TV9 Bangaliana: দিনভর বাঙালিয়ানার উদযাপন, এই প্রথম বাংলায় টেলিথন
TV9 Bangaliana Live Updates : এই প্রথম বাংলায় টেলিথন - TV9 বাঙালিয়ানা। সঞ্চালনায় থাকছেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অভিনেত্রী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, রুমেলা চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ এবং TV9 নিউজ নেটওয়ার্কের সিইও বরুণ দাস। আজ সারাদিন চোখ রাখুন টিভি ৯ বাংলায়।
রবিবার দিনভর টিভি৯ বাংলায় চলল বাঙালিয়ানা। বাঙালিয়ানা কী? ছোটো করে বলতে গেলে বাঙালিয়ানা হল বাঙালি জাতির অভিমান। বাঙালির সংস্কৃতি, চিন্তা-ভাবনা, আচার-আচরণ সব কিছুর সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে এই বাঙালিয়ানা। বাঙালি এবং বাঙালিয়ানাকে কখনও আলাদা করা যায় না। বাঙালি যে ভাষায় কথা বলে, যে পোশাক পরে, যেভাবে দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করে, রুজি-রুটির ক্ষেত্রে যে যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়- এই সবকিছু মিলিয়েই বাঙালিয়ানা। বাংলার ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে বহু কাল ধরে ধীরে ধীরে বাঙালিয়ানা গড়ে উঠেছে। তাই এই কয়েক যুগ ধরে চলে আসা বাঙালিয়ানাকে লেন্সের তলায় রেখে আরও একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া বাঙালির ইতিহাসে। আলোচনা হল বাঙালির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। আলোচনা হল বাঙালিয়ানা নিয়ে। এই প্রথম বাংলায় টেলিথন – TV9 বাঙালিয়ানা। সঞ্চালনায় অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অভিনেত্রী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়, রুমেলা চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ এবং TV9 নিউজ নেটওয়ার্কের সিইও বরুণ দাস। বাঙালিয়ানার প্রতিটি এপিসোড দেখতে চোখ রাখুন টিভি ৯ বাংলার ইউটিউব পেজে।
LIVE NEWS & UPDATES
-
গান – মুছে যাওয়া দিনগুলি পিছু ডাকে
-
আলাদা আলাদা এফএম স্টেশন থাকা দরকার: চমক হাসান
লস অ্যাঞ্জেলস থেকে ভার্চুয়ালি ছিলেন সঙ্গীত শিল্পী চমক হাসান। তিনি বলেন, “এখানে অডিয়ো ইন্ডাস্ট্রিটা খুব সুন্দর করে ধরে রাখা হয়েছে। এরকম নয় যে এখানে কোনও শিল্পী না খেতে পেয়ে মারা যান বা তাঁদের গান কেউ শুনছেন না। বিরাট একটা ইন্ডাস্ট্রি তাদের আছে। তাঁরা কিন্তু এটা তৈরি করতে পেরেছেন। তাঁরা যে গান শোনাতে চান, সেই শ্রোতা সবসময় আছেন। কান্ট্রিং সং করেন যাঁরা তাঁদের একটা বিরাট এফএম রেডিয়ো স্টেশন আছে। পপের একটা আলাদা জায়গা আছে। মানে যেমন শ্রোতা তেমন ব্যবস্থা। মনে হয় কোথাও বাংলায় সেটা করা যাচ্ছে না। লোকগানের খুব চাহিদা। একটা এফএম থাকা উচিৎ। ঠিকমতো বিপণন হলে ভাল সাড়া পাওয়া যাবে।”
-
-
ক্যাসেট থেকে সিডি, খুব তাড়াতাড়ি সব বদলে গেল
সঙ্গীত শিল্পী উজ্জ্বয়িনী মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি যে সময় গান শুরু করি ২০০৪-২০০৫। তখনও লোকে একটু একটু অ্যালবাম শুনছে। তখনও সিডি বিক্রি হচ্ছে। এরপর খুব তাড়াতাড়ি দেখলাম সব বদলে গেল। ইমন যেমন বলল, ট্রানজিশনটা বুঝতে বুঝতেই সময় কেটে গেল।”
-
গুড মিউজিক, ব্যাড মিউজিক দুই’ই আছে
সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার বলছেন, “গানবাজনার দু’টো ভাগ আছে। একটা গুড মিউজিক, একটা ব্যাড মিউজিক। এটা আবার আমার কাছে যেটা ভাল, আরেকজনের কাছে তা নাও ভাল হতে পারে। কোলাভরি ডি যেভাবে জনপ্রিয়তা পেল অবাক করা। এটা শুনে অনেক প্রথিতযশারা বলেছেন আমরা তা হলে কী করলাম।”
-
গান জনপ্রিয় হচ্ছে, কালজয়ী হচ্ছে না: অর্পিতা
অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় বললেন, “আমরা যেটাকে ভিত বলি তা তৈরি না হলে কোনও ক্ষেত্রেই কিন্তু চলাটা দীর্ঘপথ হয় না। সাময়িকভাবে কেউ খুব জনপ্রিয় হয়ে গেল, গান জনপ্রিয় হল। কিন্তু তা কালজয়ী হয় না। ” জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীত শিল্পী ইমন চক্রবর্তীর মত, “আমরা একটা ট্রানজিট পিরিয়ডে গান করা শুরু করি। ক্যাসেটে গান শুনতাম, সেটা সিডি হল। সেটাও চলে গেল। আমার প্রথম তিন চারটে অ্যালবামও কিন্তু সিডি রিলিজ। তারপর হঠাৎ ইউটিউব চলে এল। খুব হচপচ অবস্থার মধ্যে দিয়ে আমাদের জেনারেশন গিয়েছে। এখন যারা আসছে তারা এই প্ল্যাটফর্মে অভ্যস্ত। আমরা সব ভাষার গান শুনছি, কেন বাংলা সকলে শুনছে না সেটা ভাবতে গিয়ে আমার মনে হয় ইনভেস্ট কে করবে বাংলা গানে? কেউ তো ইনভেস্টই করছেন না। এত অরিজিনাল গান হচ্ছে, অথচ ইনভেস্টার নেই।”
-
-
মিডিওক্রিটিটা খুব বেড়ে যাচ্ছে, মত রাঘবের
রাঘব চট্টোপাধ্যায়ও মনে করেন, “মিডিওক্রিটিটা খুব বেড়ে যাচ্ছে। সকলে না শিখেই এগোতে চাইছে। কাল ছাদে গাইতাম আজ গিটার নিয়ে গান গাইতে শুরু করে দিলাম। দশটা ফানশন এল বা আমি টেলিভিশনে মুখ দেখানোর সুযোগ পেলাম। আমি শিল্পী হয়ে গেলাম। ফলে সেই মানটা আর থাকছে না।”
-
ডিজিটাইজেশন দিয়ে পৃথিবী মোড়া যায় না: অনির্বাণ
অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতে, “ডিজিটাইজেশন দিয়ে পৃথিবীটাকে মুড়ে ফেলার যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা কোনওদিনই কোনও ক্ষেত্রের শিল্পীকেই জিজ্ঞাসা করেননি। এটা শিল্পের সঙ্গে চলে না। সমস্ত ধরনের শিল্পীকেই এই ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে চলতে হচ্ছে। ফলে এই শিক্ষাতে আদৌ কখনও কাউকে ফেরানো যাবে কি না আমি খুব একটা আত্মবিশ্বাসী নই।”
