তিনিই ছিলেন বাংলা সিনেমার রান্নার’হলুদ’; বাড়তি পারিশ্রমিক ফিরিয়েছিলেন উত্তমকুমারকে, মৃত্যু ঘটে টাকার অভাবে
Famous Bengali Actor: বাংলা সিনেমার 'টার্মারিক', তথা রান্নার হলুদ বলা হত তাঁকে। ১৯৪০ এবং ৫০-এর দশকে দাপিয়ে অভিনয় করেছিলেন রুপোলি পর্দায়। 'সাড়ে চুয়াত্তর'-এ উত্তমকুমার-সুচিত্রা সেন প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন নায়ক-নায়িকা হিসেবে। কিন্তু তিনি সবকিছুকে আবছা করে দিয়েছিলেন। বলুন তো কে?

সেই ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ থেকে শুরু হয়েছে তাঁর জনপ্রিয়তার যাত্রা। চেহারায় আহামরি কোনও বৈশিষ্ট ছিল না তুলসী চক্রবর্তীর। কিন্তু তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ আপামর বাঙালি দর্শক। এই মানুষটার প্রতিভার সামনে ঝুঁকেছিলেন খোদ উত্তমকুমারও। সত্যজিৎ রায় তাঁর মতো ‘অসুন্দর’ (প্রচলিত সৌন্দর্যের সংজ্ঞা মিলত না তাঁর সঙ্গে) অভিনেতাকে নিয়ে আস্ত একটা ছবি নির্মাণ করেছিলেন। যে ছবিতে সিংহভাগটাই ছিলেন একা তিনি। সেই ‘পরশ পাথর’ তুলসী চক্রবর্তীর উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স।
বাংলা সিনেমার ‘টার্মারিক’, তথা রান্নার হলুদ বলা হত তুলসী চক্রবর্তীকে। ১৯৪০ এবং ৫০-এর দশকে দাপিয়ে অভিনয় করেছিলেন রুপোলি পর্দায়। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’-এ উত্তমকুমার-সুচিত্রা সেন প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন নায়ক-নায়িকা হিসেবে। কিন্তু তুলসী চক্রবর্তী-মোলিনাদেবীর জুটি সবকিছুকে আবছা করে দেয়।
একটা সময় সব বাংলা ছবিতেই কাস্ট করা হত তুলসীকে। হাওড়া শিবপুর থেকে হেঁটে আসতেন টালিগঞ্জ স্টুডিয়োপাড়ায়। তাঁর হাতে ছবি ছিল প্রচুর। কিন্তু তুলসী শিল্পের সঙ্গে অসততা করেননি কোনওদিনও। শিল্পী সংসদ খুলেছিলেন উত্তমকুমার। সেই সংগঠন দেখভাল করত শিল্পীদের। উত্তমকুমার নিজে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তুলসী চক্রবর্তীর বেতন। বেশি বেতন পেয়ে বাড়তি টাকাটা ফেরত দিতে এসেছিলেন তুলসী। উত্তমকুমার তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কেন টাকা ফেরত দিচ্ছেন তুলসী। লাজুক কণ্ঠে নাকি তিনি বলেছিলেন, বেশি টাকা বেতন পেলে তাঁর স্বভাব খারাপ হয়ে যাবে। অভিনয়ও খারাপ হয়ে যেতে পারে।
১৯৬১ সালের ১১ ডিসেম্বর অনাহারে, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয় তুলসী চক্রবর্তীর।





