Himachal Pradesh: ঐতিহ্য অনড় হিমাচল, পাহাড়ে কীভাবে আস্থা ফেরাল কংগ্রেস?
Himachal Pradesh: শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, হিমাচলের মোট ৬৮ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪০ টিতে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস।
হিমাচল প্রদেশ: পাহাড়ের মাটি ধরে রাখতে প্রচেষ্টায় খামতি রাখেনি বিজেপি। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রচারে গিয়েছিলেন। কিন্তু গুজরাটের একেবারে উল্টো ছবি দেখা গেল হিমাচল প্রদেশে। গুজরাটে যখন ঝড় তুলেছে গেরুয়া শিবির, হিমাচল বাসী তখন বেছে নিল কংগ্রেসকেই। তবে এ ছবি হিমাচলের জন্য নতুন নয়। গত ৩৭ বছরের ইতিহাস বলছে, একটি দল একটানা দু দফায় ক্ষমতায় থাকতে পারে না হিমাচলে। তাই এবার সেই ছবিরই পুনরাবৃত্তি দেখা গেল সে রাজ্যে। বলা যেতে পারে, রাজনৈতিক ঐতিহ্য বজায় রাখল হিমাচলবাসী।
বৃহস্পতিবার গণনা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফলাফল মোটামুটিভাবে পরিষ্কার হয়ে যায়। বিজেপির বিদায় যে সময়ের অপেক্ষা, তা মোটামুটি বোঝা যাচ্ছিল। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, হিমাচলের মোট ৬৮ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪০ টিতে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পাঁচ বছর বাদে ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে কংগ্রেস।
কংগ্রেসকে জিতিয়ে বজায় রাখা হল পাহাড়ের ঐতিহ্য!
১৯৮৫ সাল থেকে বিধানসভা নির্বাচনের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, একবার ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস আর পরেরবার বিজেপি। এমনকী কংগ্রেসের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী বিদর্ভ সিং বা বিজেপির জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী প্রেম কুমার ধূমলও সেই ঐতিহ্যের বদল ঘটাতে পারেনি। মোদী প্রচারে গিয়ে সেই প্রথা বদল করার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও সাড়া দিলেন না হিমাচলবাসী।
পেনশন স্কিম নিয়ে কংগ্রেসকেই বিশ্বাস করল হিমাচলবাসী?
হিমাচলে শিল্প বলতে তেমন কিছু নেই, তাই সরকারি চাকরিজীবীরা সে রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভোটার। সেই সরকারি কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল, যাতে পুরনো পেনশন স্কিম আবার চালু করা হয়। এই ইস্যুতে বিক্ষোভও প্রদর্শন করেছে তারা। কিন্তু, সরকারি কর্মীদের সেই দাবি তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি বিজেপি। কিন্তু কংগ্রেস বারবার তাদের সেই দাবি মেটানোর আশ্বাস দিয়েছে। তাই কংগ্রেসের প্রতি ওই কর্মীদের আস্থা বেড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিজেপির অন্দরে বিদ্রোহের ঝড় উঠেছিল
বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুরের বিরুদ্ধে যে তেমন কোনও অভিযোগ ছিল, তা নয়। তবে, এমনটা শোনা গিয়েছে, তাঁর ঘনিষ্ঠ কিছু সুযোগসন্ধানী লোকই আদতে সরকার চালাতেন। বারবার মুখ্যসচিব বদল নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল তাঁর শাসনে। এমন কিছু সিদ্ধান্ত তাঁর সরকার নিয়েছিল, যা তাঁর নিজের নয় বলেই মনে করা হয়। আর আগুনে ঘৃতাহুতি দেওয়ার ঘটনা ঘটল ভোটের আগে। ১১ জন বিধায়ককে টিকিট দেয়নি বিজেপি। তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দেন।
মূল্যবৃদ্ধিও বিমুখ করেছে হিমাচলবাসীকে!
রাজনৈতিক মহলের অনুমান, অগ্নিবীর স্কিম পছন্দ হয়নি সে রাজ্যের বাসিন্দাদের। ওই রাজ্যের বহু তরুণ প্রতি বছর সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কিন্তু অগ্নিবীর-এর মাধ্যমে মাত্র চার বছরের জন্য নিয়োগ পছন্দ হয়নি তাঁদের। গ্যাসের দাম ও সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সে রাজ্যের বাসিন্দারা আগেই সরব হয়েছে। ভোটে একাধিক আসনে চার প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাই কংগ্রেসের জয় সহজ হয়েছে সে সব জায়গায়।