-
গানকে অমরত্ব দিতে শেখা দরকার: পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী
অজয় চক্রবর্তী বলেন, “বাংলা গানকে সমৃদ্ধ করেছেন যিনি তারই গাওয়া হয়ত কিছুই নাহি পাব, গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু। যিনি চলে গেলেন লতা মঙ্গেশকর তিনিও বাংলায় অসংখ্য গান রেখে গিয়েছেন। কমার্শিয়ালাইজেশন অব বাংলা গান কিন্তু খুব বড় একটা ব্যাপার। আমার অভিজ্ঞতা এ নিয়ে কম। কারণ আমরা আসরে গাওয়া লোক। প্রোগ্রাম হলে মানুষের সামনে বসে গান করি। কিন্তু এখন গানের প্ল্যাটফর্মটা পাল্টে গেছে। গান শোনাতে হয় ক্যামেরাকে। ক্যামেরা তো কথাও বলে না, সমালোচনাও করে না। ভারতীয় সঙ্গীতে তো আলাপটাই দরকার। লাইভ অনুষ্ঠান যদি বাড়ানো যায়, গানটার মধ্যে যেন কোনওভাবেই মিডিয়োক্রেসি না এসে যায় খেয়াল রাখতে হবে। শিল্পী হওয়ার অধিকার সকলের আছে। কিন্তু সঙ্গীত শেখার বিষয়। গানকে অমরত্ব দেওয়ার জন্য সেটা দরকার।”
-
কীর্তন, ঝুমুর, অতুলপ্রসাদী বাংলা গানের শিকড়
কীর্তন, ঝুমুর, অতুলপ্রসাদী বাংলা গানের শিকড়। নবজাগরণের ধারায় বাংলা গানকে বদলে দিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রযুগের পর বাংলা গানে আবার বাঁক। বাংলা গানে পাশ্চাত্যের প্রভাব দেখা গিয়েছে বারবার। সেই গান নিয়ে আলোচনা, ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি পিছু ডাকে’। আলোচনায় রয়েছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, ইমন।
-
থিয়েটারি অর্থনীতির একটি রাজনৈতিক-সামাজিক সংযোগ
‘দর্শন’ নাটকের ক্ষেত্রে খুব প্রয়োজনীয় বিষয়। থিয়েটারি অর্থনীতির একটি রাজনৈতিক-সামাজিক সংযোগ রয়েছে। বাণিজ্যিক ও অন্যধারার থিয়েটার, দুটোই পাশাপাশি চলে।
-
আন্তর্জাতিক স্তরে নাট্যচর্চায় সরকারি অনুদান রয়েছে
কর্পোরেট লগ্নিই কি বাংলা নাটকের টিকে থাকার রাস্তা? নাট্য নির্দেশক সুমন মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “আন্তর্জাতিক থিয়াটারের নিরিখে কেউ কোনও মডেল দেখাতে পারবেন যেখানে নাট্যকলা যাঁরা চর্চা করেন সেখানে একটি ইকোনমিক মডেল কেউ তৈরি করেছেন। ব্যবসা চলচ্চিত্রে যেমন রয়েছে নাট্যেও রয়েছে। সবচেয়ে বড় দুটি নাট্যের ব্যবসার ক্ষেত্র হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট ইন্ড। এই বাইরে নাট্যচর্চা আন্তর্জাতিক স্তরে সরকারি অনুদানে হয়েছে।”
-
কোনও সময় সিনেমার বাজেট ছাপিয়ে যায় থিয়েটার
থিয়েটার কি শুধুই শখ নাকি এর সঙ্গে বাণিজ্যিক লাভ জড়িয়ে রয়েছে? এই প্রশ্নে অভিনেতা অনির্বাণ চ্যাটার্জি বলেছেন, “থিয়েটার করতে অনেক টাকা লাগে। সিনেমার থেকে থিয়েটারের হিসেব অনেক আলাদা। সিনেমা করতে অবশ্য বেশি টাকা লাগে কিন্তু সেটা একবারের জন্য। থিয়েটার করতে বারবার লাগে। ফলে যদি একটি নাটকের ৭৫ বা ১০০ টা শো হয় তাহলে দেখা যাবে তার খরচ সিনেমার বাজেটকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে।”
-
থিয়েটার – বিত্তহারা বিনোদন
বাংলার থিয়েটার অনেক ঝড় ঝাপটার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। সেইভাবে লাভের মুখ না দেখলেও কোনওভাবে টিকে রয়েছে। কিন্তু এই থিয়েটারেরই আগে ছিল বিশাল রমরমা। লোকে তখন টিকিট কেটে থিয়েটার দেখতে যেত। এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনায় বাঙালিয়ানা টেলিথন : থিয়েটার – বিত্তহারা বিনোদন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে রয়েছেন, সুমন মুখোপাধ্যায়, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, অবন্তী চক্রবর্তী।
-
বাঙালিয়ানা টেলিথনে দেখুন : সিনেমা – বিত্তহারা বিনোদন
-
বাংলা চলচ্চিত্রে প্রয়োজন একতার
অরিন্দম শীলের কথায় বাংলা চলচ্চিত্রে প্রয়োজন সাহসী প্রযোজকদের। আর দরকার একতার। সমগ্র শিল্পী একদিকে আর এই বাণিজ্যিক অসফলতা উল্টোদিকে।
-
সিনেমার সাফল্যের শুরু বাংলার হাত ধরেই
চলচ্চিত্র গবেষক সঞ্জয় মুখোপাধ্যাযের কথায় বাণিজ্যিকভাবে সফল হতে হলে শিল্পকে দর্শকের চাহিদায় সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। আজকের বাংলা সিনেমার টার্গেট দর্শক হলে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত। আর এই কারণেই বাংলা চলচ্চিত্র বাণিজ্যিকভাবে দাক্ষিণাত্য ও বলিউড চলচ্চিত্রের থেকে অনেকগুণে ব্যর্থ।
-
ফিল্ম-বিত্তহারা নিবেদন
সিনেমা নিয়ে আমাদের নিবেদন ফিল্ম-বিত্তহারা নিবেদন। সত্য়জিৎ রায়ের বানানো চলচ্চিত্র বিশ্বজুড়ে বন্দিত। ‘পথের পাঁচালি’ দিয়েই তাঁর বিশ্বজয় শুরু হয়েছিল। সেই ছবির প্রাথমিক বাজেট ছিল ৭০ হাজার টাকা। পরে যদিও কিছুটা বাড়ে। ছবি পরিচালক তাঁর নান্দনিক তত্ত্ব এবং সন্তুষ্টির জন্য ছবি বানিয়ে থাকলেও বাজেটের চিন্তা স্বয়ং সত্যজিৎ রায়কেও ভাবাত। এই নিয়েই আলোচনা হবে ফিল্ম-বিত্তহারা নিবেদনে। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়,অরিন্দম শীল, বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়, উজ্জ্বল চক্রবর্তী এবং ফিরদৌসাল হাসান।
-
সর্বভারতীয় রাজনীতির মঞ্চে বাঙালি মুখ নেই কেন?
কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী বাংলার সব চেয়ে শক্তিশালী দল ছিল, তাদেরও সর্বভারতীয় স্তরে কখনও কোনও বাঙালি সম্পাদক হননি। ফলে বাঙালিরা রাজনীতিতে সাইড লাইনে অনেকদিন, বলছেন সাংসদ সৌগত রায়।
ক্লিক করুন: TV9 Bangaliana: সর্বভারতীয় রাজনীতির মঞ্চে বাঙালি মুখ নেই কেন? কোথাও কি প্রাসঙ্গিকতা কমছে
-
বাঙালিয়ানা টেলিথনে দেখুন : আড্ডা – সৃষ্টিশীল না কর্মনাশা?
-
আড্ডায় ভাবনার আদান-প্রদান
সময় এবং কাজকে ব্যয় করে আড্ডার সময় বের করি। আর যার আউটপুট আসে ভাবনার আদানপ্রদান ও সৃজনশীলতা। তাই বাংলার আড্ডার বিষয়বস্তু ও গ্রহণযোগ্যতাই স্থির করে এর বিশেষণকে- কর্মনাশা না সৃষ্টিশীল।
-
আড়ি থেকে আড়ি পাতা
আড়াল থেকে আড়ি , আড়ি থেকে আড়ি পাতা , তার থেকে এসেছে আড্ডা। আমরা দৈনন্দিন কাজ কর্মের মধ্যে নিজেদের যে ভাবনা-চিন্তা , নিজস্বতা কে আড়াল করি তারই বহিঃপ্রকাশ এই আড্ডা। আর বাঙালির নাম এই আড্ডার ক্ষেত্রে সর্বকালেই এগিয়ে।
-
আড্ডা – সৃষ্টিশীল না কর্মনাশা?
সত্যজিৎ রায় তাঁর ‘আগন্তুক’ ছবিতে একটি চরিত্রকে দিয়ে বলিয়েছেন আড্ডা বাঙালির ‘মনোপলি’ এবং
‘ইনেভনশন’! আড্ডা – সৃষ্টিশীল না কর্মনাশা? সেই নিয়ে বিতর্ক লেগেই থাকে। এইবার আড্ডা নিয়ে বাঙালিয়ানা টেলিথনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হল। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে রয়েছেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, স্বপ্নময় চক্রবর্তী, শঙ্করলাল ভট্টাচার্য। -
বাঙালিয়ানা টেলিথনে দেখুন : জাতীয় রাজনীতিতে বাঙালির প্রাসঙ্গিকতা
-
বাঙালির রক্তে লড়াই করার ক্ষমতা
পৌলমী নাগ মনে করেন, “আগামিদিনে বিজেপি যদি বাংলায়ও শক্তি বাড়াতে পারে তাহলে পুরস্কারস্বরূপ হয়ত বাংলা থেকে আরও বেশ কিছু মুখ দিল্লির দরবারে ফুটে উঠবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রকে যাবেন। আর যদি কোনও জোট সরকারের জায়গা তৈরি হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন, সেক্ষেত্রেও বাঙালির কিন্তু উঠে আসার একটা জায়গা রয়েছে।” বাঙালির রক্তে রয়েছে লড়াই করার ক্ষমতা। তবে সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় বিভাজনের তাসে বাঙালিকে বশে আনা সহজ নয়। বরং রাজনীতির সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক অনেক গাঢ়।
-
সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বাঙালির উপস্থিতি নেই
সাংসদ সৌগত রায়ের মতে, অনেকদিন ধরেই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বাঙালি নেই। জাতীয় কংগ্রেসে নেতাজী সুভাষচন্দ্রের পরে আর কোনও বাঙালি কংগ্রেস সভাপতি হননি। যে বাঙালি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে ছিল, সে বাঙালি ধাক্কা খেয়েছে। সৌগত রায়ের কথায়, “আমাদের বাংলার একটা বড় অংশ পাকিস্তানে চলে গেল। সংখ্যায় কমে গেলাম। যদি বাংলা এক থাকত তবে ভারতের সবথেকে জনবহুল রাজ্যই হত বাংলা।” একইসঙ্গে সৌগতবাবুর মত, কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী বাংলার সব চেয়ে শক্তিশালী দল ছিল, তাদেরও সর্বভারতীয় স্তরে কখনও বাঙালি সম্পাদক হননি। ফলে বাঙালিরা রাজনীতিতে সাইড লাইনে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনটে ভোট জিতে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। জ্যোতি বসু আরও বেশি জিতেছিলেন। কিন্তু ভারতীয় রাজনীতিতে বাঙালির ইতিহাস বঞ্চনার।
-
জাতীয় রাজনীতিতে বাঙালির প্রাসঙ্গিকতা
জাতীয় রাজনীতিতে একটা সময় বাঙালির পোক্ত আসন ছিল। সর্বভারতীয় দলের জাতীয় স্তরের কোনও পদে অনায়াসে বসানো হত বাঙালিকে। উনিশ শতকের শেষ থেকে ভারতীয় রাজনীতির স্রোতে বাংলার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। কিন্তু এখন? বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র সেই বাঙালি মুখ, যিনি দেশের রাজনীতির দরবারে সকলের চেনা। কিন্তু কেন দ্বিতীয় কোনও মুখ উঠে আসছে না? রাজনৈতিক দক্ষতার অভাব নাকি এর পিছনেও কলকাঠি নাড়ছে রাজনীতিই। এই নিয়ে আলচনায় ‘জাতীয় রাজনীতিতে বাঙালির প্রাসঙ্গিকতা’। আলোচনায় অতিথি হিসেবে রয়েছেন, সৌগত রায়, প্রসেনজিৎ বসু, পৌলমী নাগ।
-
বাঙালিয়ানা টেলিথনে দেখুন : বাঙালিয়ানায় নারী- বাস্তবের আয়নায়
-
লিঙ্গ বৈষম্য কাঁটা হয়েছে বাংলার রেনেসাঁয়
দীপ্সিতা ধর কেরলে ব্রেস্ট ট্যাক্স প্রত্যাহারে অন্তজ শ্রেণির মহিলা নাংগেনির অসামান্য ভূমিকা উদাহরণ রূপে রেখে আরও একবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখান যে বাংলার রেঁনেসা থেকে প্রান্তিক গোষ্ঠী আলাদা থাকার কারণেই আজকের এই প্রত্যাগতি। এর সূত্র ধরে গৌতম ঘোষ বলেছেন লিঙ্গ বৈষম্য, সামন্ত মূল্যবোধের প্রকট প্রভাব বাংলার রেনেসাঁকে ইউরোপীয় রেনেসাঁর মতো সফল হওয়ার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
-
বাংলার ভাঁজে ভাঁজে নারী নির্যাতনের গল্প
লেখিকা শ্রীময়ী কুন্ডুর কথায় বাংলার চিত্রটা বাইরের লোকের কাছে অনেক বেশি উজ্জ্বল। মনে করা হয় যে বাঙালি মহিলারা পরিবারে দমনকারী ভূমিকা পালন করে এবং তাঁদের ক্ষমতায়ন হয়েছে। কিন্তু যারা অভ্যন্তরীণ তারাই জানেন এখানে পরতে পরতে ম্যারিটাল রেপ, পণ প্রথা,অ্যাসিড হামলার মতো নারী দমনীয় ঘটনার গল্প।
-
ইউরোসেন্ট্রিক বাঙালি ক্রমশ শিকড় থেকে সরে গিয়েছে
চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় মতে রেনেসাঁ প্রভাবিত করেছিল মূলত শহর কেন্দ্রিক মধ্যবিত্ত ও শিক্ষিত একদল বাঙালিকে। পরবর্তীকালে তারা অনেক বেশি ইউরোসেন্ট্রিক হয়ে গিয়েছে এবং ক্রমশ বাংলার শিকড় থেকে সরে এসেছে। কিন্তু বাঙালির একটা বড় অংশ নিজেকে জুড়তে পারেনি এই ঢেউয়ের সঙ্গে। তারা ক্রমশ প্রত্যাগতির দিকে চলে গিয়েছে। আর আজকে এই প্রত্যাগতিই হয়ত বাঙালির প্রগতির থেকে বেশি প্রকট হয়েছে আর তাই আজকের আলোচনার প্রয়োজন।
-
বাঙালিয়ানায় নারী- বাস্তবের আয়নায়
আমাদের পরবর্তী অনুষ্ঠান বাঙালিয়ানায় নারী- বাস্তবের আয়নায়। এই অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় রয়েছেন টিভি৯ নেটওয়ার্কের সিইও বরুণ দাস, রুমেলা চক্রবর্তী এবং চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়, মালবিকা ব্যানার্জি, শ্রীময়ী কুন্ডু, দীপ্সিতা ধর। বাংলার সংস্কৃতিতে নারীর সম্মান কি সত্যিই চিরাচরিত? সমাজে নারীর অবস্থান কোথায়? এইসব নিয়েই আলোচনা হবে এই বিভাগে।
-
নবজাগরণের ইতিহাসে মেয়েরা কি শুধুই নিয়েছে?
