ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ইতিমধ্যেই চতুর্থ দিন অতিক্রম করেছে। রাশিয়ান আক্রমণের মুখে তছনছ হয়ে গিয়েছে ইউরোপের এই ছোট দেশ। একমাসের বেশি সময় ধরে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ান সেনা মোতায়েনের পর বৃহস্পতিবারই ইউক্রেন আক্রমণ নির্দেশ দিয়েছিলেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়ার নিউক্লিয়ার শক্তি ডেটেরেন্স ফোর্সকে উচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই নির্দেশের কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমী দেশগুলি তাঁর দেশের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক আচরণ করছে। গোটা বিশ্বমঞ্চই যেখানে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার এই আগ্রাসন নিয়ে চিন্তিত, সেই সময়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই নির্দেশ আরও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। রাশিয়া ইউক্রেন সংক্রান্ত যাবতীয় খবর এক নজরে দেখে নিন….
রোমানিয়া ও স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতীয়দের ফেরাতে সাহায্য করার জন্য দুই দেশের প্রধানকে ধন্যবাদ জানান মোদী। আগামিদিনেও সাহায্যের অনুরোধ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দফতর (PMO) থেকে সোমবার একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সেখানেই বলা হয়েছে এদিনই নরেন্দ্র মোদী রোমানিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোলে লনেলকে ফোন করেন। যেভাবে তাঁর দেশ ইউক্রেনে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরাতে সাহায্য করেছেন, তার জন্য মোদী ধন্যবাদ জানান। ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে ফোনে ক্ষোভপ্রকাশও করেন তিনি। সার্বভৌমত্বকে সম্মান দেওয়ার উপর জোর দেন মোদী।
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ আজ পঞ্চম দিনে পড়ল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি কিয়েভে থেকে নাগরিকদের অস্ত্র তুলে নেওয়ার কথা বলেন তিনি। প্রথম থেকেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, মাথা নোয়াবেন না। দেশের এই সংকটকালে আজ জ়েলেনস্কি বলেছেন, “আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম, তখন আমি বলেছিলাম আমরা প্রত্যেকে প্রেসিডেন্ট। কারণ আমাদের সুন্দর ইউক্রেনের জন্য আমরা সকলে দায়ী। এখন দেখা গিয়েছে আমরা সবাই যোদ্ধা…এবং আমি নিশ্চিত আমরা প্রত্যেকে জিতব।”
২৪ ঘণ্টায় তৃতীয়বার রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, এদিন সন্ধেয় রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে করছেন নমো। তাঁর পৌরহিত্যে এটি তৃতীয় বৈঠক। গতকাল সন্ধের পর আজ সকালেও নরেন্দ্র মোদী এই ইস্যু নিয়ে বৈঠক করেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রী মোদী বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, বিদেশ সচিব হর্ষ ভি শ্রিংলার এবং অন্যান্য উচ্চ পদাধিকারিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি প্রায় দুই ঘণ্টা এই ইস্য়ু নিয়ে বৈঠক করেন বলে জানা গিয়েছিল। আজ সকালে ইউক্রেনের সমস্যা এবং সেখানে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকের পর জানা যায় চারজন বর্ষীয়ান মন্ত্রী ইউক্রেনের সীমন্ত দেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন। তাঁরা ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি দাঁড়িয়ে দেখবেন। এখন এই বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেদিকেই নজর সকলের।
বিস্তারিত পড়ুন : PM holding Meeting : ২৪ ঘণ্টায় তৃতীয়বার রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুতে বৈঠক নমোর
