AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Animal Suicide Squad: সেনার সঙ্গে এবার যুদ্ধে নামবে কুকুর, বেড়াল, ইঁদুর‌ও

বছর তিনেক আগে বিজ্ঞানী এবং ব্রেন অ্যানালিস্ট জন লিসলে দাবি করেছিলেন, বেশ কিছু পশুর মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাঁদের কাজে লাগানোর গবেষণা প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রজেক্ট মাইন্ড কন্ট্রোল নামক বইয়ে এনিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন লিসলে।

Animal Suicide Squad: সেনার সঙ্গে এবার যুদ্ধে নামবে কুকুর, বেড়াল, ইঁদুর‌ও
| Edited By: | Updated on: Jul 03, 2025 | 8:50 PM
Share

ধরুন আপনি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন। রাস্তার একটা কুকুর আপনাকে দেখে এগিয়ে এল। আপনিও আদর করতে হাত বাড়ালেন। কিন্তু এখন থেকে সেটা করার আগে দু-বার ভাববেন। হয়ত আপনি যাদের সাধারণ কুকুর, বিড়াল ভাবছেন, তারা মোটেই সাধারণ নয়। তাঁরা কোনও সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্য। গায়ে হাত ছোঁয়ালেই বিস্ফোরণ। বেশ কিছু মানুষের ছিন্নভিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা। মডার্ন ওয়ারফেয়ারের এ এক নতুন কৌশল। অ্যানিম্যাল সুইসাইড স্কোয়াড। বছর দেড়েক আগে একটা টপ সিক্রেট রিপোর্টে এই দাবি করে ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্স। এব্যাপারে কোন দেশ কতটা এগিয়েছে, সেটাও তুলে ধরেছিল এমআই-সিক্স। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়, অ্যানিমাল সুইসাইড স্কোয়াড তৈরিতে আমেরিকা বেশ কিছুটা এগিয়েও গিয়েছে। এমআই সিক্সের ওই রিপোর্টে স্পষ্ট বলা হয়, ব্রিটেনকেও একইভাবে নতুন যুদ্ধকৌশলের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে হবে।

২০২৫-এর জুলাই মাসে এসে দেখা যাচ্ছে, আত্মঘাতী অ্যানিমাল স্কোয়াডের পরিকল্পনা মোটেও নতুন বিষয় নয়। সেই ষাটের দশকেই এনিয়ে অনেকটা এব্যাপারে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিল মার্কিন সেনা ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থা। গত ২৩ জুন বেশ কিছু ফাইল সিক্রেট ফাইল ডিক্লাসিফায়েড করেছে পেন্টাগন। ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য ডেইলি মেলের দাবি, এর মধ্যে ৩টি ফাইল সাবপ্রোজেক্ট নাইন্টি ফোর সংক্রান্ত। প্রজেক্ট ড্রয়ারের সাঙ্কেতিক নাম সাবপ্রজেক্ট নাইন্টি ফোর। প্রজেক্ট ড্রয়ারের উদ্দেশ্য? কুকুর, বিড়াল, ইঁদুর সহ ৮ ধরণের প্রাণীকে নিয়ে আলাদা আলাদা সুইসাইডাল স্কোয়াড তৈরি করা। মানববোমার আদলে জীবজন্তুদের নিয়ে আত্মঘাতী বাহিনী। ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়। এই সুক্ষ্ম চিন্তার পিছনে কারণ হল, জীবজন্তুদের বডি চেকিংয়ের ব্যাপার নেই। ওরা আত্মঘাতী বোমা বলে কেউই বিশ্বাসই করবে না। এমনকি বিস্ফোরণ ঘটার পরও কিছুই প্রমাণ করা যাবে না। তা-ছাড়া শয়ে শয়ে এমন সুইসাইড বম্ব তৈরি হলে, তাদের আটকানো বা মোকাবিলা করাও কার্যত অসম্ভব। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ঠিক সেটাই চাইছিল। এবং কড়া নির্দেশ ছিল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এব্যাপারে যাবতীয় পরীক্ষা শেষ করতে হবে।

এই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ১৯৫৮ সালে। অর্থাৎ ভিয়েতনাম যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে। এবং আমেরিকাও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। তা হলে কী ভিয়েতনামেই সুইসাইড স্কোয়াডকে নামানোর প্ল্যান করেছিল মার্কিন সেনা এবং সিআইএ? দ্য ডেইলি মেলের প্রতিবেদনে দাবি, ভিয়েতনামে যুদ্ধের কথা ভেবেই এত তাড়া দিচ্ছিল পেন্টাগন। কিন্তু তাদের পরিকল্পনা ঠিক কী ছিল? জানা যায়, পরিকল্পনার ছিল মোট তিনটে স্তর। প্রথম দুটোর দায়িত্ব ছিল সিআইএ-র উপর। তৃতীয়টার ভার ছিল মার্কিন সেনার কাঁধে। প্রথমত, সিআইএ ঠিক করেছিল, কুকুর, বিড়াল, গিনিপিগ, গাধা, বাঁদর এমনকি বিভিন্ন ধরণের পাখিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে সুইসাইড বোম্বার হিসাবে তৈরি করা। দ্বিতীয়ত, অ্যানিমাল সুইসাইড স্কোয়াডকে নির্দিষ্ট কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া। তৃতীয়ত, এই সুইসাইড স্কোয়াড কীভাবে এবং কতটা কার্যকর সেটা হাতেকলমে খতিয়ে দেখা।

সিআইএ-র ফাইলে দেখা যাচ্ছে, গোটা প্রকল্পের দায়িত্বে ছিলেন নোবেলের দৌড়ে থাকা রসায়নে বিজ্ঞানী সিডনি গোটিলেব। যে তিনটি ফাইল প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে ১৯৬২ পর্যন্ত তথ্য রয়েছে। এবং তখনও অবধি প্রকল্পের কাজ ঠিকঠাকই এগোচ্ছিল। বিষয়টা ভাবলেই শিউরে উঠতে হয়। কুকুর, বিড়াল, গিনিপিগ, পাখি – এদের যদি সত্যিই আত্মঘাতী বোমা হিসাবে ব্যবহার করা হয়, তা হলে ব্যাপারটা কীরকম দাঁড়াবে ভাবতে পারছেন? ষাটের দশকের সেই ভাবনা যে আজ হিমঘরে চলে গিয়েছে, এমনটা কিন্তু নয়। বছর তিনেক আগে বিজ্ঞানী এবং ব্রেন অ্যানালিস্ট জন লিসলে দাবি করেছিলেন, বেশ কিছু পশুর মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাঁদের কাজে লাগানোর গবেষণা প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রজেক্ট মাইন্ড কন্ট্রোল নামক বইয়ে এনিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন লিসলে। লেসলে দেখিয়েছেন, ষাটের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নও রিপোর্ট কন্ট্রোলড অ্যানিমাল আর্মি তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল। এবং সেই কাজ অনেকটা এগিয়েও গিয়েছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বড় দেশগুলো আবারও সেই চেষ্টা করতে পারে। কী হবে এর পরিণতি? সেটা অনুমান করার মতো মনের জোর এখন নেই আমাদের