AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Nagorno-Karabakh conflict: বিপাকে পড়তেই ভারতের দিকে ঝোঁক! পাকিস্তানের ‘বন্ধুু’কে কড়া জবাব নয়াদিল্লির

Nagorno-Karabakh conflict: প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, দিল্লির কাছ থেকে পিনাক ও আকাশ কিনতে চায় আজারবাইজান। তবে, সঙ্গে সঙ্গেই তাদের না বলে দেওয়া হয়েছে। লাভের পরোয়া না করেই আজারবাইজানকে না বলে দিয়েছে ভারত।

Nagorno-Karabakh conflict: বিপাকে পড়তেই ভারতের দিকে ঝোঁক! পাকিস্তানের 'বন্ধুু'কে কড়া জবাব নয়াদিল্লির
Image Credit: PTI
| Updated on: Dec 22, 2024 | 8:55 PM
Share

নয়াদিল্লি: যুযুধান দু’টো দেশ একটাই দেশের কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে বা ঘুরিয়ে বললে একটা দেশ, যুদ্ধরত দু’টো দেশকেই অস্ত্র বেচছে। এমন উদাহরণ দুনিয়ায় বিরল নয়। ভারতের কাছেও সে সুযোগ এসেছিল। কিন্তু একদিকে সৌজন্য আর অন্যদিকে পরিণত কূটনীতির পরিচয় দিয়ে দিল্লি সে প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে।

সূচনা কোথায়?

দুটো দেশের নাম আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। কাস্পিয়ান সাগরের তীরে ককেশাস অঞ্চলের এই দুটো দেশ ছিল সাবেক সোভিয়েতের অংশ। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর আলাদা হয়ে যায়। আজারবাইজানে মুসলিমদের সংখ্যা বেশি। আর্মেনিয়ায় খ্রিস্টানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু, আবার দু-দেশের সীমান্ত এলাকায় আজারবাইজানের মধ্যে নাগোরনো-কারাবাখ নামে সাড়ে ৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার একটা অঞ্চল রয়েছে, যেখানে খ্রিস্টানরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাঁরা আর্মেনিয়ার সঙ্গে জুড়তে চান। আজারবাইজানে থাকতে চান না।

নাগোরনো-কারাবাখের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের আবার নিজস্ব মিলিশিয়াও আছে। এই এলাকার দখল নিয়ে সেই ২০২০ সাল থেকেই চলছে যুদ্ধ। আগে পুতিন দুটো দেশকে সামলে-সুমলে রাখতেন। কিন্তু তিনি এখন ইউক্রেনে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় এরা তেড়েফুঁড়ে যুদ্ধে নেমে পড়েছে। আর এই যুদ্ধে আজারবাইজানের বিরুদ্ধে আর্মেনিয়ার অন্যতম হাতিয়ার ভারতের পিনাক রকেট লঞ্চার ও আকাশ মিসাইল ডিফেন্স।

কীভাবে কাজ করে হাতিয়ার দু”টি?

পিনাক হল একশো শতাংশ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার। সহজভাবে বলা যায় মেশিনগান থেকে যেমন গুলিবৃষ্টি হয়। তেমন মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার থেকে রকেটবৃষ্টি হয়। পিনাক মাত্র ৪৫ সেকেন্ডের মধ্যে পরপর ১২টা রকেট ছুড়তে পারে। শত্রুসেনাকে টার্গেট করার জন্য মেশিনগান। আর শত্রুর ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়ার জন্য মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার। জিনিসটা প্রথম তৈরি করে ডিআরডিও। লাইসেন্স নিয়ে এখন একাধিক বেসরকারি সংস্থাও পিনাক বানায়। কার্গিল যুদ্ধে পাহাড়ের ওপরের পাক সেনার বাঙ্কার ওড়াতে ভারত প্রথম এর ব্যবহার করেছিল। এখন এই অস্ত্র আরও অনেক অনেক উন্নত হয়েছে। আগে, একটা ইউনিট ১০ বছর ব্যবহার করা যেত। এখন ২০ বছর পর্যন্ত স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করা যায়। পিনাকের পাল্লা ৪০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯০ কিলোমিটার। ট্রাকে চাপিয়ে সহজেই একে যে কোনও জায়গা থেকে যে কোনও জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। উপরন্তু অস্ত্র উন্নত হলেও দাম তেমন বাড়েনি। আর আকাশ হলো মাটি থেকে আকাশে হামলা চালানোর ক্ষেপণাস্ত্র। শত্রুর যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন মাঝ আকাশে ধ্বংস করে দিতে পারে হাতিয়ার আকাশ। এর পাল্লা ২৫ কিলোমিটার।

আর এই পিনাক আর আকাশ ককেশাসের যুদ্ধে হয়ে উঠেছে গেম চেঞ্জার। এদের সামনে টিকতে না পেরে আর্মেনিয়ার কাছে জমি হারাতে শুরু করেছে আজারবাইজান। প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে খবর, দিল্লির কাছ থেকে পিনাক ও আকাশ কিনতে চায় আজারবাইজান। তবে, সঙ্গে সঙ্গেই তাদের না বলে দেওয়া হয়েছে। লাভের পরোয়া না করেই আজারবাইজানকে না বলে দিয়েছে ভারত।

কিন্তু কেন? আর্মেনিয়া প্রথম দিন থেকে ভারতীয় অস্ত্রের অন্যতম ক্রেতা। শুধু তা-ই নয়, নানা আন্তর্জাতিক মঞ্চে তারা বারবার ভারতে তৈরি অস্ত্রের কার্যকারিতা এবং এর উন্নত প্রযুক্তির কথা বলে এসেছে। তাই সৌজন্যের কথা মাথায় রেখে আর্মেনিয়ার শত্রু দেশ আজারবাইজানকে অস্ত্র বিক্রি করল না ভারত। একইসঙ্গে এই যুদ্ধে আর্মেনিয়ার পাশে রয়েছে ভারতের মিত্রদেশ ফ্রান্স। সেটাও মাথায় ছিল সরকারের। আর, উল্টোদিকে তুরস্কের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আজারবাইজান ইদানিংকালে একাধিকবার কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। বিনিময়ে পাক সেনা তাদের নাগোরনো-কারাবাখের যুদ্ধে সাহায্য করেছে। এখন তারা যদি বিপাকে পড়ে ভারতের সাহায্য চায়, তাহলে তো হয় না। আর তাই প্রস্তাবিত ডিল খারিজ করে দিতে দু-বার ভাবেনি সাউথ ব্লক।