বেলারুশে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্য বৈঠক চলছে। গোটা দেশের পাশাপাশি আমেরিকাও এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের দিকে নজর রাখছে। ওয়াশিংটনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, চলতি পরিস্থিতিতে রাশিয়ার ওপর আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে আমেরিকা।
অনেকগুলি দেশ রাশিয়ান বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করেছিল। এবার ৩৬ টি দেশের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করল রাশিয়া। এরমধ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭ টি দেশ রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
রাশিয়ার বেশ কিছু প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমে সাইবার হানা হয়েছে। সাইবার হানার ফলে ওয়বেসাইট জুড়ে পুতিন বিরোধী বার্তা দেখা গিয়েছে। পুতিনের পাশাপাশি ওয়েবসাইট গুলিতেও যুদ্ধ বিরোধী বার্তাও দিয়েছেন হ্যাকাররা।
মাথা নত করবেন না প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি। ইউক্রেন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার আমেরিকার প্রস্তাব পেয়ে ‘পত্রপাঠ’ তা খারিজ করে দেন প্রাক্তন এই কমিডিয়ান। বার্তা দিয়েছিলেন সামনে থেকে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার। ভিডিয়ো বার্তাতেও দেশের জনগণকে মাতৃভূমি রক্ষায় সবধরনের পদক্ষেপ করতে বলেছিলেন জ়েলেনস্কি। আরও একবার নিজের দেশকে বাঁচাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বা ইইউ-র দ্বারস্থ হলেন ইউক্রেনিয় প্রেসিডেন্ট। সোমবার ইইউ-কে তিনি আবেদন করেছেন ‘অবিলম্বে’ ইউক্রেনেকে যেন সদস্যপদ দেওয়া হয়, কারণ ইউক্রেন বরাবরই পশ্চিমীদেশগুলির পক্ষে।
বিস্তারিত পড়ুন Russia-Ukraine Conflict: ‘আমি নিশ্চিত, এটা সম্ভব’, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে কাতর আবেদন ‘নায়ক’ জ়েলেনস্কির
রাশিয়ার নিউক্লিয়ার শক্তি ডেটেরেন্স ফোর্সকে উচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। এই নির্দেশের কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমী দেশগুলি তাঁর দেশের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক আচরণ করছে। তবে এর আঁচ যে ইউক্রেনে পড়তে পারে তা বুঝতে পেরেই রাশিয়ার শর্ত মেনে আলোচনার পথে হাঁটা ছাড়া ইউক্রেনের কাছে আর কোনও উপায় ছিল না। আজই ভারতীয় সময় দুপুর আড়াইটে নাগাদ এই আলোচনা হবে।
বিস্তারিত পড়ুন Russia-Ukraine War: বন্ধ হওয়ার পথে রক্তপাত! কূটনৈতিক চাপে বেলারুশে রাশিয়ার মুখোমুখি ইউক্রেন
ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি ও সেদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত ভারত। রবিবার রাতেই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল রাতের বৈঠকের পরও এদিন সকালে ফের একবার ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকেও রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধারকার্য নিয়েই কথা বলেন তিনি। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের তরফে ইউক্রেনের পার্শ্ববর্তী যে সমস্ত দেশের মাধ্যমে ‘অপারেশন গঙ্গা’ চালানো হচ্ছে, সেই দেশগুলিতে কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসাবে মন্ত্রীদের পাঠানো হতে পারে। ইতিমধ্যেই যে মন্ত্রীদের নাম সামনে এসেছে, তারা হলেন কেন্দ্রীয় অসামরিক উড়ানমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, প্রাক্তন উড়ানমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী, কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী কিরণ রিজিজু, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভিকে সিং।
বিস্তারিত পড়ুন: PM Modi Calls Meeting: ফের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর, ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশে পাঠানো হতে পারে মন্ত্রীদেরও
