দেন। ওই কাগজ তুলে আমি যখন বলি, সই করে দিন, তখন উনি আমায় ঠেলে দেন। উনি আমায় মারতে গিয়েছিলেন। আমি ঠেকাচ্ছিলাম।"

কাকদ্বীপ: স্কুল চলছে। আর স্কুলের মধ্যে পড়ুয়াদের সামনেই ঘাড়ধাক্কা দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন একজন। যিনি ঘাড়ধাক্কা দিচ্ছেন, তিনি অন্য কেউ নন। ওই স্কুলেরই পরিচালন সমিতির সভাপতি। শুধু তাই নয়, তিনি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যও। স্কুলে তৃণমূল নেতার এই ‘দাদাগিরি’-র ভিডিয়ো সামনে এসেছে। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের বীরেন্দ্র বিদ্যানিকেতনের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়তেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা বলছেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকই তাঁকে মারার চেষ্টা করেন। তিনি তা ঠেকাচ্ছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত স্কুলের ভ্রমণের জন্য পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে। পরিচালন সমিতিকে না জানিয়ে কেন ভ্রমণের জন্য পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে, এই দাবি জানিয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিলনকান্তি পালের উপর চড়াও হন স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য ত্রিদিব বারুই। প্রধান শিক্ষককে পড়ুয়াদের সামনেই ঘাড়ধাক্কা দিতে দিতে নিয়ে যাওয়ার ছবি সামনে এসেছে। এই নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মৃণালকান্তি বলেন, “অনেক মিথ্যে কথা লিখে একটা কাগজ এনেছিলেন। উনি বলেন, আপনি এমসি (পরিচালন সমিতি)-র অনুমতি ছাড়া ট্যুরের জন্য টাকা পয়সা তুলেছেন। আমি কাগজে সই না করায় অফিসের মধ্যে চেয়ার টেনে সরিয়ে আমার উপর বলপ্রয়োগ করেন। ঘাড়ে আঘাত করেন। আমাকে ঘাড়ে প্রচণ্ড জোরে আঘাত করতে করতে নিয়ে যান। অফিসের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে, তার সিসিটিভি ফুটেজ ডিলিট করা হয়েছে।” অফিসের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজই সামনে এসেছে। হাতে চোট পেয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনায় অবশ্য লজ্জিত নন ওই তৃণমূল নেতা। পাল্টা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধেই হামলার অভিযোগ করলেন। স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি বললেন, “উনি ভ্রমণের নামে টাকা তুলছিলেন। এমসির অনুমতি নেননি। তাঁর কাছে রিসিট আনতে গেলে উনি কাগজটা মুড়ে ফেলে দেন। ওই কাগজ তুলে আমি যখন বলি, সই করে দিন, তখন উনি আমায় ঠেলে দেন। উনি আমায় মারতে গিয়েছিলেন। আমি ঠেকাচ্ছিলাম।”

অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ত্রিদিব বারুই
শিক্ষাঙ্গনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার নিন্দা করে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতা কৌশিক দাস বলেন, “এই ঘটনা প্রমাণ করে তৃণমূল সরকার শিক্ষিত সমাজের পক্ষে নয়। এরা শিক্ষক বিরোধী। আগে চাকরি চুরি করেছে। এখন বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকদের নিগ্রহ করছে।” ঘটনার নিন্দা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “রাজ্যের শিক্ষাক্ষনে এই সন্ত্রাস তৃণমূল কংগ্রেসের আসল চেহারা উন্মোচন করছে।”
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আসার পর কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “বিষয়টি নজরে এসেছে। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিচালন সমিতির সভাপতি ত্রিদিব বারুইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে।”