এ সমাজে মেয়েদের অবস্থান ঠিক কোথায়, এ নিয়ে নানা মত রয়েছে। মেয়েরা এখন বিমান ওড়ায়, মেয়েরা এখন যুদ্ধে যায়। কিন্তু তাতে কি মেয়েদের চার দেওয়ালের ভিতরে যে সমস্ত যুদ্ধ তার অবসান হয়েছে? এ প্রসঙ্গে লেখিকা শ্রীময়ী কুণ্ডুর মত, এখনও গার্হস্থ্য হিংসার স্বীকার মেয়েরা। নানাভাবে অত্যাচার করা হয় বাড়িতে। সংখ্যাতত্ত্ব বলছে, গার্হস্থ্য হিংসা বাংলায় অনেক বেশি। বাইরে বাঙালি মেয়েদের নিয়ে এমন ধারনাও রয়েছে, তারা খুব নাক উঁচু, জাদুটোনা করে, সবকিছু মুঠোয় রাখার চেষ্টা করে।
ক্লিক করুন: TV9 Bangaliana: নবজাগরণের ইতিহাসে মেয়েরা কি শুধুই নিয়েছে? বইয়ের পাতায় কেন এত আবছা সেই নারীরা
-
বাঙালিয়ানা টেলিথনে দেখুন : বাংলাতেই কি আটকে রয়েছে বাংলা সাহিত্য?
-
চলচ্চিত্রের হাত ধরে সাহিত্য চর্চা
সঞ্চালক গৌতম ঘোষ বলেছেন, “অন্তর্জলি যাত্রার সাহিত্যিক উপাদান ছিল জটিল। সাধারণ পাঠকের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা কম ছিল। কিন্তু সেই বক্তব্যকে চলচ্চিত্রে রূপ দেওয়ার পর সাহিত্যের গ্রহণযোগ্যতায় প্রভাব পড়েছিল।” গৌতম ঘোষ আরও বলেছেন যে কোনও একটি সাহিত্যের উপর চলচ্চিত্র হলে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির পাঠক সেই সাহিত্যের আবার পুনর্মূল্যায়ন করার সুযোগ পান বা সেই একটি নতুন শ্রেণির পাঠককে সেই সাহিত্য আকর্ষণ করে।
-
সাহিত্য ও চলচ্চিত্র কি হাত ধরাধরি করে চলে?
সাহিত্য ও চলচ্চিত্র কতটা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত তা নিয়ে বলতে গিয়ে চলচ্চিত্র ও থিয়েটার সমালোচক শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অনেক সাহিত্য অনুকরণ করে চলচ্চিত্র তৈরি হয়। সেই চলচ্চিত্র জনপ্রিয় হলে তবেই পাঠক সংখ্যা বৃদ্ধি বা বইয়ের বিক্রি কিছুটা বাড়তে দেখা যায়। এরকমও উদাহরণ রয়েছে, অসাধারণ সাহিত্য থেকে অসাধারণ মানের ছবি হয়েছে, তাতে কিন্তু বইয়ের বিক্রি বাড়েনি। সিরিয়ালে সেই অর্থে কিন্তু বড় মাপের সাহিত্যকে এখন অন্তত আর ব্যবহার করা হয় না।”
-
‘বাংলা ভুল লিখলে আমরা লজ্জিত হই না’
কবি সঙ্ঘমিত্রা হালদার “আমরা ইংরাজিটা ভুল করলে অনেক বেশি লজ্জিত হই। বাংলাটা ভুল করলে লজ্জিত হই না। কেন? বাংলা সাহিত্যের অনুবাদ কিন্তু বিশ্বের দরবারে অনেক কম পৌঁছেছে। রবীন্দ্রনাথেরও অনুবাদও যদি খেয়াল করে দেখি, খুব কম। আমরা যতটা বিদেশি সাহিত্যের অনুবাদ পাই, বাংলা সাহিত্য যদি সেইভাবে বিভিন্ন ভাষায় মান্দারিন, ইংরাজিতে অনুবাদ করে, ধারাবাহিক চর্চা করে তা হলে তার একটা আলাদা গুরুত্ব থাকবে।” সুবোধ সরকার বলেছেন, “অনুবাদ ছাড়া কোনও পথ নেই। আধুনিক সাহিত্য অনুবাদের উপরই দাঁড়িয়ে।”
-
নোবেল পুরস্কারই সাহিত্যের মানের একমাত্র মাপকাঠি নয়
প্রাবন্ধিক ও অধ্যাপক চিন্ময় গুহও মনে করেন, নোবেল পুরস্কারই সব, এমনটা নয়। চিন্ময় গুহর কথায়, পাশ্চাত্যমুখী নোবেল পুরস্কার দিয়ে সাহিত্যের বিচার খুব প্রাসঙ্গিক এমন বলা যায় না। চিন্ময়বাবু বলেন, “আমাদের বন্ধু হরিশ ত্রিবেদী একবার বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ না পেয়ে যদি প্রেমেন্দ্র মিত্র নোবেল পুরস্কার পেতেন কী হত! কোনওভাবেই নোবেল পরিমাপ দণ্ড নয়। এর মধ্যে রাজনৈতিক নানারকম কার্যকলাপ কাজ করে।” তবে পাঠকের ব্যাপ্তি নিয়েও খুব একটা খুশি নন চিন্ময়বাবু। তাঁর কথায়, ছ’য়ের দশকে যেভাবে মানুষ পড়তেন, এখন কি পড়েন? ব্যাপ্তির তুলনায় পাঠের গভীরতাতেই জোর দিচ্ছেন তিনি।
-
ভারতবর্ষে বইমেলা একটি ‘ক্যালেন্ডার ইভেন্ট’
কবি সুবোধ সরকারও মনে করেন, সাহিত্যের অগ্রগতি পুরস্কার দিয়ে মাপা যায় না। তাঁর মতে, “একটা সাহিত্যের ভাষা তার নিজস্ব ভাষাগণ্ডির, ভাষার ভূগোল এবং ভাষার ইতিহাসের মধ্যে বড় হয় ও বিস্তারিত হয়। তবে বাংলা ও মালয়ালম ভাষায় যত সংখ্যক পাঠক রয়েছে সেটা অন্য কোনও ভাষায় নেই। এমনকি হিন্দিতেও নেই। একটা কবিতার বই, একটা উপন্যাস, একটা ছোট গল্পের বই যে পরিমাণে বিক্রি হয়, সাড়া জাগায় এত রাজ্যে হিন্দিতে কথা বলা হলেও তা কিন্তু সাড়া জাগায় না।” এ প্রসঙ্গে টিভি৯ নেটওয়ার্কের সিইও বরুণ দাস বলেন, “আমার মনে হয় না ভারতবর্ষের কোনও দেশে বইমেলা একটা ক্যালেন্ডার ইভেন্ট।”
-
বাংলায় পাঠক সংখ্যা বেড়েছে
প্রকাশক অনিল আচার্যের কথায়, বাংলায় পাঠক সংখ্যা বেড়েছে। আর এই পাঠকের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে শিক্ষা। গত ১০০ বছরে শিক্ষার বিস্তার ঘটেছে, নিম্নবর্গের মানুষও শিক্ষার একটা স্তরে এসেছেন, মত অনিলবাবুর। তবে সব স্তরে পাঠক যে এখনও তৈরি হয়নি সে কথাও স্বীকার করেছেন তিনি।
-
বাঙালিয়ানার সংজ্ঞা কী?
