বোতল পিছু ৭ টাকা অতিরিক্ত দামের ক্ষতিপূরণ ধার্য হল ৬৬ হাজার টাকা
হোটেল কর্তৃপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট না হয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১-এ মামলার শুনানি হয়।
জলপাইগুড়ি: রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের (State consumer Court) নজিরবিহীন রায়। মিনারেল ওয়াটার বোতল পিছু ৭ টাকা অতিরিক্ত নেবার মাশুল দিতে ক্ষতিপূরণ হসেবে হোটেল কর্তৃপক্ষকে ৬৬ হাজার টাকা দিতে হল। চার বছর ধরে চলা মামলার রায় শুনে অবশেষে স্বস্তি মামলাকারী অভিমন্যু সিং-এর।
২০১৭ সালে, অভিমন্যু নামের ওই ব্যক্তি তাঁর বন্ধুদের নিয়ে ময়নাগুড়ির একটি অভিজাত রেঁস্তোরায় খেতে যান। সেখানে, বিল দিতে গিয়ে দেখেন, মিনারেল জলের বোতলের(Mineral Water) দাম ১৮ টাকার বদলে ২৫ টাকা দরে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ বোতল পিছু ৭ টাকা করে অতিরিক্ত নেওয়া হয়েছে হোটেলের পক্ষ থেকে। হোটেল কর্তৃপক্ষকে নায্য দাম নেওয়ার অনুরোধ করলেও দাম কমান না রেঁস্তোরার মালিক। বাধ্য হয়ে ওইবছরই, হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন অভিমন্যু।
২০১৭ সালে ২২ সেপ্টেম্বর, মামলার রায় দেয় জলপাইগুড়ি ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। রায়ে বলা হয়, হোটেল কর্তৃপক্ষকে বোতল পিছু সাত টাকা অর্থাৎ মোট তিনটি বোতলের একুশ টাকা ফেরত দিতে হবে। একই সঙ্গে, পনেরো হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ও যাতায়াত বাবদ তিন হাজার টাকা অভিমন্যুকে ফেরত দিতে হবে। পাশাপাশি, রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা ফান্ডে আরও কুড়ি হাজার টাকা অর্থাৎ মোট একচল্লিশ হাজার একুশ টাকা হোটেল মালিককে দিতে হবে বলে জানায় আদালত। অন্যথায়, এই টাকার উপরে আরও ৮ শতাংশ সুদ দিতে হবে বলে নির্দেশ দেয় আদালত।
হোটেল কর্তৃপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট না হয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১-এ মামলার শুনানি হয়। রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত হোটেল কর্তৃপক্ষের আবেদন খারিজ করে পূর্ব রায় বহাল রাখে। উপরন্তু আরও দশ হাজার টাকা অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয় রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত (State Consumer Court)।
বাধ্য হয়েই অবশেষে আদালতের রায় মেনে নেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিপূরণ বাবদ সুদ সমেত পুরো টাকা দুটি চেকের মাধ্যমে দিয়ে দেন তিনি। ঘটনায় হোটেল ম্যানেজার সন্দীপ মিত্র তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘সেদিন আমাদের ভুল ছিল। আমরা তখন নতুন ব্যাবসায়ী ছিলাম। আমরা যাবতীয় ক্ষতিপূরণ আদালতের মাধ্যমে মিটিয়ে দিলাম।’
আদালতের রায় উচ্ছ্বসিত অভিমন্যু জানান, যে-কোনও জিনিসের সর্বোচ্চ মূ্ল্য, জিনিসের গায়েই ছাপা থাকে। তার থেকে বেশি কেউ দাম চাইলে তা আইনত অপরাধ।
আরও পড়ুন: ২৬৫ গ্রাম ব্রাউন সুগার ও নগদ টাকা সমেত রাজারহাট থেকে গ্রেফতার ২ যুবক