Street Children: পাঞ্জাবি-টোপর পরে প্রথমবার ভাত খেল ‘পথের গণেশ’, রেল পুলিশের এমন উদ্যোগে মায়ের চোখে জল
Howrah GRP: মা কাজ সেরে ফাঁকা হলে স্টেশন চত্বরেই মায়ের সঙ্গে রাত কাটে গণেশের। ধীরে ধীরে আশেপাশের সকলের খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে সে। তারই অন্নপ্রাশন হয় এদিন।
হাওড়া: জন্মের পর বাবাকে দেখেনি। মায়ের সঙ্গে রেলস্টেশন চত্বরে থাকে পুঁচকে গণেশ। মা সারাদিন এলাকার একটা হোটেলে কাজ করে। গণেশ (Street Children) তখন রেলের চাইল্ড হেল্পলাইন ডেস্কে থাকে। পুলিশ কাকু, পুলিশ দিদিদের কোলে কোলে সময় কাটে। রাতে আবার মায়ের বুকে নিশ্চিন্তির ঘুম। সেই গণেশ সাতমাসে পড়ল। রবিবার রেলস্টেশনে হল তার অন্নপ্রাশনও। বেশ ধুমধাম করেই তার আয়োজন করে চাইল্ড হেল্পলাইন, হাওড়া জিআরপি ও আরপিএফ। মাথায় টোপর, গায়ে পাঞ্জাবি পরে প্রথম ভাত খেল গণেশ। মাস সাতেক আগে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন টুম্পা দাস। সন্তান জন্মের আগেই মারা যান স্বামী। স্টেশনের চাইল্ড লাইন সংস্থা এবং হাওড়া জিআরপি আধিকারিকরা মা ও সন্তানকে নিজেদের উদ্যোগেই হাসপাতালে নিয়ে যান। সুস্থ হয়ে ফিরেও আসেন। স্টেশনচত্বরে একটি হোটেলে কাজ নেন গণেশ-জননী। ছোট্ট গণেশের ভার নেন চাইল্ড লাইনের কর্মীরা।
মা কাজ সেরে ফাঁকা হলে স্টেশন চত্বরেই মায়ের সঙ্গে রাত কাটে গণেশের। ধীরে ধীরে আশেপাশের সকলের খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে সে। তারই অন্নপ্রাশন হয় এদিন। স্টেশনে চাইল্ড লাইনের অফিসে ছোট্ট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ধুমধাম করে মুখে ভাত দেওয়া হয় গণেশের।
হাওড়া জিআরপি ইন্সপেক্টর সিদ্ধার্থ রায় জানান, আর পাঁচটা শিশুর যখন অন্নপ্রাশন হয়, তাহলে স্টেশনচত্বরে থাকা শিশুরা কেন বঞ্চিত হবে? এই ভাবনা থেকেই আজকের এই মন ভালো করা অনুষ্ঠান। অন্যদিকে চাইল্ড লাইনের ডিরেক্টর জর্জসি জে জানান, পথশিশুরা যাতে বিপথগামী না হয়, তার জন্য সবসময় নজর রাখেন তাঁরা। এটাও তারই একটা অঙ্গ হিসাবে ধরা যেতে পারে। ছেলে যখন ভাত খাচ্ছে, পুলিশকাকুরা এগিয়ে দিচ্ছেন মুখে এগিয়ে দিচ্ছেন খাবার, চোখ ঝাপসা মায়ের। এভাবেই একদল পুলিশ কর্মীর সঙ্গে ছোট্ট গণেশের জীবন বাঁধা পড়ল এক বন্ধনহীন গ্রন্থিতে। এই গ্রন্থি স্নেহের, বাৎসল্যের, নিখাদ- নিঃস্বার্থ ভালবাসার।