বাঙালিয়ানা শব্দটা প্রায়শই শোনা যায়। কিন্তু কী এই বাঙালিয়ানা, কেনই বা সে শব্দ নিয়ে প্রতিনিয়ত এত চর্চা? আলোচনায় গৌতম ঘোষ তুলে ধরেছেন বাংলার সম্পদ এবং ইতিহাসের কথা। এখন আমরা বলতে শুনি, বাঙালির কোনও সম্পদ নেই। কিন্তু ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখলে বোঝা যায় সোনার বাংলা কী ছিল।
ক্লিক করুন: TV9 Bangaliana: বাঙালিয়ানা আসলে বাঙালির সহজ যাপনের ছবিটাই তুলে ধরে
-
নবজাগরণের উৎস সন্ধানে বাঙালি
বাঙালিয়ানা নিয়ে আলোচনায় অবশ্যই উঠে আসে বঙ্গীয় নবজাগরণের কথা। সে সময়টা ‘বেঙ্গল রেনেসাঁস’-এর। ১৮১৫ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত সময়টা। একটা শতাব্দীতে জ্ঞান বিজ্ঞান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এত মনীষার জন্ম সত্যিই তুলনারহিত। অসাধারণ সব মানুষের জন্ম, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের অবিস্মরণীয় অবদান কালজয়ী করে রেখেছে একটা শতাব্দীকে। চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষের মতে এই বেঙ্গল রেনেসাঁস উচ্চবিত্ত ও শিক্ষিত মধ্যবিত্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সেক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান রেনেসাঁস অনেক বেশি সাধারণ মানুষের জীবনেও প্রভাব ফেলেছিল।
ক্লিক করুন: TV9 Bangaliana: বঙ্গীয় নবজাগরণ কি সমাজের সমস্ত স্তরে পৌঁছতে পেরেছে?
-
ঝুঁকি নিতে ভয় পেয়েই কি চাকরি খোঁজে বাঙালি?
রাম দোলোল একটি আমেরিকান জাহাজ যেটি রাম দুলাল দে সরকারের নামে নামকরণ করা হয়েছিল। তাঁকে বাঙালি ব্যবসার জনক বলা যেতে পারে। আমেরিকাতে তাঁর বেশ আধিপত্য এবং প্রভাব বিস্তার হয়। তারপর আমেরিকানরা তাঁর নামে একটি জাহাজ বানায়। দ্বারকানাথ ঠাকুর ভারতের প্রথম শিল্পপতি। জাহাজের ব্যবসা, কয়লা খনি, ব্যাঙ্কও ছিলই। ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের পার্টনার করে খুলেছিলেন ‘কার, টেগোর অ্যান্ড কোম্পানি’। আলামোহন দাশ একমাত্র বাঙালি শিল্পপতি যাঁর নামে একটা আস্ত শহর গড়ে উঠেছে। হাওড়ার দাশনগর। সেখান থেকে ২০২২ সালে বাঙালি শিল্প কি সোনার পাথর বাটি?
ক্লিক করুন: TV9 Bangaliana: ঝুঁকি নিতে ভয় পেয়েই কি চাকরি খোঁজে বাঙালি? নাকি অন্য কোনও ধারণা বদ্ধমূল বঙ্গ-হৃদে
-
পুরস্কারেই কি প্রতিভার স্বীকৃতি?
পুরস্কারেই কি প্রতিভার স্বীকৃতি? বহু সময়ই বলা হয়, কই বাঙালি তো আর সাহিত্যে নোবেল পেল না! কোথাও কি তা হলে আটকে গেল বাঙালির সাহিত্যযশ! চলচ্চিত্র ও থিয়েটর সমালোচক শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, এমন বহু সাহিত্যিক রয়েছেন যাঁদের ঝুলিতে নোবেল নেই। নোবেল পুরস্কারের বিচার তাঁর কাছে ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং শমীকবাবুর কথায়, “বিশ্ব রাজনীতির খেলা নোবেল পুরস্কারের সঙ্গে জড়িত। আমি বিচার করব পাঠক সংখ্যা এবং বৈচিত্রের ভাষা দিয়ে।” তাঁর মতে সেটাই তুলে ধরবে বাংলা সাহিত্য এগিয়ে চলেছে নাকি তার গতি কোথাও ধাক্কা খাচ্ছে।
-
বাংলাতেই কি আটকে রয়েছে বাংলা সাহিত্য?
এইবার কি বাঙালিয়ানা টেলিথনের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু সাহিত্য়। বাংলাতেই কি আটকে রয়েছে বাংলা সাহিত্য? সঞ্চালনায় রয়েছেন টিভি৯ নেটওয়ার্কের সিইও বরুণ দাস, রুমেলা চক্রবর্তী এবং চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। অতিথি হিসেবে আলোচনায় উপস্থিত রয়েছেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুবোধ সরকার, অনিল আচার্য এবং সঙ্ঘমিত্রা হালদার।
-
বাঙালিয়ানা টেলিথনে দেখুন ‘বাঙালির শিল্প – সোনার পাথরবাটি?’
-
নতুন প্রজন্ম কীভাবে শিল্পে উদ্যোগী হবে?
