US Student Visa: এবার ভারতীয় পড়ুয়াদের ফেসবুক প্রোফাইল দেখে ভিসা দেবে আমেরিকা, ফন্দিটা কী ট্রাম্পের?
মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, পড়ুয়াদের আবেদনপত্রে 'ডিএস-১৬০' ফর্ম ফিল আপ এখন থেকে বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এখানেই গত পাঁচ বছরের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স (সাবেক টুইটার)-সহ অন্যান্য সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলের 'ইউজারনেম' লিখতে হবে আবেদনকারী পড়ুয়াকে। তবে পাসওয়ার্ড দিতে হবে না। একইসঙ্গে পড়ুয়া তার প্রোফাইলটি 'লক' করে রাখতে পারবেন না।

এবার থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের মার্কিন ভিসা পেতে হলে গত পাঁচ বছরের সোশ্যাল মিডিয়ার যাবতীয় তথ্য দিতে হবে দূতাবাসকে। ভারতে মার্কিন দূতাবাসের তরফে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হল একথা। সোশ্যাল মিডিয়ার সব তথ্য না দিলে বা লুকালে, বাতিল হতে পারে মার্কিন মুলুকে যাওয়ার ছাড়পত্র। জাতীয় নিরাপত্তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত, মার্কিন দূতাবাসের তরফে ২৬ জুন এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে একথা জানানো হয়েছে।
মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, পড়ুয়াদের আবেদনপত্রে ‘ডিএস-১৬০’ ফর্ম ফিল আপ এখন থেকে বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এখানেই গত পাঁচ বছরের ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স (সাবেক টুইটার)-সহ অন্যান্য সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলের ‘ইউজারনেম‘ লিখতে হবে আবেদনকারী পড়ুয়াকে। তবে পাসওয়ার্ড দিতে হবে না। একইসঙ্গে পড়ুয়া তার প্রোফাইলটি ‘লক’ করে রাখতে পারবেন না। কারণ, আবেদনকারী ঠিক বলছেন কি না, সেটা মার্কিন দূতাবাসের কর্মীরা নিরাপত্তাজনিত কারণে খতিয়ে দেখতে পারেন। আসলে আবেদনকারী মার্কিন বিরোধী কোনও পোস্ট করেছেন কি না, সেটাই এভাবে দেখে নেওয়া হবে বলে মনে করছেন অনেকে। ভারতে তো বটেই, মার্কিন সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে সমালোচনায় সরব মার্কিনীদের একাংশও। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলেও মন্তব্য করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আপত্তি জানিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রীও।
Visa applicants are required to list all social media usernames or handles of every platform they have used from the last 5 years on the DS-160 visa application form. Applicants certify that the information in their visa application is true and correct before they sign and… pic.twitter.com/ZiSewKYNbt
— U.S. Embassy India (@USAndIndia) June 26, 2025
কেন আচমকা এই সিদ্ধান্ত? মার্কিন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের জন্য হোয়াইট হাউসে আসার পর থেকেই মার্কিন মুলুকে ঢোকার উপরে নানান বিধিনিষেধ লাগু হয়েছে। ট্রাম্প নিজে কয়েকটি শীর্ষ মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘অতি বামপন্থী’ বলে দাগিয়ে দেন। ক্যাম্পাসে প্যালেস্টাইনের সমর্থনে আন্দোলন করায় রোষানলে পড়তে হয়েছে, বাতিল হয়ে থাকার ছাড়পত্র। এমনকী হার্ভার্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুদান বন্ধেরও হুমকি দেন ট্রাম্প। তারপর আচমকাই বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়া। বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া গবেষণা বা উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছর আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। তাঁরা পড়েন মহা আতান্তরে। শেষমেশ সেই প্রক্রিয়া ফের শুরু হলেও এবার বিধিনিষেধ ও নজরদারি কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ।
আবেদনকারীরা বলছেন, ভিনদেশ থেকে আসা পড়ুয়া, অভিবাসীদের এখন থেকে অনেক কড়া প্রক্রিয়ার মধ্যে দিতে যেতে হচ্ছে ভিসা পাওয়ার জন্য। বিশেষত মার্কিন মুলুকে ট্রাম্প বিরোধী আন্দোলন, রাশিয়া-ইউক্রেন ও সাম্প্রতিকতম ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের আবহে। অভিযোগ উঠেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প – ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্সের ‘আপত্তিজনক’ মিম’ বানানোয় নরওয়ের পর্যটককে আমেরিকাতে ঢুকতে দেননি মার্কিন কাস্টমস আধিকারিকরা। মার্কিন অভিবাসন দপ্তর জানিয়েছে, দেশের নাগরিকদের জীবন সুরক্ষিত রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। মার্কিন গোয়েন্দাদের হুঁশিয়ারি, কেউ যদি আমেরিকাতে আসার আগে কোনও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করেন বা বেআইনিভাবে আমেরিকাতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন, তাহলে তাদের জেলের ঘানি টানতে হবে। পত্রপাঠ বিদায়ও করে দেওয়া হতে পারে। দুটোর একটাও হলে ভবিষ্যতে ওই ব্যক্তি আর কখনও আমেরিকাতে যাওয়ার আবেদন করতে পারবেন না। মার্কিন দূতাবাস এও জানিয়েছে, আমেরিকাতে যাওয়ার ‘ভিসা’ একটি বাড়তি সুবিধা বা ‘প্রিভিলেজ’, বহিরাগতদের অধিকার বা ‘রাইট’ নয়। কেউ ভিসা পাওয়ার পরেও মার্কিন গোয়েন্দারা লাগাতার নজরদারি চালিয়ে যাবেন, কোনও আইন ভাঙলে বা বেগতিক দেখলে স্টুডেন্ট বা ভিসিটর ভিসা বাতিল হতে পারে।
