আমার জন্য ‘হেডেক’ হয়েছে শুভেন্দুর, স্যারিডন খান: Krishna Kalyani
BJP: "বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে কৃষ্ণ কল্যাণীকে বলার সুযোগ দিয়েছিলাম। তিনি বাজেট নিয়ে কিছুই বলেননি, সয়াবিন চাষ নিয়ে বলেছিলেন! শুনে আমার মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছিল।''
রায়গঞ্জ: শুক্রবারই সাংবাদিক বৈঠকে করে রায়গঞ্জের সাংসদ তথা প্রাক্তন মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীকে আক্রমণ করে বিজেপি (BJP) ছাড়ছেন বলে ঘোষণা করেছেন রায়গঞ্জের (Raiganj) বিধায়ক (MLA) কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani)। অভিযোগ করেন, সাংসদ হওয়ার দেবশ্রী এলাকা থেকেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছেন। এমনকী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন। এসব বলে কৃষ্ণ পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে যাবেন কিনা তা নিয়ে যখন জল্পনা তুঙ্গে, তার মাঝেই শুরু হল রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Aadhikari) কে উদ্দেশ্য করে তাঁর আক্রমণ। তিনি শুভেন্দুর মাথা ব্যথার কারণ বলে মন্তব্য করে তাঁকে স্যারিডন খাওয়ার পরামর্শ দিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী।
কিছুদিন আগে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে রায়গঞ্জের এই বিধায়ককে শো-কজ নোটিস দেয় রাজ্য বিজেপি। তার অব্যবহিত পরে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করে দেন কৃষ্ণ। শুক্রবার সকালে রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক দল ছাড়ার কথা ঘোষনা করার পরেই তাঁকে শুভেন্দু অধিকারী কটাক্ষ করেছিলেন।
শুক্রবার বিধাননগরে দলের নয়া রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে সংবর্ধনা দেওয়ার অনুষ্ঠানে দলত্যাগীদের উদ্দেশ্যে চাঁচাছোলা আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখান থেকে বাদ যাননি কৃষ্ণও। তাঁর নাম করেই বিরোধী নেতা বলেন, “বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে কৃষ্ণ কল্যাণীকে বলার সুযোগ দিয়েছিলাম। তিনি বাজেট নিয়ে কিছুই বলেননি, সয়াবিন চাষ নিয়ে বলেছিলেন! শুনে আমার মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছিল।”
স্বাভাবিক ভাবেই এই কটাক্ষ গায়ে লেগেছে কৃষ্ণের। শুভেন্দুর ব্যঙ্গের জবাবে পাল্টা শনিবার রায়গঞ্জের বিধায়কের মন্তব্য, “মাথা হেঁট হয়নি, আমি দল ছাড়ায় ওঁনার হেডেক হয়ে গেছে, ওঁনাকে স্যারিডন খেতে পরামর্শ দেব।”
কৃষ্ণ যোগ করেন, “আমি ২০১৭ সালে রায়গঞ্জে সয়াবিন চাষ করে দেখিয়েছিলাম। এখানে সয়াবিন চাষ যে সম্ভব সেটাই দেখিয়েছিলাম। তৎকালীন উত্তর দিনাজপুর জেলা শাসক আয়েশা রানি এই চাষ নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। সয়াবিন অর্থকরী ফসল। এছাড়াও বাজেট অধিবেশনে রায়গঞ্জ বারসই রাস্তায় সংযোগকারী সেতুর জন্য বলেছিলাম। কারণ, এতে রায়গঞ্জের মার্কেটে বারসই যোগাযোগে ব্যবসায়িকদের লাভ হবে তাই। আর বাজেটে এমএসএমই শিল্পগুলোয় জিএসটিতে রাজ্যের অংশে ছাড়ের কথাও বলেছিলাম। পাশাপাশি রাজ্যে অর্গানিক চাষে বরাদ্দ বাড়াতে বলেছিলাম। এইসব কিছুর জন্য শুভেন্দুবাবুর মাথা হেঁট হচ্ছে!”
তার পরেই কৃষ্ণ কল্যাণীর মন্তব্য, “নাকি আমি দল ছাড়াতে ওঁনার হেডেক হচ্ছে? ওনাকে স্য়ারিডন দিতে হবে।” এদিকে কৃষ্ণ বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণার পর শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘দল ছাড়লেন তো বিধায়ক পত থেকে পদত্যাগ করে দেখান।’ এই নিয়েও শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে কৃষ্ণ বলেন, “আগে উনি নিজের বাড়ির দুটো পেন্ডিং কেস মিটিয়ে নিন। পরে আমার কেস নিয়ে ভাবুন।” ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, শুভেন্দুর বাবা সাংসদ শিশির অধিকারী ও তাঁর ভাই সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকেই কটাক্ষ করলেন বলে মনে করা হচ্ছে। আর কৃষ্ণের এই শুভেন্দুকে আক্রমণ কি এবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত? ওয়াকিবহল মহল তো সেটাই মনে করছেন। যদিও কৃষ্ণ জানান, তিনি এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।
আরও পড়ুন: Nusrat Jahan: ‘ছেলের কমপ্লেন থাকবে, মানুষেরও তো থাকতে পারে’, ৬ মাস পর বসিরহাটে পা রাখলেন সাংসদ