নতুন প্রজন্মকে ব্যবসা বা শিল্পে উদ্যোগী করে তুলতে কী করা যেতে পারে? এই প্রসঙ্গে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডস এর সিইও শুভঙ্কর সেন বলেছেন যে, সব কাজের মধ্যে বাঙালিকে একটি ইতিবাচক চিন্তাভাবনা নিয়ে এগোতে হবে। ঝুঁকি থাকলেও সেটা কঠোর পরিশ্রম করে সেটা অতিক্রম করে নেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। একটা সুগঠিত এবং বৃহত্তর স্বার্থের জন্য চিন্তাভাবনা করে ব্যবসায় নামতে হবে।
-
‘ব্যবসা তো অশিক্ষিতদের জন্য’
বাংলার শিল্প বা ব্যবসা কি আবার পুনরুজ্জীবিত করা যাবে? এই প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অনুপ সিনহা বলেছেন, “শিল্পের বৃদ্ধি ব্যক্তিবিশেষে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতার উপর নির্ভর করে। চন্দ্রশেখর বাবুকে অনেক ঝুঁকি নিতে হয়েছে। উনাকে দেখে অনেকেই শিখতে পারেন। চন্দ্রশেখর বাবুর মতো বাংলায় উদাহরণ সৃষ্টিকারী অনেক শিল্পপতি রয়েছেন। কিন্তু বাঙালির দোষ একটাই, আমরা ঝুঁকি নিতে ভয় পাই।” তিনি জানিয়েছেন, ব্যবসার আগে আমরা চাকরিটাকে বেছে নিই। আমরা মনে করি চাকরিতে একটা স্থিরতা রয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, “বাঙালির শিক্ষার প্রতি একটা টান রয়েছে। আমাদের মধ্যে একটা ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছে যে ব্যবসা তো অশিক্ষিতদের জন্য।” বাঙালি শিল্প এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাব্য কারণ তুলে ধরেছেন।
-
বন্ধন ব্যাঙ্কের ফোকাস মহিলাদের আয়ের আওতায় নিয়ে আসা : চন্দ্রশেখর
বন্ধন ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিইও চন্দ্রশেখর ঘোষ বলছেন, “আমাদের ব্যাঙ্কিংয়ের মডেলের উপলক্ষ হল যে মানুষগুলো আয়ের মধ্যে আসেনি তাদের আয়ের মধ্যে কীভাবে আনা যায়। মহিলাদের নিয়ে আমরা কাজ করি। মহিলারা সকাল থেকে রাত অবধি সারাদিন কাজ করেন। কিন্তু তাঁদের কাজের কোনও গুরুত্ব আমরা দিই না। কারণ তাঁরা অর্থ উপার্জন করেন না। যখন আমরা তাঁদের আয়ের অন্তর্ভু্ক্ত করতে পারব তখন দেশে মাথা পিছু আয় বাড়বে। শহর এবং শহরাঞ্চলে যেখানে ৩০ শতাংশ মানুষের বসবাস সেখানে আমাদের দেশের ব্যাঙ্কের শতকরা ৮৬ ভাগ শাখা রয়েছে করেন। কিন্তু আমরা ফোকাস করছি গ্রামে যেখানে ৭০ ভাগ মানুষ বাস করেন। সেইখানে কীভাবে মানুষকে বুঝিয়ে পরিষেবা দেওয়া যেতে পারে। যাতে সেই পরিষেবার সাহায্যে তাঁরা উন্নতি করতে পারেন।”
-
বাঙালির নামে আমেরিকান জাহাজ
রাম দোলোল (RAM DOLLOL) একটি আমেরিকান জাহাজ যেটি রাম দুলাল দে সরকারের নামে নামকরণ করা হয়েছিল। তাঁকে বাঙালি ব্যবসার জনক বলা যেতে পারে। ১৭৫২ সালে তাঁর জন্ম। তাঁর দিদি একটি বাড়িতে রান্নার কাজ করতেন। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি ব্যবসা-বাণিজ্যে নিজের জায়গা করে নেন। আমেরিকাতে তাঁর বেশ আধিপত্য এবং প্রভাব বিস্তার হয়। তারপর আমেরিকানরা তাঁর নামে একটি জাহাজ বানায়। সেখান থেকে ২০২২ সালে বাঙালি শিল্প কি সোনার পাথর বাটি?
-
দেখুন নবজাগরণের উৎস সন্ধানে
-
‘বাঙালিদের মধ্যে একতা দরকার’
এই প্রসঙ্গে অধ্য়াপক মইদুল ইসলাম বলেছেন, “চাকরি একটা বাঙালি শ্রেণির করতেই হবে। মালিক শ্রেণি আর বাঙালির হওয়া হল না। পশ্চিম ভারতের গুজরাট ও মারওয়ারি ব্যবসাদাররা পশ্চিম ভারত থেকে বাংলায় এসেছে এবং উত্তর পূর্বাঞ্চল অবধি চলে গিয়েছে। আমরা ঢাকা, বরিশাল, বেনারস, লক্ষ্মৌ হয়ে দিল্লিতে গিয়ে অধ্যাপনা করেছি। পুরো বিষয়টা আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া অবধি চলে গিয়েছে। বাঙালির মধ্যে একতা দরকার। সে রাজনীতি দিকেই হোক বা ব্যবসায়িক দিকে।”
-
বাঙালি থেকে বং
বাঙালিকে এখন ‘বং’ বলেই বেশি খ্যাত। বং মানে ভালো ফুটবল খেলে, অঙ্ক করে। কিন্তু ব্যবসায় ‘বং’ এর খুব বেশি ঐতিহ্য আছে তা খুব একটা শোনা যায় না। টিভি৯ নেটওয়ার্কের সিইও বাঙালির ব্যবসায় নামডাক নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন।
-
‘শিক্ষিত বাঙালি অশিক্ষিত বাঙালির মন বুঝে না’
গৌতম ঘোষের কথায় সম্মতি জানিয়েছেন ভাষাতত্ত্ববিদ পবিত্র সরকারও। তাঁর কথায়, “কতগুলো ঘটনা সমান্তরাল আছে। বঙ্কিমচন্দ্রের বঙ্গদর্শন বের হল ১৮৭২-এ। সে বছরই আমাদের সাক্ষরতা হচ্ছে তিন শতাংশের একটু বেশি। অর্থাৎ মানুষের মধ্যে নিরক্ষরতা বিপুল। সেই সাক্ষরতা ১৯০১ সালে পৌঁছল পাঁচ শতাংশের একটু বেশি। ১৯১১ তে তা ছয় শতাংশের মতো। স্বাধীনতার বছর ১৭ শতাংশের মতো। এই সাক্ষরতার হারই বুঝিয়ে দিচ্ছে কত মানুষ অন্ধকারে ছিলেন। এটা বঙ্কিমচন্দ্র নিজেও লিখেছেন বঙ্গদর্শনের প্রথম সংখ্যায়। পত্রসূচনা বলে সম্পাদকীয়তে লেখেন, শিক্ষিত বাঙালি অশিক্ষিত বাঙালির মন বুঝে না।”
-
সর্বত্র আলো পৌঁছায়নি : গৌতম ঘোষ
চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষের মতে এই বেঙ্গল রেনেসাঁস উচ্চবিত্ত ও শিক্ষিত মধ্যবিত্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। সেক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান রেনেসাঁস অনেক বেশি সাধারণ মানুষের জীবনেও প্রভাব ফেলেছিল। বাঙালির নবজাগরণ প্রসঙ্গে গৌতম ঘোষ বলেন, “আমি ইতালি কোনও শ্রমজীবী মানুষ বা ফ্রান্সের কোনও শ্রমজীবী মানুষকে যদি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বা ভ্যান গগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি, তাঁরা অন্তত বলবেন নাম শুনেছেন। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে যদি সেই একই শ্রেণির মানুষকে যামিনী রায় বা অবনী ঠাকুরের কথা বলা হয় তাঁরা কিন্তু হাঁ করে তাকিয়ে থাকবেন। এটাই প্রমাণ করে সর্বত্র সেই আলো পৌঁছয়নি।”
-
নবজাগরণের উৎস সন্ধানে
বাঙালিয়ানা নিয়ে আলোচনায় অবশ্যই উঠে আসে বঙ্গীয় নবজাগরণের কথা। সে সময়টা ‘বেঙ্গল রেনেসাঁস’-এর। ১৮১৫ থেকে ১৯১৯ সাল পর্যন্ত সময়টা। একটা শতাব্দীতে জ্ঞান বিজ্ঞান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এত মনীষীর জন্ম সত্যিই তুলনারহিত। অসাধারণ সব মানুষের জন্ম, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের অবিস্মরণীয় অবদান কালজয়ী করে রেখেছে একটা শতাব্দীকে। তাই দ্বিতীয় আলোচ্য বিষয় ‘বাঙালির নবজাগরণ’।
-
দেখুন : বাঙালিয়ানা কী? কেন চর্চা করছি?
