Bose Corporation: শব্দই ব্রহ্ম, আর এক বাঙালি, বোসের বিশ্বজয়ের কাহিনী!
Amar Gopal Bose: বিশ্বের অন্যতম সেরা সাউন্ড কোয়ালিটির হেডফোন বা সাউন্ড সিস্টেম তৈরি করে যে সংস্থা, তার প্রতিষ্ঠাতাকে চেনেন? বোস কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন অমর গোপাল বসু। এই নামটা শুনেই মনে হচ্ছে না বাঙালি?

আচ্ছা ভাল হেডফোন বা সাউন্ড সিস্টেম বলতে আপনি কোন কোম্পানির প্রোডাক্টের কথা মনে করেন? এর একটাই উত্তর, অবশ্যই বোস। পকেটে রেস্ত কম থাকলে অন্য কথা। যে কারণে আমার-আপনার মতো সাধারণ বাঙালি শুধুমাত্র বোসের বিভিন্ন হেডফোন বা সাউন্ড সিস্টেমের ছবি আর দাম দেখেই কাটায়। মনে মনে ভাবে কিনব।
বিশ্বের অন্যতম সেরা সাউন্ড কোয়ালিটির হেডফোন বা সাউন্ড সিস্টেম তৈরি করে যে সংস্থা, তার প্রতিষ্ঠাতাকে চেনেন? বোস কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন অমর গোপাল বসু। এই নামটা শুনেই মনে হচ্ছে না বাঙালি? আজ্ঞে হ্যাঁ, এই ভদ্রলোক আসলেই বাঙালি। তাঁর বাবা ননী গোপাল বসু ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী। যিনি ১৯২০ সালের আশেপাশে ব্রিটিশদের চোখে ধুলো দিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন আমেরিকায়। আর সেখানেই জন্মগ্রহণ করেন অমর গোপাল বসু।
১৯৫৬ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বা MIT-র তরুণ অধ্যাপক অমর বসু একটি স্টিরিও সিস্টেম কিনেছিলেন। কিন্তু সেই সাউন্ড সিস্টেমের পারফরম্যান্সে একেবারেই অসন্তুষ্ট ছিলেন তিনি। আর এই অসন্তোষই তাঁকে এক নতুন গবেষণার দিকে ঠেলে দেয়।
১৯৬৪ সালে আমেরিকায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বোস কর্পোরেশন। কোম্পানির প্রথম যুগান্তকারী পণ্য ছিল ‘বোস ৯০১’ স্পিকার। এর ডিজাইন এতটাই আধুনিক ছিল যে এটি দেওয়াল থেকে শব্দ প্রতিফলিত করে শ্রোতাকে এক অভাবনীয় শ্রুতিমধুর অভিজ্ঞতা দিত।
এরপর ১৯৭৮ সাল। একটি বিমানযাত্রায় হেডফোনের কোলাহলে বিরক্ত হয়ে তিনি এমন এক প্রযুক্তি তৈরির কথা ভাবেন যা বাইরের শব্দকে পুরোপুরি আটকে দেবে। তারই ফলস্বরূপ ১৯৮৯ সালে বোস বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিক নয়েজ-ক্যান্সেলিং হেডফোন বাজারে আনে।
তিনি শুধু একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন না, ৪৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে MIT-তে অধ্যাপনা করেছেন। ২০১১ সালে, তিনি তাঁর কোম্পানির বেশিরভাগ শেয়ার MIT-কে দান করেন গবেষণা ও শিক্ষার প্রসারের জন্য। ২০০৮ সালে তাঁকে ‘ন্যাশনাল ইনভেন্টরস হল অফ ফেম’-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
গুগল, মাইক্রসফটের মতো সংস্থার গা ঘেঁসাঘেঁসি করে থাকা সংস্থা বোসের প্রতিষ্ঠা যে বাঙালি, আগে কি জানতেন? আজ, অমর গোপাল বসু শুধু একজন প্রযুক্তিবিদ নন, তিনি বাঙালিদের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম। বাঙালি চাইলে কী কী করতে পারে, তার অন্যতম উদাহরণ হলেন তিনিই। আর তাঁর আবিষ্কার আরও সুন্দর করে, স্পষ্ট করে শুনতে শিখিয়েছে গোটা পৃথিবীকে।
