কোমায় ২৯ দিন, চিনতে পারছিলেন না পরিবারের কাউকে, কী ঘটে অনুর সঙ্গে?
সারা শরীরে সেলাই। দেহ জুড়ে অস্ত্রপচার। কোমায় ২৯ দিন। নিজেকে , পরিবারকে, কিছুই চিনতে পারেননি একটা দীর্ঘ সময়। হারিয়ে গিয়েছিলেন মুখের লালিমাও। অবশেষে সমস্ত বাধা পেরিয়ে আবারও নতুন করে বাঁচার অঙ্গীকার করেন অনু আগরওয়াল।

কুমার শানু ব্যাকগ্রাউন্ডে গাইছেন ‘ম্যায় দুনিয়া ভুলা দুঙ্গা’। রাহুল রায় লিপ দিচ্ছেন আর বিপরীতে বছর ২১-এর মেয়েটি সমানতালে এক্সপ্রেশন দিয়েই চলেছেন। মনে পড়ছে? ৯০-এর দশকের সুপারহিট ছবি ‘আশিকি’র কথা? মেয়েটির নাম অনু আগরওয়াল। প্রথম ছবিতেই যিনি একা দক্ষতায় লাইমালাইট ছিনিয়ে নিয়েছিলেন এক লহমায়।
কিন্তু খ্যাতি, নামের স্থায়িত্ব খুব বেশি দিন হয়নি অনুর জীবনে। একটা দুর্ঘটনা। আর তাতেই তছনছ হয়ে গিয়েছিল অনুর জীবন। টানা উনত্রিশ দিন থাকতে হয়েছিল কোমায়। গুঁড়িয়ে গিয়েছিল হাড়। বিকৃত হয়ে গিয়েছিল মুখ। হারিয়ে ফেলেছিলেন স্মৃতিশক্তিও। অভিনয় জীবনের কথা মনেও ছিল না তাঁর। নিজের পুরনো ছবি দেখে আঁতকে উঠতেন নিজেই। কেমন আছেন অনু এখন? কী করছেন আজকাল? ১৯৬৯ সালের ১১ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে জন্ম হয়েছিল অনু আগরওয়ালের। পড়াশোনাতেও বেশ ভাল ছিলেন তিনি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে গোল্ড মেডেলেও পেয়েছিলেন। এর পরেই সুযোগ আসে মডেলিংয়ের ১৯৮৮ সালে ‘ইসি বাহানে’ ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়েই সেলুলয়েডে আত্মপ্রকাশ করেন অনু।
সেখান থেকে বড় পর্দায় অফার এবং আশিকি। ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সুপারহিট ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান অনু। এর পর আর পিছনে তাকাতে হয়নি। বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করার পর হঠাৎই একদিন সব ছেড়ে ছুড়ে বিহার স্কুল অব যোগায় পাড়ি দেন অনু। ইচ্ছে ছিল নায়িকার রংচঙে জীবন ছেড়ে তিনি বন্ধু করবেন যোগাকেই। সেখানেই বছর দুয়েক কাটিয়ে শহরে নিজের রেখে যাওয়ার জিনিসের বন্দোবস্ত করতে ১৯৯৯ সালে মুম্বইয়ে শেষ বারের মতো আসার মনস্থির করেন অনু আগরওয়াল। ভাগ্য তাঁর সহায় হল না। যাত্রাপথেই ভয়ানক পথ দুর্ঘটনার মুখোমুখি হলেন অনু। বাঁচতেন না। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছিলেন তিনি।
সারা শরীরে সেলাই। দেহ জুড়ে অস্ত্রপচার। কোমায় ২৯ দিন। নিজেকে , পরিবারকে, কিছুই চিনতে পারেননি একটা দীর্ঘ সময়। হারিয়ে গিয়েছিলেন মুখের লালিমাও। অবশেষে সমস্ত বাধা পেরিয়ে আবারও নতুন করে বাঁচার অঙ্গীকার করেন অনু আগরওয়াল। ধীরে ধীরে সুস্থ হন। তবে গ্ল্যামার জগতে তাঁর আর ফেরা হয়নি।
