‘হুসন্ হ্য়ায় সুহানা…’, ২৫ বছর পরে একই গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন চন্দনা দীক্ষিত

‘হুসন্ হ্য়ায় সুহানা...’। ‘কুলি নম্বর ওয়ান’-এর রিমেকে যখন বরুণ এবং সারাকে স্ক্রিনে এই গানটা গাইতে দেখেছেন, নিশ্চয়ই এনজয় করেছেন। আবার ১৯৯৫-তে মুক্তি পাওয়া ‘কুলি নম্বর ওয়ান’-এর ওরিজিন্য়াল ছবিতে গোবিন্দা-করিশ্মার পারফর্ম্য়ান্সও ছিল নজরকাড়া। এই দুই গানের মহিলা কণ্ঠ আসলে একই শিল্পীর। চন্দনা দীক্ষিত।

‘হুসন্ হ্য়ায় সুহানা...’, ২৫ বছর পরে একই গান গাওয়ার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন চন্দনা দীক্ষিত
গায়িকা চন্দনা দীক্ষিত।
Follow Us:
| Updated on: Jan 19, 2021 | 2:54 PM

‘হুসন্ হ্য়ায় সুহানা…’। ‘কুলি নম্বর ওয়ান’-এর রিমেকে যখন বরুণ এবং সারাকে স্ক্রিনে এই গানটা (singer) গাইতে দেখেছেন, নিশ্চয়ই এনজয় করেছেন। আবার ১৯৯৫-তে মুক্তি পাওয়া ‘কুলি নম্বর ওয়ান’-এর ওরিজিন্য়াল ছবিতে গোবিন্দা-করিশ্মার পারফর্ম্য়ান্সও ছিল নজরকাড়া। এই দুই গানের মহিলা কণ্ঠ আসলে একই শিল্পীর। চন্দনা দীক্ষিত। এত বছর পরেও একই গান গেয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন মার্কিন মুলুকের বাসিন্দা গায়িকা। এই মুহূর্তে বরফে ঢেকেছে বাড়িতে ঢোকার পথ। ঘুম ভাঙা সকালে হাতে কফির কাপ নিয়ে TV9 বাংলার সঙ্গে আড্ডা দিতে বসলেন। কলকাতায় তখন রাত গভীর হচ্ছে।

কেমন আছেন?

ভাল, আপনি ভাল তো, কলকাতায় ঠাণ্ডা আছে এখনও?

হ্যাঁ, কিছুটা। তবে ঠাণ্ডা চলে যাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে।

আমাদের এখানে এখনও বরফ…।

আপনার ভাল লাগে?

অফকোর্স…।

আপনাকে অনেক অভিনন্দন, ‘কুলি নম্বর ওয়ান’-এর রিমেকে নতুন করে আপনার গান সকলের ভাল লাগছে…

আপনি শুনেছেন? সত্যি ভাল লেগেছে?

অবশ্যই।

আমিও খুব ভাল ফিডব্যাক পেলাম।

আরও পড়ুন, শুটিং না থাকলে আমি গদাধরের সঙ্গে ক্রিকেট খেলি: অয়ন্যা

এত বছর পরে ফের একই গান গাইলেন, কেমন লাগল?

খুবই ভাল। স্টুডিওতে যাওয়া…, নতুন রেকর্ডিং সিস্টেমে এতদিন পরে গাইলাম…। নির্মাতারা আসলে ভোকালটা চেঞ্জ করতে চাননি। তবে এবার আমি শুধু গানের মুখড়া রেকর্ড করেছি। বাকিটা আগেরটাই রেখেছে ওরা। কমপ্লিট ট্র্যাক চেঞ্জ হয়েছে। কিন্তু ভোকালটা একই রয়েছে।

প্রথমবার গেয়েছিলেন, ১৯৯৫-এ। তখনকার স্মৃতি কিছু মনে পড়ল?

আসলে প্রথমটা মানে ১৯৯৫-এর গানটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ প্রথমবার গানটা গেয়েছিলাম। ৯০-এর দশকে আমাকে এই সুযোগটা দেওয়া হয়েছিল, আমি সত্যিই তার জন্য আজও কৃতজ্ঞ। আমার মনে আছে, ছবিটা পুরো রেডি হয়ে যাওয়ার পর এই গানটা রেকর্ড হয়েছিল। সব কিছু হয়ে যাওয়ার পর নির্মাতাদের মনে হয়েছিল, এই গানটা রাখা দরকার। গণেশজি মানে কোরিওগ্রাফার, গোবিন্দা এবং করিশ্মাকে স্টেপ শেখাচ্ছিলেন, সেটাও মনে আছে। ওটা থেকেই আমার বলিউড কেরিয়ার শুরু হয়েছিল।

এবার গাওয়ার পর বরুণ ধাওয়ান বা সারা আলি খানের সঙ্গে কথা হল?

না। ওদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি। আসলে অভিনেতা এবং গায়কদের সাধারণত দেখা হয় না। তবে হঠাৎ ওদের স্ক্রিনে দেখে, সেই আগের অনুভূতি ফিরে পেয়েছি। আমার এখনকার গলাও যে ম্যাচ করে গিয়েছে, সেটা দেখে ভাল লেগেছে। আমি একটা কথা বলতে চাই, কোনও ক্ষেত্রেই তুলনা ভাল না। গোবিন্দা লেজেন্ডারি। কেউ ওর মতো করতে পারবে না। আমার মনে হয়, সেটা কপি করতেও কেউ চায়নি। আর নতুন ছবিটার জন্য বরুণ পারফেক্ট চয়েস।

এখন বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে প্লে-ব্যাকের ক্ষেত্রে কী কী বদল চোখে পড়ল?

সময় অনেক বদলে গিয়েছে। ২০ বছর পরে এখন একদম আলাদা ইন্ডাস্ট্রি। গায়করা এখন আর শুধুমাত্র বলিউড মিউজিকের উপর ভরসা করে নেই। তারা নিজের অর্থাৎ অরিজিনাল মিউজিক তৈরি করছে। সবথেকে বড় কথা, পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে বসে হাতে একটা মোবাইল থাকলেই রেকর্ড করতে পারছে। আমার সময় তো ইউটিউবও ছিল না। ফিল্ম মিউজিকই একমাত্র মাধ্যম ছিল। এখন রেকর্ডিংয়ের জন্য প্রযুক্তিও অনেক উন্নত। কিন্তু এখন প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। সে কারণেই নিজের স্টাইল মেনটেন করাটা কঠিন। কারণ সেটার জন্য সময় লাগে। এত কম্পিটিশন, এখন আর কারও হাতে সময় নেই। নিজের মতো করে গাওয়াটাই এখন চ্যালেঞ্জ। সবাই অনুকরণ করতে চাইছে।

আরও পড়ুন, অভিষেক বচ্চনের কোন কোন সিক্রেট শেয়ার করল ইনায়ৎ?

এখনকার শিল্পীদের মধ্যে কাদের গায়কী ভাল লাগে?

অরিজিৎ সিং এবং শ্রেয়া ঘোষাল।

বাহ! দুজন বাংলার শিল্পীর কথা বললেন আপনি…

হ্যাঁ, বাংলার মিষ্টি আওয়াজ ওদের মধ্যে আছে তো (হাসি)।

আপনি কখনও বাংলা গান গেয়েছেন?

অনেক আগে, বাংলা গান গেয়েছি। আসলে তখন রিজিওনাল মিউজিকের রেকর্ডিংও মুম্বইতে হত। তখন গেয়েছি।

singer

মঞ্চে শিল্পী।

মনে আছে এখনও কিছু?

ওই গানটা… “মেঘ বলেছে যাব, যাব, রাত বলেছে যাই যাই.. সকাল বলে কূল মিলেছে, আমি তো আর নাই…” (স্পষ্ট উচ্চারণে গেয়ে শোনালেন)। উচ্চারণ ঠিক হল কি না জানি না… (হাসি)।

১৯৯৫ থেকে আপনার বলিউডের কেরিয়ার শুরু?

১৯৯৪ থেকে। ১৯৯৫ তে ‘কুলি নম্বর ওয়ান’ মুক্তি পেয়েছিল। তারপর বিয়ে করে আমেরিকা চলে আসি। তখন মনে হয়েছিল, বলিউডে গান গাইলে একই স্টাইলে আটকে যাব।

আরও পড়ুন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের ‘ফিরকি’তে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে: আর্যা

আমেরিকা গিয়েও চর্চা বজায় রেখেছিলেন?

অবশ্যই। এখানে ‘স্বরাঙ্গন স্কুল অব মিউজিক’ শুরু করি আমি। গুরু-শিষ্য পরমম্পরায় মিউজিক শেখাই। আমি আবার রেওয়াজ শুরু করি। তখন ধীরে ধীরে বুঝতে পারি, ক্লাসিক্যাল মিউজিকের জন্য আমার কতটা ক্রেভিং ছিল। এখন সারা পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ক্লাসিকাল কনসার্ট করি।

অনেক শুভেচ্ছা আরও একবার, ভাল থাকবেন…

নিশ্চয়ই, আপনিও ভাল থাকুন।