-
কেন বাঙালিয়ানার চর্চা দরকার?
বাঙালি ভাষা একটা ভয়ঙ্কর জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেই ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাঙালিয়ানার চর্চা বারবার দরকার। এখন বাবা-মা রা প্রথমেই তাঁদেরে ছেলে-মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করার ক্ষেত্রে ইংরেজি মাধ্য়ম বেছে নেয়। সেখানে প্রথম ভাষা ইংরেজির পাশাপাশি স্বভাবতই বাবা-মা রা ঠিক করে নেন ছেলে-মেয়েরা দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে পড়বে হিন্দি। বাংলা কিন্তু তাঁদের তালিকাতেই নেই। কারণ তাঁরা সন্তানের ভবিষ্যতও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দেখেন না। ২৭ কোটি বাঙালি বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। তাঁদের কাছে তো বাংলার তথ্য সংস্কৃতি তুলে ধরতে হবে।
-
‘বাঙালি হল একটি মিশ্রিত জাতি’
সাহিত্যিক তিলোত্তমা মজুমদার চোখে বাঙালি হল একটি মিশ্রিত জাতি। বাঙালির ইতিহাস পড়লে দেখা যাবে বাঙালি বলে কোনও স্বতন্ত্র জাতি অস্তিত্ব ১০০০ হাজার বছর আগেও ছিল কিনা সন্দেহ। বাংলার মাটিতে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন এবং বসবাস করছেন তাঁরা সকলেই বাঙালি। যে মিশ্রণের উদারতা নিয়ে বাঙালি জাতি তৈরি সেই মিশ্রণের ঔদার্য নিয়েই আজকের বাঙালি। যে জাতি আজ বাংলায় বসবাস করেন, তাঁরাই বাঙালি।
-
সাফল্যের দিক থেকে বাঙালিয়ানা
পোখরাজ চক্রবর্তী বলেছেন, বাঙালি বিশ্বের সেই জাতি যাঁরা সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছতে পারে। মধ্যবিত্ত বাঙালিরাই কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং তাঁরাই বাঙালিয়ানাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই মধ্যবিত্ত বাঙালিদেরই কিন্তু বাদের খাতায় রাখা হয়।
-
বাঙালি মানেই কি শুধুই রবীন্দ্রনাথ?
পৃথা চক্রবর্তীর বক্তব্য অনুযায়ী, বাঙালিদের একাংশ মনে করে যে সাহিত্যচর্চা এবং রবীন্দ্রনাথ না জানা অপরাধের মধ্যে পড়ে। কিন্তু এরকম বহু মানুষ রয়েছেন যারা একেবারে প্রান্তিক নন কিন্তু তাঁরা আবার রবীন্দ্রনাথ নিয়ে বেশি পড়েছেন তেমনটা নয়। সেইসব বাঙালিও কিন্তু বাঙালিয়ানার ধারক ও বাহক। আধুনিক বাংলা ছবিতেও এদের জায়গা নিয়ে। আমরা আধুনিক ছবির কথা বললে কলকাতা কেন্দ্রিক শহুরে ছবির কথা বলি। প্রান্তিক মানুষের ছবির কথা ভাবলে গ্রাম বাংলার কথা বলি। এর মাঝখানে যে একটা মস্ত বাংলা পড়ে রয়েছে। বহু মানুষ রয়েছেন যাঁরা সকালবেলা শান্তিপুর লোকালে করে কলকাতায় এসে কাজ করে আবার দিনের শেষে বাড়ি ফেরেন। সেই বাঙালি কোনওকিছুর অংশ হয় না।
-
নতুন প্রজন্মের চোখে বাঙালিয়ানা
পৃথা চক্রবর্তী, চলচ্চিত্র পরিচালক জানান, প্রতিদিনের মধ্যে বাঁচাই হল বাঙালিয়ানা। বাঙালিয়ানা মানে নিজের ভাষায় কথা বলা, নিজের ভাষায় কাজ করতে পারা। বিজয়ার মিষ্টি এবং পয়লা বৈশাখের ‘এসো হে বৈশাখ’ এর বাইরেও বাঙালিয়ানা রয়েছে। বাংলার লোকগান, লোকগীতিও বাঙালিয়ানার অংশ।
-
ভদ্রলোক এবং বীরপুরুষের সহাবস্থান হতে পারে?
