Exclusive: ‘নতুন যা কিছু হচ্ছে…’, ‘লৌহ-কপাট’ বিতর্কে রহমানের বিপক্ষে বন্ধু শিবমণি?
Sivamani: শিবমণি-- ভারতের সবচেয়ে সেলিব্রেটেড ড্রামার। শুধু ড্রামই নয়, অক্টোব্যান থেকে শুরু করে ডারবুকা, উড়ুকাই থেকে কাঞ্জিরা... শিবমণির হাত যখন চলে দর্শকের মুখ হয় বন্ধ। ডুবে যায় শরীর, এক অদ্ভুত বিমূর্ততায়। 'রোজা' থেকে শুরু করে 'তাল', 'লগন', 'দিল সে', 'গুরু'--তাঁর হিটের লিস্ট লম্বা। সম্প্রতি এক কনসার্টে অংশ নিতে এসেছিলেন কলকাতায়। আর তাঁরই ফাকে টিভিনাইন বাংলার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় শিল্পী।

বিহঙ্গী বিশ্বাস
কোলকাতার সঙ্গে কত পুরনো সম্পর্ক?
আমি প্রথম কলকাতায় আসি কম্পোজার লুই ব্যাঙ্কের সঙ্গে পার্ক হোটেলে কনসার্টে। তবে থেকেই কলকাতাকে ভালবেসে ফেলেছিলাম। খাবার থেকে শুরু করে সংস্কৃতি, গায়কী সবটা ভাল বেসে ফেলি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু বছর আগে একটা শো করেছিলেন আপনার মনে আছে?
হ্যাঁ, মনে নেই আবার! কী ভাল ক্রাউড, কী এনার্জি ছিল সকলের। দারুণ উপভোগ করেছিলাম।
চেন্নাইয়ের মানুষ আপনি, ছোটবেলাটা কেমন কেটেছে?
প্রথমেই মা’কে ধন্যবাদ দেব। নয় মাস আমাকে গর্ভে ধারণ করেছে। আর মায়ের হার্টবিটই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে প্রথম শোনা ড্রামবিট। আমার বাবাও ছিলেন এই পেশায়। ছোটবেলায় বাড়িতে যেই আসতেন আমাদের কিছু না কিছু পারফর্ম করে শোনাতে বাধ্য করা হত। হাতের কাছে যা পেতাম, প্লাস্টিক, চামচ তাই দিয়েই কিছু না কিছু বাজিয়ে শোনাতাম।
চেন্নাই জার্নি শেষ করে পা রাখেন অচেনা মুম্বইয়ে– যাত্রা কঠিন ছিল কতটা?
না, পুরোটাই ভীষণ মসৃণ ছিল। সে সময় সমস্ত বিশ্বমানের কাজগুলো মুম্বইয়ে হচ্ছিল। শঙ্কর মহাদেবন ও লুই ব্যাঙ্ক মিলে একটা ব্যান্ড খুলেছিলেন। নাম ছিল ‘সিল্ক’। ওই সিল্কের কারণে মূলত আমার মুম্বই শিফট করা। আমার মনে হয় ওই সময়ে দাঁড়িয়ে ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে ভালই করেছিলাম।
এত বড় মিউজিকাল জার্নিতে ব্যর্থতা কতবার এসেছে?
যদি কষ্টও পাই কোনওদিন সেটাকে মনে রাখিনি। ছুড়ে ফেলে দিয়েছি। কেন জানেন? যদি ওটাকে নিয়েই ভাবতাম তাহলে ওই খারাপলাগা গুলোই ক্রমশ মনকে নিয়ন্ত্রন করতে শুরু করত। যদি আত্মা শুদ্ধ হয়, বাকি সবকিছুই ভাল লাগতে শুরু করে।
ভারতে এখনও পারফর্মিং আর্টকে পেশা না ভাবার চল রয়েছে, উঠতি পারফর্মদের মন খারাপের গল্প লেখা থাকে তাতে, ওঁদের কী বলবেন?
প্রথমেই বলব, অত কিছু না ভেবে শুধু রেওয়াজ করে যাও। প্র্যাকটিস করে যাও। একটা ঘটনা বলি। আমি তো এ আর রহমানের সঙ্গে কাজ করেছি। এ আর RX7 (A rhythm machine)-এর সঙ্গে কাজ করে। এত গোলমেলে, আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘এ আর কী করে কাজ কর?” ও কী বলেছিলেন জানেন? বলেছিলেন, ‘গভীরে যাও। গভীরে না গেলে বুঝবে কী করে?” গুগল ম্যাপ দিয়ে দিলে যেতে পারবে, কিন্তু ফেরাটা? তাই মন দিয়ে সবটা করতে হবে।
‘মায়েস্ত্রো’ ইলাইয়ারাজার সঙ্গেও কাজ করেছেন, কোনও মনে রাখার মতো ঘটনা?
থিয়েটারের মতো ওঁর পুরোটাই অর্কেস্ট্রা। কাজের পর সবাই সবাইকে প্রশংসা করেছে। আলাদাই এক মহল। সেই সময় গোটা স্টুডিয়োতে সব কিছুই লাইভ হতো। সেটা আজকাল বড় মিস করি জানেন। এখন টেকনলিজই সবকিছুই করে দেয়। সব কিছু ভীষণ উন্নত।
ওঁরা বলে, আপনার নাকি মাথা গরম, নিজে বকা খেয়েছেন কোনওদিন?
(হাসি) হ্যাঁ ভীষণ ভীষণ। তেলুগু শেখার সময়, এমনকি বাংলার ক্ষেত্রেও। প্রচুর প্রচুর বকা খেয়েছি জীবনে।
সম্প্রতি এ আর রহমান বিতর্কে উত্তাল বাংলা, উনি আপনার বিশেষ বন্ধু। এই গোটা বিষয়টা কীভাবে দেখছেন?
নতুন যা হচ্ছে তা তো ছোটদের জন্যই। এখন ছোটরা তো এরকমই পছন্দ করে। কিন্তু যদি আমি নিজে কিছু কম্পোজ করি তখন অবশ্যই পুরনো স্টাইলে করতেই পছন্দ করি। এআর নিজের মতো করেছে। কেউ ভাল বলবে, কেউ খারাপ বলবে, সঙ্গীত কখনও খারাপ হয় না। খারাপ হতে পারে না। সেখানেই সঙ্গীতের বিজমন্ত্র লুকিয়ে। সেখানেই সঙ্গীতের জয়।