রবিবারই রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল বৈঠকে বসলে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তাবনা আনা হয়। ১১টি দেশ রাষ্ট্রসংঘের জরুরি অধিবেশনের সপক্ষে ভোট দিলেও, ভারত কোনও পক্ষের হয়েই ভোটদান থেকে বিরত থাকে। ভারত ছাড়াও চিন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহিও মতদানে অস্বীকার করেছে। রাশিয়া এই অধিবেশনের বিপক্ষে ভোট দিলেও, রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদস্যদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠই অধিবেশনের সপক্ষে ভোট দেওয়ায় জরুরি অধিবেশনের আয়োজন করা হবে। সূত্রের খবর, সোমবার থেকেই এই জরুরি অধিবেশন শুরু হতে পারে।
অপর আরেকটি টুইটে কার্ফু ওঠার পরই যেন ভারতীয়রা নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে বেরোন, সেই কথা বলা হয়েছে। ওই টুইটে বলা হয়েছে, “শেষ খবর অনুযায়ী, খারকিভ, সুমি ও কিয়েভে চরম সংঘর্ষ চলছে। এই সমস্ত শহর বা অন্যান্য যে শহরগুলিতে কার্ফু জারি রয়েছে, সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের অনুরোধ করা হচ্ছে তারা যেন কার্ফু চলাকালীন কোনওমতেই বাড়ি থেকে বের না হন। কার্ফু তুলে নেওয়ার পর এবং রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের দেখা পাওয়ার পরই আপনারা রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দিন।”
রবিবারই টুইটারে ইউক্রেনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের তরফে জানানো হয়, ইউক্রেন রেলওয়ের তরফে বেশ কয়েকটি অতিরিক্ত জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধারকারী ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিয়েভ থেকে ছাড়া এই ট্রেনগুলিতে নিখরচায় যাতায়াত করা যাবে, তবে আগে যারা পৌঁছবেন, তাদেরই জায়গা দেওয়া সম্ভব হবে। স্টেশনেই ওই বিশেষ ট্রেনগুলির ব্যবস্থা করা হয়েছে। দূতাবাসের তরফে বলা হয়েছে, কার্ফু উঠে গেলে এবং আশেপাশের মানুষের গতিবিধি যদি নজরে পড়ে, তবেই ভারতীয়দের সেই সমস্ত অঞ্চল, যেখানে সংঘর্ষ চলছে, সেখান থেকে বেরিয়ে কাছের রেল স্টেশনে পৌঁছতে বলা হচ্ছে। সেখান থেকে তারা যেন দেশের পশ্চিম অংশের উদ্দেশে রওনা দেন, তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই কোনও মতে ইউক্রেন থেকে দেশে ফিরেছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। তবে পড়াশোনার জন্য যে দেশে গিয়েছিলেন, কঠিন পরিস্থিতিতে সেই দেশ ছেড়ে আসার সময় অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখদায়ক হল না অনেক ভারতীয় পড়ুয়ারই। দেশের মাটিতে পা রাখার পর অধিকাংশ পড়ুয়ার অভিযোগ, পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছতেই বাধা দেয় ইউক্রেনীয় সীমান্তরক্ষীরা। উদ্ধারকারী বিমান ধরার জন্য়ই তারা সীমান্ত পার করছেন, এই কথা জানানোর পরও অনেককে সীমান্ত পার করতে দেননি। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্তে আটকে থাকা পড়ুয়াদের হেনস্থার শিকার হতে দেখা যাচ্ছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ইতিমধ্যেই চতুর্থ দিন অতিক্রম করেছে। চারদিন যুদ্ধের পর রাশিয়ার শর্ত মেনে নিয়ে বেলারুশে আলোচনায় বসছে । ভারতীয় সময় দুপুর আড়াইটে নাগাদ এই আলোচনা হওয়া কথা রয়েছে।
কানাডা ও আমেরিকার বেশ কিছু প্রদেশ ইতিমধ্যে রাশিয়ান ভদকা (Russian-Vodka) বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাশিয়ার তৈরি মদও বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাশিয়ান ভদকা সমগ্র পৃথিবীতেই ভীষণ জনপ্রিয়। রাশিয়ার সারা বিশ্বে ভদকা রফতানি করে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের প্রদেশের গভর্নর ক্রিস সুনুনু শনিবার জানিয়েছেন রাশিয়ায় তৈরি ও রুশ ব্র্যান্ডের কোনও মদ সেই প্রদেশের কোনও মদের দোকানে বিক্রি করা যাবে না।
বিস্তারিত পড়ুন Russia-Ukraine Conflict: ইউক্রেনে রাশিয়ান আগ্রাসনের মাশুল, মন খারাপ হতে পারে ‘ভদকাপ্রেমীদের’