উনবিংশ শতাব্দীতে যেসব সাহিত্য রয়েছে, সেখানে বাঙালিকে এক কথায় ভীরু, কাপুরুষ, দুর্বল বলে আখ্যা দিয়েছেন ইউরোপীয়রা। বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় বাঙালি যখন বোমা, বন্দুক হাতে নিতে শিখল তখন তাঁর ক্ষোভ, আক্ষেপের প্রকাশ ঘটে।
-
বাংলার পাঁচ কবি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের
আবুল বাশার প্রান্তিকতার প্রসঙ্গে বলেছেন, বাংলায় পাঁচজন কবিই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। মাইকেল মধুসূদন দত্ত খ্রিস্টান কিন্তু তিনি লিখেছেন রামায়ণ নিয়ে। রবীন্দ্রনাথ ব্রাহ্ম ছিলেন। নজরুল ইসলাম ছিলেন মুসলমান। জীবনানন্দ দাসও ছিলেন ব্রাহ্ম ধর্মের। লালন ফকির তো ফকিরই ছিলেন। পাঁচজন কবি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। বাঙালিয়ানা বলতে যে শুধু উচ্চ বর্ণের ভদ্রলোকের কথা ভাবা হয় তা কিন্তু ঠিক নয়। বাঙালির এই পাঁচ রত্নই কিন্তু সংখ্যালঘু।
-
লালন ফকিরের অসম্ভব লড়াই
এই নিয়ে বাদ-বিবাদ চলতেই থাকে যে বাঙালি বলতে আমরা একটা ছোট্ট পরিধির কথাই ভাবি। কিন্তু বোতাম আঁটা জামা পরিহিত ছাড়াও যে বাঙালির অস্তিত্ব রয়েছে তার অন্তর্ভুক্তি আমরা বাঙালি নিয়ে কোনও আলোচনায় দেখি না। এই প্রসঙ্গে সঙ্গীতশিল্পী পোখরাজ চক্রবর্তী তাঁর চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন। তিনি জানান, রবীন্দ্র নাথ স্বপ্ন দেখতেন বীরপুরুষের মত হবে বঙ্গ সন্তান। স্বার্থান্বেষী একদল নিজেদের সুবিধার্থে এক শ্রেণির মানুষকে প্রান্তিক করে রেখেছে। লালন ফকিরের কথা এই ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। লালন ফকির ‘নিরক্ষর’ ছিলেন। তিনি নিজের নাম লিখতে না পারলেও তাঁর লেখায় ফুটে উঠেছে তাঁর জ্ঞান। তাঁর লেখা পড়ে মনে হয় বৈষ্ণব সাহিত্য, কোরআন হাদিশ উনার পড়া।
-
বাঙালির উচ্চতর শ্রেণির মধ্যে একটা ‘ঔদ্ধত্য’ রয়েছে : জহর সরকার
সাংসদ জহর সরকার বলেছেন, “আমরা প্রধান ভদ্রলোককেন্দ্রিক বাঙালির কথাই বলছি। ভদ্র শ্রেণি বলতে শিক্ষিত ব্রাহ্মণ, কায়স্থ এবং বৈদ্যের কথা বোঝালেন তিনি। অবিভক্ত বাংলায় তাঁদের সংখ্যা ৬ শতাংশ। এদের সংস্কৃতি, আধিপত্য, বিশ্ব সম্পর্কে ধারণা নিয়েই ব্রাত্য হয়ে থাকি। এর বাইরেও কিন্তু বাঙালির একটা বিশাল অঙ্ক রয়েছে। স্বাধীনতার পরে বিশাল সংখ্যক বাঙালি মুসলমান মাথা তুলে দাঁড়ায়। বাঙালি মুসলমানদের কিন্তু অনেক লড়াই করতে হয়েছে তাঁদের স্থান পাওয়ার জন্য। উচ্চ শিক্ষিত বাঙালিদেরও স্থান দেওয়া হয়নি। নিম্নবর্ণদের আমরা এখনও বাঙালির মধ্যে ধরি না। “
-
বাঙালির প্রাণের ঠাকুর
বাঙালি আর রবীন্দ্রনাথ! কখনোই আলাদা করে দেখা সম্ভব নয়। বাঙালির হাসি, কান্না, দুঃখ, আনন্দ- সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রবীন্দ্রনাথ। বাংলার যেকোনও অনুভূতি ব্যক্ত করার জন্য রবীন্দ্রনাথের কিছু গান, কবিতা প্রয়োজনই। তাই তো আমাদের বাঙালিয়ানার প্রথম আলোচনায় টিভি৯ নেটওয়ার্কের সিইও এর কণ্ঠে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বঙ্গমমাতা’। রবি ঠাকুরকে ছাড়া যেন আমাদের একটা দিনও অসম্পূর্ণ।
-
‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে আমাদের কৃষকদের সর্বনাশ হয়েছে’
গৌতম ঘোষ তুলে ধরছেন বাংলার সম্পদ এবং ইতিহাসের কথা। এখন আমরা বলতে শুনি, বাঙালির কোনও সম্পদ নেই। কিন্তু ইতিহাসের পাতা উল্টোলে দেখা যাবে সোনার বাংলা কী ছিল। মুঘল বা সুলতান আমলে সব থেকে বেশি আয় আসত এই বাংলা প্রদেশ থেকেই। ব্রিটিশ আমলের প্রথম দিকেও কিন্তু বাংলা প্রদেশ থেকে অনেক আয় হত। সেই কারণেই সোনার বাংলা বলা হত। আমাদের বাংলা একটি কৃষি প্রধান দেশ। কিন্তু ব্রিটিশদের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে আমাদের কৃষকদের সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। বাংলার উপর দিয়ে অনেক ঝড় গিয়েছে।
-
এখন বাঙালি কোথায় দাঁড়িয়ে?
টিভি৯ নেটওয়ার্কের সিইও বরুণ দাস জানান, ৩৫ বছর বাংলার বাইরে থাকার পর বাঙালি হতে ভুলে গিয়েছিলেন তিনি। বাইরে থাকাকালীন তিনি দেখেছেন পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিলে সম্ভ্রম পাওয়া যায়। তবে গত দুই দশক ধরে সেটা হারিয়ে যাচ্ছে। অথচ বাঙালির ক্ষমতা, সংস্কৃতি অনেক বেশি সমৃদ্ধ। কিন্তু কেন হারিয়ে যাচ্ছে? সেই বিষয়ে আত্মোপলব্ধির দরকার। তাই একটা আত্মসমীক্ষা এবং তার পাশাপাশি এক বছর পূর্তির উদযাপন। সব মিলিয়েই বাঙালিয়ানা টেলিথনের উদ্যোগ।
-
‘বাঙালিয়ানা টেলিথন’ কেন?
প্রথম বিষয় নিয়ে আলোচনায় জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ প্রথম প্রশ্ন উত্থাপন করেন টিভি৯ নেটওয়ার্কের সিইও বরুণ দাসকে। তাঁর কাছে বাঙালিয়ানা কী? তিনি জানতে চান বাঙালিয়ানা টেলিথন এই উদ্যোগের পিছনে কারণই বা কী ?
-
বাঙালিয়ানা কী? কেন তার চর্চা?
শুরু হয়ে গেল টেলিথন-টিভি৯ বাঙালিয়ানা। সঞ্চালনায় রয়েছেন টিভি ৯ নেটওয়ার্কের সিইও বরুণ দাস এবং চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষ। আলোচনায় রয়েছেন আবুল বাশার, তিলোত্তমা মজুমদার, পৃথা চক্রবর্তী, পোখরাজ চক্রবর্তী, জহর সরকার। আমাদের আলোচনার প্রথম বিষয় বাঙালিয়ানা কী? কেন তার চর্চা?
-
বাংলা টেলিভিশনে এই প্রথম টেলিথন
আর কিছুক্ষণের মধ্যে শুরু হচ্ছে টিভি ৯ বাঙালিয়ানা। দুপুর ১ টা থেকে চোখ রাখুন শুধুমাত্র টিভি৯ বাংলার পর্দায়। টিভি৯ বাঙালিয়ানার ১১ টি এপিসোড বা বিভাগ রয়েছে। ১১ টি বিভাগে আলোচনা হবে বাঙালির বিভিন্ন বিষয় ও খুঁটিনাটি নিয়ে। সাহিত্য, থিয়েটার থেকে শুরু করে রাজনীতি, গান, আড্ডা ও গল্প সব থাকছে বাঙালিয়ানায়। টিভি৯ বাংলার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে টিভি৯ বাংলার বিশেষ নিবেদন ‘টিভি৯ বাঙালিয়ানা-আমাদের কাল, আজ, কাল’।
Published On - Feb 13,2022 12:53 PM